জবির নতুন ক্যাম্পাস নিয়ে আন্দোলন, উপাচার্যের কক্ষের সামনে বিশৃঙ্খলা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন ক্যাম্পাস নিজস্ব তত্ত্বাবধায়নে করার দাবিতে উপাচার্যের অফিস কক্ষের সামনে স্লোগান দিয়ে আন্দোলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী কয়েকজন নেতাসহ কিছু কর্মী। এ সময় তারা কক্ষের সামনে বিশৃঙ্খলা পরিবেশ সৃষ্টি করে এবং সামনে থাকা একটি গাছের টব ভেঙে ফেলেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের কক্ষের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে উচ্চবাচ্যের এক পর্যায়ে স্লোগান দিতে থাকে। এতে পরিস্থিতি আরও অশান্ত ও বিশৃঙ্খল হয়ে এলে প্রক্টরিয়াল বডিসহ বেশ কিছু শিক্ষক এসে তাদের থামানোর চেষ্টা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের কাজ যেন নিজস্ব তত্বাবধায়নে করা হয় সে দাবিতে ছাত্রলীগের ২০১৯ সালের সম্মেলন কমিটির আহ্বায়ক আশরাফুল আলম টিটন ও কয়েকজন যুগ্ম আহ্বায়কসহ কিছু কর্মী এসে উপাচার্য অফিসের সামনে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় তাদের থামাতে এলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির একজন শিক্ষকের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এর এক পর্যায়ে উপাচার্য ভবনের সামেন থাকা গাছের টব ভেঙে ফেলেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষক বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ যারা আন্দোলন করছেন তারা ভালো একটি বিষয় নিয়ে আন্দোলন করছে। কিন্তু এর পেছনে কী আছে সেটিও দেখার বিষয়। তারা হয়তো মনে করছে নতুন উপাচার্য এসেছে। তাঁকে ধমক দিয়ে কিছু আদায় করা যায় কিনা। তবে উপাচার্য স্যার সেরকম নন যে, ধমক দিলেই কাজ হয়ে যায়। তাদের বারবার তাদের দাবির বিষয়গুলো লিখিতভাবে দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা দেননি। এ থেকে বুঝা যায় তাদের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য থাকলেও থাকতে পারে।’
একজন সহকারী প্রক্টর নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘তাদের আন্দোলনের বিষয় নিশ্চয়ই ভালো। কিন্তু তাদের আন্দোলনের পদ্ধতি মোটেও ভালো ছিল না। তারা বিষয়টিকে আরও গুছিয়ে বলতে পারত কিংবা ভিসি স্যারের কাছে তুলে ধরতে পারত কিন্তু সেটি না করে তারা যেভাবে স্লোগান দিয়েছে এবং ভাঙচুরের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তাতে আন্দোলনের ভালো উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়েছে। তাদের আন্দোলনের মোটিভ দেখে মনে হয়েছে এর পেছনে অন্য কারণ রয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য নতুন ক্যাম্পাসের কাজ নয়, বরং অন্যকিছু।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জবি ছাত্রলীগের ২০১৯ সালের সম্মেলন কমিটির এক নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য দুই বছরের সময় বাড়িয়ে চার বছর হয়ে গেলেও এখনো মাস্টার প্লান তৈরি করতে পারেনি প্রশাসন। তবে এখন তারা মাস্টার প্লানসহ সব কাজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে চায়। এতে নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের কাজটি হয়তো গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তর পেতে পারেন। ফলে এটি দীর্ঘ মেয়াদী হবে। তাই আমাদের দাবি ছিল যাতে বিশ্ববিদ্যালয় নিজ তত্বাবধায়নে কাজটি করেন।’
টব ভাঙচুরের বিষয়ে মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘স্লোগান দেওয়ার সময় হয়তো কারো সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে যেতে পারে। আমাদের কেউ এমন করেনি।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কাজের ব্যাপারে বা উপাচার্য স্যারের কাছে কোনো দাবি থাকলে সেটি লিখিত জানানোর জন্য বারবার উপাচার্য স্যার বলেছেন। কিন্তু তারা কোনো ধরনের লিখিত দাবি করেননি। আজকেও উপাচার্য স্যার তাদের লিখিত দাবি দেওয়ার জন্য বলেছেন।’