রাবিতে শিক্ষকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের এক শিক্ষকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে একই বিভাগের শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি ও সিন্ডিকেটে রিপোর্ট সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক আজ বুধবার দুপুরে এ বহিষ্কারাদেশ দেন৷ অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম আশিক উল্লাহ৷ তিনি আইন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী।
এর আগে আজ বেলা ১১টার দিকে বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক আসমা সিদ্দীকার চতুর্থ বর্ষের ক্লাস চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে পরবর্তীতে প্রশাসনের হাতে তুলে দেন। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও গ্রেপ্তারসহ তিন দফা দাবিতে বিভাগের অন্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন৷
বহিষ্কারাদেশে বলা হয়, আশিক উল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশের বিঘ্ন ঘটিয়েছে। বিভিন্ন সময় সে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হত্যার হুমকিও দিয়েছে। আজও আইন বিভাগের অধ্যাপক আসমা সিদ্দীকাকে হেনস্তা করে। এরই প্রেক্ষিতে ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন ও দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি ও সিন্ডিকেটে রিপোর্ট সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আজ স্নাতকের চতুর্থ বর্ষের ক্লাস চলাকালে ইমপ্রুভমেন্ট কোর্সের ক্লাস করার কথা বলে ক্লাসে প্রবেশ করেন স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী আশিক উল্লাহ। কিন্তু তার কোনো ইমপ্রুভমেন্ট ছিল না। ক্লাসের শেষের দিকে তিনি ওই শিক্ষককে বিব্রত করার জন্য অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করতে থাকেন। একপর্যায়ে শিক্ষক ক্লাস থেকে বের হতে গেলে আশিক উল্লাহ দরজা লাগিয়ে তাকে মারার জন্য উদ্যত হন। পরে শিক্ষার্থীরা তাকে ক্লাস রুমে আটকে রেখে শিক্ষককে সেখান থেকে সরিয়ে নেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক অধ্যাপক আসমা সিদ্দীকা বলেন, ‘আমি চতুর্থ বর্ষের ক্লাস শেষ করে বের হতে গেলেই সে আমার পথ অবরোধ করে। ডিপার্টমেন্টের আভ্যন্তরীণ একটি বিষয় নিয়ে আমার কাছে সমাধান চাইলে, আমি তাকে চেয়ারম্যান স্যারের সঙ্গে কথা বলতে বলি। কিন্তু সে তা না শুনেই আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে।’ অভিযুক্ত আশিক উল্লাহ নিয়মিত বিভিন্ন শিক্ষকের সঙ্গে বেয়াদবি করে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আমরা বিভাগের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এর আগে তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে সেই কমিটির প্রতিবেদনের বাস্তবায়ন চাইব। এরই মধ্যে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সে যেন পরীক্ষা দিতে না পারে সে ব্যবস্থাও করব আমরা।’