ঢাবির খেলার মাঠে হচ্ছে বর্জ্য ফেলার জায়গা!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের মাঠের একটি অংশে নির্মিত হচ্ছে বর্জ্য রাখার জায়গা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বর্জ্য ফেলা হবে সেখানে। দিনভর এসব বর্জ্য ওখানে থাকবে। রাতে নেওয়া হবে অন্য জায়গায়।
শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের কার্যালয় ও জিমনেশিয়ামের দক্ষিণ পাশে বর্জ্য রাখার ওই জায়গা নির্মাণ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। নাম দেওয়া হয়েছে ‘সেকেন্ডারি ট্রান্সফার প্ল্যান্ট’। নির্ধারিত ওই জায়গার সামনে মাঠের গ্যালারি। গ্যালারি পেরিয়ে রাস্তা, রাস্তার ওপাশেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দাবি, আধুনিক পদ্ধতিতে ওই স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে পরিবেশের ক্ষতি হবে না।
অন্যদিকে মাঠ ব্যবহারকারী একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, এ স্থাপনা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াবে না, এ থেকে পরিবেশ নষ্ট হবে না এর নিশ্চয়তা কে দেবে? এত সবুজ, পরিচ্ছন্ন একটা মাঠে কেন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে, তা বোঝা যাচ্ছে না।
জিমনেশিয়ামের পাশেই ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থের জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত জায়গাটি বাঁশের বেড়া দিয়ে আলাদা করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্জ্য ফেলা হবে এ জায়গায়। দিনভর এ জায়গায় বর্জ্য থাকবে। রাতে অন্য গাড়ি এসে বর্জ্য তুলে নিয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন, নির্ধারিত ওই এলাকায় বর্জ্য ফেললে অবশ্যই তার প্রভাব আশপাশে পড়বে। গন্ধ ছড়াবে। ময়লার গাড়ি আসবে। এখানে শিক্ষার্থী-শিক্ষকরা কেবল খেলার জন্য আসেন না। সকালে ব্যায়াম, দৌড়ানো, সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে আসেন। এ রকম একটা এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনাটা পুরো পরিবেশকেই হুমকিতে ফেলে দেবে।
একাধিক ছাত্র জানান, তাঁরা এখনো নিশ্চিত নন, কেমন ধরনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা হতে পারে। তা এখানে স্পষ্ট করে জানানো হয়নি। এ মাঠে এসে একটু নিশ্বাস নেওয়া যায়। যদি বর্জ্যের কারণে এখানে আসাই বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে তো মুশকিল।
এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের পরিচালক শওকতুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের মাঠের একপাশে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার প্ল্যান্ট করবে সিটি করপোরেশন।’ পরিবেশের ক্ষতি হবে কি না জানতে চাইলে শওকতুর রহমান জানান, সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, আধুনিক পদ্ধতিতে তা করা হবে, এতে পরিবেশের ক্ষতি হবে না, দুর্গন্ধও ছড়াবে না।
এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এম কে বখতিয়ার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এটি কোনো ভাগাড় নয়। আধুনিক পদ্ধতি ওই প্ল্যান্ট নির্মাণ করা হবে, যা হবে ক্লোজ ডোর। অর্থাৎ প্ল্যান্টের চারদিক বন্ধ থাকবে। এর ভেতরে থাকবে কনটেইনার। বর্জ্যের গাড়ি আসবে, বর্জ্যবাহী কনটেইনার সেখানে রাখবে। আবার পরে নিয়ে যাবে। কিছু সময়ের জন্য তো বর্জ্য রাখতে হবে আমাদের। ওই এলাকার জন্য শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের ওই অংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।’
এম কে বখতিয়ার দাবি করেন, ‘কোনোভাবেই গন্ধ ছড়াবে না। আর এ ক্ষেত্রে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেয়েছি। একই সঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতিও পেয়েছি।’