‘গুম হওয়া’ রবীন্দ্রনাথের সেই ভাস্কর্য পেল আগের জায়গা
সেন্সরশিপ ও নিপীড়নের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) টিএসসি মোড়ের রাজু ভাস্কর্যের পাশেই কয়েকজন শিক্ষার্থী স্থাপন করেছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতীকী ভাস্কর্য। সেটি পরে ‘গুম হয়ে গেছে’ বলে দাবি করেছিলেন প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা। এরপর গতকাল শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সেই ভাস্কর্যের মাথার হদিস মেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। আজ আবার আগের জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে সেই ভাস্কর্য।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার গুরুত্বের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়। ওই ভাস্কর্যে কবির মুখ টেপ দিয়ে বন্ধ ও হাতে পেরেক ঠুকানো একটি বই ছিল। পুরো ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য এটি স্থাপন করা হলেও দুদিনের মাথায় হঠাৎ করে গত বৃহস্পতিবার সেখানে আর সেই ভাস্কর্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরে শিক্ষার্থীরা সেখানে ‘গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ!’ লেখা ব্যানার ঝুলিয়ে দেন। এরপর গতকাল (শুক্রবার) সেই ভাস্কর্যের জীর্ণ খণ্ডাংশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাওয়া যায় এবং তা আজ শনিবার আবার রাজু ভাস্কর্যে স্থাপন করা হয়।
এ প্রসঙ্গে ভাস্কর্য স্থাপনকারীদের মধ্যকার শিমুল কুম্ভকার নামে একজন বলেন, ‘গতকাল ফেসবুকের এক পোস্টে দেখতে পেলাম, আমাদের ওই ভাস্কর্যের ভাঙাচোরা অংশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাওয়া গেছে। এরপর আমরা সেখানে গিয়ে ভাস্কর্যের সেই মাথাসহ ধ্বংসাবশেষ সংরক্ষণ করি। তারপর এটা কোনো মতে ঠিকঠাক করে আবার রাজু ভাস্কর্যের ওখানে দাঁড় করাই।’
শিমুল আরও বলেন, ‘আমরা আজ ভিসি স্যারের সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কেন আমরা এটা স্থাপন করেছি? এরপর আমরা বলেছি, এটা আমাদের প্রতিবাদ। তারপর তিনি আর কিছু বলেননি।’
এর আগে ‘গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ!’ ব্যানার টানানোর পর শোরগোল পড়লে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘আমরা জানতে চেষ্টা করছি—কারা এই ভাস্কর্যটি ওখানে হঠাৎ করে কোনো অনুমতি ছাড়াই হাজির করল। আমাদের একটি অনিন্দ্য সুন্দর ভাস্কর্যের (রাজু ভাস্কর্য) সামনে অন্য আরেকটি ভাস্কর্য তারা রেখে চলে গেল কী করে? আমি জানি না—এটা ভাস্কর্য কি না!’
প্রক্টর বলেন, ‘যারা আমাদের নোবেল বিজয়ী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে এরকম একটা কাজ করল, তাদের কাছে এই কাজের জবাবদিহিতা আশা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কারণ, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি নিয়ে এটা স্থাপন করেনি। এ জন্য এটা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এর কিছু নীতিমালা আছে এবং কিছু মাস্টার প্ল্যান আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের কাজ প্রত্যাশিত নয়।’