ঢাবিতে ছাত্রলীগনেতার রুম দখল, দেশীয় অস্ত্রের মহড়া
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। রুম দখলকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। গতকাল বুধবার রাত ১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
সূত্র জানায়, হলের নিচ তলার ৭৯ নম্বর রুমে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের নেতাকর্মীদের তুলতে গেলে অপর পক্ষের নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই হলের মধ্যে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়েছে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের জানায়, নিচ তলার ৭৯ নম্বর রুমে অবস্থান করতেন হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুলিয়াস সিজার তালুকদার। পরে তিনি অন্য একটি রুমে চলে যান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারীদের নিয়ে হলে একটি গ্রুপ তৈরি করেন। বেশ কয়েকদিন ধরে হলের ৭৯ নং রুমটি নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। পরে ওই রুমে ছয়জন ছাত্র তোলার বিষয়ে হলের ছাত্রলীগের অন্য গ্রুপ লিডাররা একমত হন। কিন্তু এদিন জুলিয়াস সিজার তালুকদার ও তার অনুসারীরা হলের নিচ তলার ৭৯ নং রুম দখলের জন্য চেষ্টা করের। পরে অন্য গ্রুপ নেতারা তার সমর্থকদের বাধা দিলে কথা কাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে হলে উভয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা রড, লাঠি ইত্যাদি দেশীয় আস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপসের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সমাধান হয়।
অভিযোগের বিষয়ে মোবাইল ফোনে জুলিয়াস সিজার তালুকদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। যদিও তিনি এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি। তার বিরুদ্ধে রুম দখলের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কে অভিযোগ করেছে, তার নাম না বললে কোনো কথা বলব না। পরে ফোনটি কেটে দেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জুলিয়াস সিজার তালুকদার ২০১৪-১৫ সেশসের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তার ছাত্রত্ব নেই। ছাত্রলীগের এই নেতার বিরুদ্ধে এর আগে শামসুন্নাহার হল সংসদের ভিপি তাসনিম আফরোজ ইমিসহ কয়েকজন নারীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ১৫২ নম্বর রুম থেকে এক বহিরাগতকে বের করে তার নিজ অনুসারীদের দিয়ে রুম দখলের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস এনটিভি অনলাইনকে বলেন, কথা কাটাকাটি হয়েছিল। আমি মিটিয়ে দিয়েছি।
এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুজিবুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আমি হলে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমার স্টাফরা কেউ কিছু বলেনি। তবে, আমি ওই রুমটির ব্যাপারে এখনি খোঁজ নিচ্ছি। তিনি আরও বলেন, হলের বারান্দায় যেহেতু শিক্ষার্থীরা আর থাকতে পারছে না, সেক্ষেত্রে রুমগুলোতে কোনো ধরনের অছাত্র বা বহিরাগতরা থাকতে পারবে না। সেখানে আমরা নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ওঠানোর ব্যবস্থা করব। তিনি আরও বলেন, জুলিয়াস সিজারের ছাত্রত্ব না থাকলে সেও হলে থাকতে পারবে না।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, আমি বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিচ্ছি। আমরা ছাত্রলীগের সব নেতাকর্মীকে হল প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।