ইবির সেই পাঁচ শিক্ষার্থী স্থায়ী বহিষ্কারের পর যা বললেন ভুক্তভোগী ফুলপরী
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বহুল আলোচিত ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার অভিযোগে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগনেত্রী অন্তরাসহ পাঁচ ছাত্রীকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সোমবার (২১ আগস্ট) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬০তম সিন্ডিকেট সভা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এএইচএম আলী হাসান।
এএইচএম আলী হাসান জানান, উচ্চ আদালতের দেওয়া কয়েকটি পর্যবেক্ষণের পর রোববার (২০ আগস্ট) আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে স্থায়ী বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত হয়। সোমবার সিন্ডিকেট সভায় তা অনুমোদন হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট কোড অব কন্ডাক এর আলোকে অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য ছাত্রত্ব বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৩ আগস্ট) এই সিদ্ধান্ত উচ্চ আদালতে পাঠানো হবে।
এর আগে ওই পাঁচ ছাত্রীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল।
স্থায়ী বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা হলো ইবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি (বহিষ্কৃত) পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, অন্তরার অনুসারী ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম, মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও ফাইন আর্টস বিভাগের হালিমা খাতুন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে খুশি নির্যাতনের শিকার হওয়া শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন। কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত জানার পর ফুলপরী খাতুন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আর কোন শিক্ষার্থীর সঙ্গে যেন এমন অমানবিক ঘটনা না ঘটে। সে বিষয়টি যেন প্রশাসন সজাগ দৃষ্টিতে দেখে।’
অপরদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, র্যাগিংমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস চান তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকা নিয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ডেকে এনে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে রাতভর অমানবিক নির্যাতন করেন অভিযুক্তরা। নির্যাতনের সময় ফুলপরীকে বিবস্ত্র করে তা ভিডিও ধারণও করা হয়। ফুলপরীর লিখিত অভিযোগের পর বিষয়টি প্রকাশ হলে তুমুল সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়, দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল কর্তৃপক্ষ, শাখা ছাত্রলীগ ও উচ্চ আদালতের নির্দেশে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন থেকে আলাদা আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি তদন্তে ফুলপরীকে নির্যাতনের প্রমাণ পায় এবং তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে প্রেরণ করা হয়। এর আলোকে গত ১৫ জুলাই ইবি প্রশাসন এই পাঁচ শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করে। এই সিদ্ধান্তের পর উচ্চ আদালত সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার পক্ষে কয়েকটি পর্যবেক্ষণ দেন। এরপরই সোমবার স্থায়ী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।