ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা : ভর্তিচ্ছুদের সেবা দিয়ে প্রশংসা কুড়াচ্ছে ছাত্রলীগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা চলার সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের স্বেচ্ছাসেবায় মুগ্ধ হচ্ছেন সবাই। বিশেষ করে, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে সংগঠনটি বেশ প্রশংসা কুড়াচ্ছে।
আজ শনিবার (১৩ মে) ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের পরীক্ষা চলার সময় ক্যাম্পাসে আগত বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনের সঙ্গে কথা বলে ছাত্রলীগের এই সেবামূলক কার্যক্রমের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
মিরপুর থেকে শাহীন আলম এসেছেন তার ছোটবোনকে নিয়ে। তার বোনের পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছে এমবিএ ভবনে। তিনি ছাত্রলীগের সেবার বিষয়ে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, “ক্যাম্পাসে আসার পর আমার বোনের পানির পিপাসা লাগে। তখন ছাত্রলীগের হেল্পডেস্কে পানির কথা বললে সঙ্গে সঙ্গে একটি পানির বোতল দেয়। এরপর এমবিএ ভবনটা আমি চিনতে পারছিলাম না, তখন তারাই এটা দেখিয়ে দেয়। তারপর আমার বোনকে কেন্দ্রে ঢুকিয়ে দিয়ে এসে এই অভিভাবক ছাউনিতে (শ্যাডোর পেছনে) এসে বসেছি।”
ভর্তিচ্ছু ছেলেকে নিয়ে সদরঘাট থেকে আসা এক অভিভাবক বলেন, “এখানে এসে টয়লেট খুঁজেছি অনেক, কিন্তু পাইলাম না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলোতে পরীক্ষা চলায় এখানেও ঢোকা যায়নি। তবে, খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে, ছাত্রলীগের হেল্পডেস্কে গিয়ে বললে তারা তাদের মোবাইল টয়লেটের খোঁজ দেয়।”
কেরাণীগঞ্জ থেকে ভাগ্নীকে নিয়ে আসা আব্দুল কাদের নামে এক অভিভাবক বলেন, “ছাত্রলীগের মোবাইল টয়লেট আর বাইক সার্ভিসটা অনেক কার্যকরী এবং আমার কাছেও বেশ ভাল লেগেছে। কারণ, আমার সামনেই এক স্টুডেন্ট ভুল কেন্দ্রে চলে আসছিল। পরে তাড়াতাড়ি করে ছাত্রলীগের ছেলেদের বাইকে তাকে তার কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।”
ছাত্রলীগ ছাড়া আরও বিভিন্ন ছাত্র, সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী এবং জেলাউপজেলা সংগঠনসমূহ ঢাবি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে শিক্ষার্থী সহায়তা ও তথ্য কেন্দ্র বসিয়েছে। এসব সহায়তা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সহায়তা করার পাশাপাশি পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে নেওয়ার অনুপযোগী জিনিসপত্র (ব্যাগ, ঘড়ি, মোবাইল ইত্যাদি) রাখার ব্যবস্থাও করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, “বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যেখানে আছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সেখানে নিরাপদ থাকবে। ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দর শিক্ষার পরিবেশ ফিরে পায় সেই উদ্দেশ্য নিয়ে ছাত্রলীগ কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও করে যাবে। আর, ক্যাম্পাসে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের জন্য আমাদের যে স্বেচ্ছাসেবা চলমান রয়েছে তা ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত থাকবে।”
গত ২৯ এপ্রিল চারুকলা ইউনিটের মাধ্যমে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। এরপর সামাজিক বিজ্ঞান, আইন ও কলা, বিজ্ঞান এবং সর্বশেষ আজ শনিবার ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এসব পরীক্ষা চলার সময় ছাত্রলীগ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ১১টি সেবামূলক কর্মসূচি অনুযায়ী কার করেছে।
ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় ছাত্রলীগের গৃহীত কর্মসূচিগুলো ছিল—শিক্ষার্থী সহায়তা ও তথ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ; পরীক্ষা কেন্দ্র সম্পর্কিত তথ্য জানানোর জন্য দিকনির্দেশামূলক চিহ্ন ব্যবহার; কলম, ফাইলসহ শিক্ষা উপকরণ বিতরণ; ভর্তিচ্ছুদের দ্রুত কেন্দ্রে পৌঁছাতে জয় বাংলা বাইক সার্ভিস; বিনামূল্যে সুপেয় পানির ব্যবস্থা; প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র; প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের চলাচলের সুবিধার্থে হুইলচেয়ার ও প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ; পরীক্ষা কেন্দ্রে নেওয়ার অনুপযোগী শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত জিনিসপত্র রাখার ব্যবস্থা; শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের বিশ্রামের সুবিধার্থে অভিভাবক ছাউনির ব্যবস্থা; মোবাইল টয়লেট ব্যবস্থা এবং ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিতে প্রয়োজন সাপেক্ষে হল ছাত্রলীগের মাধ্যমে পরীক্ষার পূর্ব রাতে থাকার ব্যবস্থা ইত্যাদি।