রাবি সংলগ্ন পুলিশ বক্স ভাঙচুর, রাবার বুলেটে আহত শিক্ষার্থী
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে জানা না গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে ২০ থেকে ২৫ জন। এ ঘটনায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে বিনোদপুর। সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ রাত সোয়া ১১টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চলছে। অপরদিকে, শিক্ষার্থীদের হলে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। তবুও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে, সংঘর্ষের একপর্যায়ে দোকানপাট ভাঙচুর ও পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ছুড়েছে পুলিশ। এতে নতুন করে বেশ কয়েক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
জানা গেছে, বগুড়া থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আলামিন আকাশ রাজশাহী আসছিলেন। বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে গাড়ির ড্রাইভার শরিফুল ও সুপারভাইজার রিপনের সঙ্গে তাঁর বাকবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেট এসে আবারও সুপারভাইজারের সঙ্গে ঝামেলা বাধে। তখন স্থানীয় এক দোকানি এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড় হন এবং স্থানীয় দোকানদারে ওপর চড়াও হন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, একপর্যায়ে স্থানীয়রা একজোট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের তারাও পাল্টা ধাওয়া করেন।
রাত সোয়া ১১টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় পুলিশ সাঁজোয়া যান নিয়ে মাঝে সড়কে অবস্থান নিয়েছে। ছুড়েছে রাবার বুলেট। এতে নতুন করে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে, সংখ্যা জানা জায়নি।
এর আগে রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেছিলেন, ‘পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। র্যাব, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য চেষ্টা করছে। এ ঘটনায় প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।’
অন্যদিকে, খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য সুলতান উল ইসলাম ও হুমায়ুন কবির বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে যান। সুলতান উল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা আহতদের বাস দিয়ে রামেকে (রাজশাহী মেডিকেল কলেজ) পাঠাচ্ছি। আহতদের সংখ্যা দুই শতাধিক হবে।’
সংঘর্ষের ঘটনায় বিনোদপুর বাজারে স্থানীয় দোকানপাটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া বিনোদপুর ফটকসংলগ্ন পুলিশ বক্সটি ভাঙচুর করা হয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, আগুন দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। আগুন লাগার ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সার্বিক বিষয়ে জানতে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হলে সম্ভব হয়নি।