সমালোচনার মুখে দুর্গাপূজায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার
আসন্ন দুর্গাপূজার ছুটিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল’ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন৷ এ নিয়ে হলের আবাসিক ছাত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথা বলেন। পরে হল কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার পর বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়।
আজ শনিবার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, পূজার ছুটিতে হল বন্ধ থাকবে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা টিউশনসহ বিভিন্ন কারণে বাড়ি যেতে ইচ্ছুক না হওয়ায় হলে থাকার আবেদন জানান। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর তীব্র সমালোচনা করতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক-অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা।
এমনকি শিক্ষকেরাও এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান ব্যক্ত করেন। কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক চঞ্চল বোস ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ছুটিতে বন্ধ থাকে বলে কখনও শুনিনি। ঢাবিতে ছয় বছরের বেশি মুহসীন হলে ছিলাম, এক মুহূর্তের জন্যও কোনো হল বন্ধ থাকার কথা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। বরং ছুটিতে হলে থেকেই আমরা বেশি পড়াশুনো করেছি, লাইব্রেরি ওয়ার্ক করেছি। অনেক ছেলেমেয়ে টিউশনি, চাকরি, পত্রিকা অফিসে কাজ করতো। এরকম অদ্ভুত কথা তো শুনিনি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রী জানান, তারা ঢাকাতে টিউশন করান। তাদের এবার পূজার ছুটিতে বাড়িতে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। হঠাৎ হল বন্ধের নোটিশ দেখে বেশ বিড়ম্বনার মাঝে পড়ে গিয়েছিলেন। দেশের অন্য কোনো হল এভাবে ছুটিতে বন্ধ রাখে বলে জানা নেই তাদের। এ ছাড়া বন্ধের পরে তাদের পরীক্ষাও ছিল।
এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ছুটিতে হল খোলা রাখার দাবি জানিয়েছেন আবাসিক ছাত্রীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছুটির সঙ্গে আবাসিক হলের ছুটির কোনো সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে হলের ছাত্রীরা স্মারকলিপিও দেন।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি সুমাইয়া সোমা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দেশের কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল কখনও ছুটিতে বন্ধ থাকে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং হল প্রশাসন মিলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নিয়মের নামে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে ফেলছে।’
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম বলেন, ‘পূজার ছুটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর পর কিছু বিভাগে ছাত্রীদের পরীক্ষা রয়েছে। তাদের কথা বিবেচনা করে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে হল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’