জাবি’র শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে ইউজিসির কমিটি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রির ক্ষেত্রে অনিয়ম ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
গত ৯ জানুয়ারি ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ জামিনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে পাওয়া পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে জাবির সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ২০১৯-২০ সালের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রির ক্ষেত্রে আনীত অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের জন্য একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হলো।
ইউজিসি সদস্য ড. মো. আবু তাহেরকে আহ্বায়ক, ইউজিসির অর্থ ও হিসাব বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে সদস্য এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. গোলাম দস্তগীরকে সদস্য সচিব করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ ছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী পরিচালক লাবিবা মহসীন কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ কমিটি প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো নথি, বিভিন্ন সময়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত এবং আনুষঙ্গিক দলিলপত্র/কাগজপত্রাদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারবে। এ ছাড়া প্রয়োজনবোধে যে কারও বক্তব্য নিতে পারবে।
এদিকে, ‘অর্থ আত্মসাৎ’ শব্দটিকে অযৌক্তিক, অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অত্যন্ত অসম্মানজনক বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে জাবি শিক্ষক সমিতি। অফিস আদেশের বক্তব্য এবং শব্দচয়ন জাবি শিক্ষকদের ব্যথিত করেছে এবং এ ধরনের তদন্তের আদেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করাসহ পেশাগত দায়িত্ব, একাডেমিক দক্ষতা এবং ব্যক্তিগত প্রজ্ঞা ও মেধার প্রতি অবিচার করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. মোতাহার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে ইউজিসিকে এ ধরনের তদন্ত থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানান তাঁরা।
অন্যদিকে, এ বিষয়ে জাবির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘অভিযোগ উঠলে তদন্ত করবে না কেন? তদন্ত না হলে তো সন্দেহটা থেকে যাবে, এটা তো আরও খারাপ। শিক্ষক সমিতির দ্রুততর সময়ের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করতে বলা উচিত ছিল, যাতে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টা নিষ্পত্তি হয়, স্বচ্ছ হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রাইহান রাইন বলেন, ‘অর্থ আত্মসাৎ’ শব্দটি আপত্তিকর। কোনো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে ইউজিসি সবার বিরুদ্ধে এভাবে তদন্ত করতে পারে কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন আছে।