ভিসির পদত্যাগ দাবিতে আমরণ অনশনে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার দুপুর থেকে আমরণ অনশনে নেমেছেন তারা। ২৪ জন শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেছেন। এর মধ্যে ১৫ জন ছাত্র ও ৯ জন ছাত্রী রয়েছেন।
অন্যান্য দিনের মতো ক্যাম্পাসে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পুলিশ সদস্যরা। প্রধান ফটকের বাইরেও অবস্থান করছে পুলিশ। তবে আন্দোলন ঘিরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি বলে জানা গেছে।
অনশন থেকে শিক্ষার্থীরা জানান, বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজার কাছে অপরিহার্য কিছু যৌক্তিক দাবি তুলে ধরা হয়েছিল। সে সময় তিনি সমস্যার সমাধান না করে ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এমনকি, হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা বলেন।
ওই রাতেই আন্দোলনে নামলে দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন উপাচার্য। কিন্তু তিনি তাঁর কথা না রেখে সময় বাড়াতে থাকেন।
এর মধ্যে পুলিশের হামলার শিকার হতে হয় শিক্ষার্থীদের। তার ওপর পুলিশ ৩০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে। এর প্রতিবাদে ভিসির অপসারণের দাবিতে অনশন করছি আমরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল নাঈম নিশাত বলেন, ‘আমার সহপাঠী, সিনিয়র ও জুনিয়র ভাইবোনেরা নিজেদের প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রক্তাক্ত হয়েছে। উপাচার্য ইচ্ছে করলে আগেই এর সমাধান করতে পারতেন। তাঁর অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা নিরাপদ থাকব না। তাই সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই।’
গত রোববার বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবিতে শুরু হয় ছাত্রীদের আন্দোলন। পরে সেই আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যোগ দেন। উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনাও ঘটে।
এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে আহত হন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে ওই রাতেই আন্দোলনে নামেন তাঁরা। যদিও পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
বুধবার বিকেলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। চলমান ঘটনায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের মাধ্যমে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এতে দোষী হলে সরকারের নির্দেশ মেনে নেবেন বলে জানিয়েছেন উপাচার্য (ভিসি)।
‘উপাচার্য কোন রকম সংশ্লিষ্ট নয়’ দাবি করে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ রাবার বুলেট ছুঁড়েছে, সাউন্ড গ্রেনেড মেরেছে। এ জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
উপাচার্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত, খুবই মর্মাহত।’