জবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলার অভিযোগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর দফায় দফায় হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মীদের ওপর। এ ঘটনায় ওই বিভাগের সাজেদুল ইসলাম সুকর্ণ, মাহমুদুল হাসান ও হাবিবুল্লাহ মেজবুল্লাহ আকাশ নামের তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলেও অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনার পর গতকাল বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা চেয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন আহত শিক্ষার্থীরা।
জিডিতে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ‘আমাদের ব্যাচের মেসেঞ্জার গ্রুপে এক নারী শিক্ষার্থীকে নিয়ে আয়মান সাজিদ নামের এক ছাত্র কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করলে আমরা ব্যাচের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানাই। এ জন্য আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা হলো—অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মীর মুকিত, মনোবিজ্ঞান বিভাগের মুনজির, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের আসিফ, ইতিহাস বিভাগের সজিব, অর্থনীতি বিভাগের সোহান ও তমালসহ অজ্ঞাত আরও পাঁচ থেকে ছয় জন।’
‘তারা গত ২৯ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বর ও মূল গেটের সামনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ কিল-ঘুষি, লাথি মেরে আহত করে। আমাদের অন্য সহযোগীরা এগিয়ে এলে বিবাদীরা বিভিন্ন হুমকি ও ভয়-ভীতি দেখায়।’
মঙ্গলবার রাতে সাংবাদিকতা বিভাগের ১৩ ব্যাচের মেসেঞ্জার গ্রুপে এক নারী শিক্ষার্থী ও তাঁর স্বামীকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে সাজিদ নামের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে। পরদিন বুধবার পরীক্ষা শেষে ব্যাচের সবাই সাজিদকে সবার সামনে ক্ষমা চাইতে বলেন। কিন্তু বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে সব শিক্ষার্থী এলে সাজিদ ও রাসেল জবি ছাত্রলীগের সম্মেলন কমিটির আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম টিটনের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। হামলার ঘটনায় প্রক্টর অফিসে শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর হামলাকারী রাসেল, সাজিদ ও তৈয়ব আলী পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, সুকর্ণ ও মাহমুদ মেসেঞ্জার গ্রুপে মারধর করার হুমকি দেন।
এ সময় প্রক্টর তৈয়ব আলীর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাসে আশরাফ ভাইয়ের দল লিড করি। আমাদের ছোট ভাইয়েরা মার খেয়েছে। তাই আমি অভিযোগ দিতে এসেছি।’
অভিযোগ করে প্রক্টর অফিস থেকে বের হওয়ার পর ছাত্রলীগের কর্মীরা আবার হামলা চালায়।
এ বিষয়ে জিডিতে অভিযুক্ত আয়মান সাজিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে সবকিছু মিটে গেছে। মিমাংসা হয়ে যাবে।’ জিডির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরাও একটা জিডি করব হত্যার হুমকি নিয়ে।’
জিডির বিষয়ে সদরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘জিডির সব কাগজপত্র পেয়েছি। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দেখছি।’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল জানান, ‘আমরা দুটি অভিযোগ ও জিডির একটি কপি পেয়েছি। ঘটনার ভিডিও এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেব।’