ড. ইউনূসের বিচার স্থগিত চেয়ে ১৬০ জনের বিবৃতির পাল্টা বিবৃতি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিতের আহ্বান জানিয়ে বিশ্বের ১৬০ জন ব্যক্তির বিবৃতির পর পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ। সেখানে ওই ব্যক্তিদের আহ্বান বিচার বিভাগের ওপর অসাংবিধানিক হস্তক্ষেপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিতের আহ্বান জানিয়ে বিশ্বের ১৬০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির সাম্প্রতিক একটি বিবৃতি বা চিঠি বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের অভিমত হলো, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং সবকিছু আইন অনুসারে পরিচালিত হয়। স্বাধীন বিচার বিভাগ সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং এক্ষেত্রে কারও কোনো হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।’
বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ আরও বলেছে, ‘সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদ অনুসারে, নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ আলাদা এবং স্বাধীন। অর্থাৎ, বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করবে, নির্বাহী বিভাগ এখানে কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। বাংলাদেশের সংবিধানে, এদেশের সকল নাগরিকের যেমন আইনের আশ্রয় গ্রহণের অধিকার রয়েছে, তেমনি আইনের প্রয়োগ সকল নাগরিকের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য।’
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ সভাপতি ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করছি যে, দেশে আইনের শাসন বিদ্যমান এবং কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বাংলাদেশের আইন ও বিচার বিভাগকে না জেনে, যথাযথ পর্যালোচনা না করে অযাচিতভাবে বিচারাধীন মামলার বিষয়ে বিবৃতি বা চিঠি প্রদান ৩০ লক্ষ শহিদের রক্তের বিনিময়ে ও দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা এবং বিচার বিভাগের উপর অসাংবিধানিক হস্তক্ষেপ, যা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য হুমকি স্বরূপ। বিষয়টি কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ বিশ্বাস করে যে, বিবৃতি বা চিঠি প্রদানকারী বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার প্রতি সম্মান জানিয়ে তাঁদের বিভ্রান্তিমূলক ও অজ্ঞতাপ্রসূত মতামত প্রত্যাহার করে বাংলাদেশের মতো স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মর্যাদা সমুন্নত রাখবেন।’