বিএনপিনেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের গ্রেপ্তার চায় ছাত্রলীগ
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এই দাবি জানানো হয়।
ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘এই আলালরা (মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল) মুক্তিযুদ্ধের সময় কোথায় ছিলেন? আলাল প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যেভাবে কুরুচিপূর্ণ কথা বলেছেন সেটা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। অবিলম্বে তাঁকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।’
বিএনপিনেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের মন্তব্যের প্রতিবাদে ও তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, বিভিন্ন সময় ছাত্রশিবির-ছাত্রদলের হামলায় নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগকর্মী শহীদ ফারুক হোসেন, বুয়েটের ছাত্রলীগকর্মী শহীদ আরিফ রায়হান দ্বীপ, বুয়েটের ছাত্রী সাবিকুন নাহার সনি, চট্টগ্রামের বাকলীয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মী হত্যার রায় দ্রুত ঘোষণার দাবিতে এই বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে ছাত্রলীগ।
এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ‘আলালের চামড়া, তুলে নিব আমরা’, ‘জামাত-শিবির রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। পরে মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের কুশপুতুল দাহ করা হয়।
ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘বুয়েটের আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে উচ্চ আদালতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে। পাশাপাশি যারা ওই সময়ে ঘটনাস্থলে ছিল না তারা যেন শাস্তির আওতায় না আসে সেটাও বিজ্ঞ আদালতকে বিবেচনায় নিতে হবে।’
ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, ‘ছাত্রলীগ আছে বিধায় জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিতে পারছে না। শান্তিতে দেশের জনগণ ঘুমাতে পারছেন। বিএনপি-জামাত জোটের সময় কোনো নৈতিকতা ছিল না। সেজন্য বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে কোনো আপোষ চলবে না। তারা পাকিস্তানের প্রেতাত্মা।’
আল নাহিয়ান খান জয় আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে আইনের শাসন চলছে, সুশাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। অন্যায়কারী সে যেই হোক তাকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। তবে ছাত্রলীগের নাম শুনলে যাদের চুলকানি উঠে তাদেরকে বলি, এই ছাত্রলীগ না থাকলে শান্তিতে ঘুমাতে পারতেন না।’
কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘বুয়েটের আবরার হত্যার পর সর্বপ্রথম ছাত্রলীগই ঢাকা শহরে শোক মিছিল বের করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শক্ত নির্দেশনায় এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবার দ্রুত বিচারকাজ সম্পাদন হয়েছে। বুয়েটের সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও এই রায়কে সাধুবাদ জানিয়েছেন।’
২০১৩ সালে বুয়েট ছাত্রলীগের কর্মী আরিফ রায়হান দ্বীপকে শিবিরের নেতাকর্মীরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে উল্লেখ করে লেখক বলেন, সে মামলার রায়ের কী অবস্থা? রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগকর্মী শহীদ ফারুক হোসেন, বুয়েটের ছাত্রী সাবিকুন নাহার সনি, চট্টগ্রামের বাকলীয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মী হত্যার রায়ের কী অবস্থা? কেন একই দেশে একটি ছাত্র সংগঠনের জন্য এক আইন, আরেকটি ছাত্র সংগঠনের জন্য আরেক আইন হবে?’
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফ উদ্দিন বাবু, রাকিব হোসেন, মুরাদ হায়দার টিপু, ফরিদা পারভিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, বরিকুল ইসলাম বাঁধন, নাজিম উদ্দিন, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক হায়দার রহমান জিতু, সাহিত্য সম্পাদক আসিফ তালুকদার, মানবসম্পদ সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহিন, গণশিক্ষাবিষয়ক উপ-সম্পাদক সোলায়মান হোসেন মুন্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।