জবির ছাত্রদের ব্যাচভিত্তিক চাঁদাবাজির গ্যাঁড়াকলে দোকানিরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) টিএসসিতে চা দোকানি রফিকুল (ছদ্মনাম)। তিন সন্তানের বাবা রফিকুলের সংসার চালানোর সম্বল এ চা দোকানটি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রের চাঁদাবাজির কারণে দোকান চালানো দায় হয়ে পড়েছে রফিকুলের।
চা দোকানি রফিকুলের মতো টিএসসির প্রতিটি চা দোকানির অবস্থা একই। প্রতি দোকান থেকে দৈনিক ১০০ টাকা করে সপ্তাহে ৭০০ টাকা চাঁদা তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র। এর ফলে একধরনের চাঁদাবাজির গ্যাঁড়াকলে পড়েছেন ব্যাবসায়ীরা। চাপে পড়ে, ভয়ে চাঁদা পরিশোধও করতে হয় বলে জানায় দোকানিরা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের কয়েকটি গ্রুপ জায়গা বণ্টন করে ব্যাচভিত্তিক চাঁদাবাজি করে আশপাশের দোকানগুলোতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩, ১৪ ও ১৫ ব্যাচের প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন ছেলে এ চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তারা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে দোকান ভাগ করে নিয়েছে বলে অনুসন্ধানে উঠে আসে। ১৩ ব্যাচের ছাত্রদের একটি গ্রুপ টিএসসির ভেতর চা ও খিচুড়ির দোকান থেকে চাঁদা তোলে, ১৪ ব্যাচের একটি গ্রুপ টিএসসির সামনের অংশের ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের থেকে এবং ১৫ ব্যাচের একটি গ্রুপ ছোটখাটো দোকানগুলো থেকে টাকা নিয়ে থাকে।
টিএসসির চা দোকানিরা জানান, ১৩ ব্যাচের পরিচিত একজন এসে দৈনিক ১০০ টাকা করে দিতে হবে বলে জানিয়ে গিয়েছে। কিছু শিক্ষার্থী খেয়ে টাকা না দিয়ে চলে যায়, তার ওপর এভাবে চাঁদা দিলে দোকান করা কষ্টসাধ্য।
এদিকে টিএসসির সামনের ফুটপাতে বসে ব্যবসা করে গেঞ্জি, মোজার দোকান, শরবতের দোকানসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, আমরা ছোট ব্যবসা করি। দিনে যা আয় করি তা দিয়েই সংসার চালাই, নিজে চলি। এখন সে টাকাতেও ছাত্ররাই ভাগ বসাতে আসে। এভাবে হলে কীভাবে চলব আমরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে প্রক্টর মোস্তফা কামাল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘যেসব দোকানের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হয় তারা থানায় মামলা করে দিক। পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। আর আমরা যদি কোনো শিক্ষার্থীর জড়িত থাকার প্রমাণ পাই, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’