জনগণের সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া সংবিধান পরিবর্তন করা যায় না : ড. কামাল
সংবিধানের নীতির বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, জনগণের সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া সংবিধান পরিবর্তন করা যায় না। মুষ্টিমেয়র সুবিধার জন্য সংবিধান যেন কেউ পরিবর্তন করতে না পারে, সেজন্য সক্রিয়া ভূমিকা পালন করতে হবে। এ জন্য বিশেষ করে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। তারাই সবচেয়ে বড় শক্তি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশের সংবিধানের ৫০ বছর উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ আয়োজিত ‘আমরা বাংলাদেশের জনগণ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে এসব কথা বলেন ড. কামাল।
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘শোষণমুক্ত সমাজ কাঠামো গঠনের জন্য সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছে। এ জন্য সংবিধানে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদকে মূলনীতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। স্বাধীনতার পূর্বে ধর্মকে যেভাবে অপব্যবহার করেছে আমরা তা দেখেছি। এ কারণে আমরা চেয়েছি আমাদের সংবিধান তেমন না হোক। কিন্তু আমাদের দুঃখ যে, আমরা সংসদীয় গণতন্ত্রকে পুরোপুরি কার্যকর করতে পারিনি। সংবিধানে স্থানীয় শাসন ব্যবস্থার কথা বলা থাকলেও তা কার্যকর হয়নি।’
এ সময় ড. কামালের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে এসব প্রশ্নের কোনো জবাব দেবেন না বলে জানান তিনি।
সেমিনারে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ তার বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশের সব সরকার সংবিধান ভঙ্গের দায়ে দোষী। প্রত্যেকেই তাদের সুবিধা অনুযায়ী সংবিধান পরিবর্তন করেছে। জনগণের কোনো দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধান সংশোধন করা হয়নি। জনগণ একদলীয় শাসনের দাবি করেনি, জনগণ রাষ্ট্র ধর্মের দাবি করেনি। সুতরাং এ প্রশ্ন থেকে যায় সংবিধান অনুযায়ী কি দেশ পরিচালিত হয়, নাকি যারা ক্ষমতায় যায় তারা তাদের সুবিধা অনুযায়ী বিন্যস্ত করে।’
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সংবিধান একটা জাতির আত্মজীবনী। আমাদের সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খার একটা প্রতিফলন। ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে পরবর্তী যে পরিবর্তনগুলো এসেছে তা অনুসন্ধান করলে বাংলাদেশের মানুষ কি চেয়েছে, কারা দেশ পরিচালা করেছে, শাসক কীভাবে দেশ পরিচালনা করেছে, তা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।’