শ্রেণিকক্ষে ময়লা পাওয়ায় অধ্যক্ষ ও মাউশি’র কর্মকর্তাকে বরখাস্তের নির্দেশ
শ্রেণিকক্ষে ময়লা পাওয়ায় আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হাছিবুর রহমান এবং তদারকির দায়িত্বে থাকা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কর্মকর্তা সেলিনা হোসেনকে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। দেড় বছর পর স্কুল-কলেজ খোলার প্রথম দিন আজ রোববার ওই স্কুলটি পরিদর্শনের পর দায়িত্বে অবহেলাজনিত কারণে এই নির্দেশ দেন তিনি।
জানা গেছে, আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে পরিদর্শনে গিয়ে একটি শ্রেণিকক্ষে ময়লা দেখতে পান শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্য বারবার নির্দেশ দেওয়ার পরও প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেয়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
পরিদর্শন শেষে স্কুলের পোশাক নিয়ে শিক্ষার্থীদের আপাতত চাপ দেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন ডা. দীপু মনি। তবে, সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও মাস্ক পরে বিদ্যালয়ে আসে সেদিকে নজর রাখতে হবে বলেও জানান তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে গেলে না জানিয়েই যাব। দেশব্যাপী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হঠাৎ করে ভিজিট করা হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় সচেতনতা সবার ক্ষেত্রে আলাদা। যেটা আমাদের চোখের সামনে পড়ে, সেটা হয়তো আমরা পরিষ্কার করি, কিন্তু যেটা একটু চোখের আড়ালে, সেটা হয়তো পরিষ্কার করি না। অনেক জায়গায় এটা হতে পারে। যাঁরা পরিদর্শনে যাবেন, তাঁরা যেন আনাচে-কানাচেও দেখেন।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে দীপু মনি বলেন, ‘আপনারা কোথাও অনিয়ম দেখলে আমাদের ধরিয়ে দিলে আমরা খুশি হব, যাতে কাউকে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে না হয়।’
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতির কারণে পুরো বিশ্বে শিক্ষা ব্যবস্থাসহ সবকিছুতে স্থবিরতা নেমে আসে। আমাদের দেশে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমে আসায় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কাজেই আমাদের সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।’
দীপু মনি আরও বলেন, ‘আমরা ধরে নিয়েছিলাম, ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংক্রমণের হার একেবারে ৫ শতাংশে না হলেও এর কাছাকাছি নেমে আসবে। তার ভিত্তিতেই কিন্তু আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিই। আমরা এই সময়টাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার যথার্থ সময় মনে করেছি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আজ দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। সবার মধ্যেই সাজসাজ রব। শিক্ষার্থী থেকে অভিভাবক সবার মধ্যেই উদ্দীপনা বিরাজ করছে। আমার কাছে শয়ে শয়ে মেসেজ এসেছে যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবেন না। আসলে সবদিকেই অনেক মতামত রয়েছে। তার মধ্য থেকেই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও আমরা সেই চিন্তাও মাথায় রেখেছি। যদি কোনো আশঙ্কা দেখা যায়, তাহলে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে না রেখে আগের পদ্ধতিতে ফিরে যাব।’
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘শুধু সংক্রমণের হার নয় আমাদের অন্য বিষয়গুলোও বিবেচনায় নিতে হয়েছে। শিক্ষার্থীদের শারীরিক-মানসিকসহ নানাবিধ সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এসব মাথায় নিয়েই আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছি। করোনার সঙ্গে হয়তো আমাদের আরও অনেক দিন বসবাস করতে হবে।’