ঢাবিতে নতুন বছরের বাজেট উপস্থাপন, গবেষণায় বরাদ্দ ১.৬৪ শতাংশ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। এবার ৯১৩ কোটি ৮৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকার প্রস্তাবিত পরিচালন বাজেট অনুমোদন করেছে সিন্ডিকেট। এর মধ্যে গবেষণা মঞ্জুরি বাবদ ১৫ কোটি পাঁচ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। যা মোট ব্যয়ের মাত্র এক দশমিক ৬৪%। গবেষণা খাতে বাজেটের এ পরিমাণ নিয়ে অধিবেশনে দুঃখ প্রকাশ করেছেন একাধিক সিনেট সদস্য।
গতকাল বুধবার (২১ জুন) বিকেল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সিনেট চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। বাজেট উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।
অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গত বছরের মতো এ বছর ডিন, চেয়ারম্যান, পরিচালক, প্রাধ্যক্ষ ও অন্যান্য বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে আমরা তিনটি প্রাক-বাজেট আলোচনার আয়োজন করি যা বাজেট প্রণয়ণের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে। প্রত্যেকের যুক্তিসঙ্গত চাহিদা অনুযায়ী ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের বাজেট প্রস্তাব তৈরি করা হয়। উক্ত প্রস্তাবের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে চাহিদা পেশ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বমোট চাহিদা ছিল ৯৭৪ কোটি ৫২ লাখ ২৬ হাজার টাকা মাত্র। বিমক বরাদ্দ করে মাত্র ৭৬৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় বরাদ্দের পরিমাণ ২০৫ কোটি ৭২ লাখ ২৬ হাজার টাকা কম।’
মমতাজ উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুবিধা নেওয়ার জন্য প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষ মানব সম্পদ গড়া ও স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশের জন্য যে ধরনের সুযোগসুবিধা প্রয়োজন তা সামান্যই বিশ্ববিদ্যালয় পেয়ে থাকে। অপ্রতুল বিমক বরাদ্দের ভিত্তিতে হিসাব বিভাগের বাজেট শাখা একটি খসড়া বাজেট প্রণয়ণ করে। পরবর্তীতে বাজেট ওয়ার্কিং গ্রুপ খসড়া বাজেট পর্যালোচনা করে তাদের দ্বিতীয় সভায় (৩১ মে ২০২৩) প্রস্তাবিত বাজেট চূড়ান্ত করে। এ পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা ২০২৩-২০২৪ সালের খসড়া বাজেট তৈরি করি। এই খসড়া বাজেট নিয়ে গত ৮ জুন উপাচার্যের সভাপতিত্বে বাজেট ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়।’
অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন বলেন, ‘গত ১২ জুন ফাইন্যান্স কমিটিতে বাজেট পেশ করার পর ফাইন্যান্স কমিটির সুপারিশকৃত বাজেট ১৫ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদন করা হয়। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য সিন্ডিকেট ৯১৩ কোটি ৮৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকার প্রস্তাবিত পরিচালন বাজেট অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে বেতন, ভাতা ও পেনশন বাবদ ৭২৪ কোটি ১২ লাখ টাকা যা মোট ব্যয়ের ৬৮ দশমিক ২৯ শতাংশ; গবেষণা মঞ্জুরি বাবদ ১৫ কোটি ৫ লাখ টাকা যা মোট ব্যয়ের এক দশমিক ৬৪ শতাংশ; অন্যান্য অনুদান বাবদ ৩৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা যা প্রস্তাবিত ব্যয়ের তিন দশমিক ৬৯ শতাংশ; পণ্য ও সেবা বাবদ ২০৮ কোটি চার লাখ ৩৯ হাজার টাকা যা মোট ব্যয়ের ২২ দশমিক ৭৬ শতাংশ ও মূলধন খাতে ৩২ কোটি ২৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা যা মোট ব্যয়ের তিন দশমিক ৫৪ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।’