জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অন-ক্যাম্পাস স্নাতক কোর্স বন্ধের নির্দেশ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। আজ মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ইউজিসির কার্যালয়ের আদেশে একথা বলা হয়। একইসঙ্গে অন-ক্যাম্পাস স্নাতক প্রোগামে শিক্ষার্থী ভর্তির উদ্যোগ কেন নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার কমিশন কর্তৃপক্ষের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নেওয়া সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে এ নির্দেশনা দিয়েছে ইউজিসি। তারা বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল ক্যাম্পাসে স্নাতক প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯২-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
নির্দেশনায় বলা হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে (গাজীপুর) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গত ২০ জুলাই একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে এলএলবি, বিবিএ, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট এবং নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্স বিষয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিটি কমিশন কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে।
এতে আরও বলা হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৯২ অনুযায়ী, দেশের কলেজ শিক্ষার স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠক্রম ও পাঠ্যসূচির আধুনিকীকরণ ও উন্নতিসাধন, শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও যোগ্যতা বৃদ্ধিসহ কলেজের যাবতীয় বিষয় ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ন্যস্ত করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয় হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। আইনের ধারা-৬ অনুযায়ী এ আইন এবং অর্ডারের বিধান সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতা নির্ধারিত।
ধারা-২(গ) অনুযায়ী ‘অর্ডার’ অর্থ ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্টস কমিশন অব বাংলাদেশ অর্ডার ১৯৭৩ (পিও নম্বর ১০ অব ১৯৭৩) এবং আইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদান সংক্রান্ত ধারা-৮(১) অনুযায়ী ডিগ্রি, ডিপ্লোমা এবং সার্টিফিকেট প্রদান সংক্রান্ত সব স্বীকৃত শিক্ষাদানের (কলেজ, স্কুল এবং কেন্দ্র) মাধ্যমে এককভাবে বা পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে পরিচালিত হবে। অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সহযোগিতায় অথবা একই উদ্দেশে একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদিত অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতায় পরিচালিত হবে।
আইনে স্নাতকপূর্ব শিক্ষাবিষয়ক স্কুল সংক্রান্ত ধারা-২৮(১) অনুযায়ী স্নাতকপূর্ব শিক্ষাবিষয়ক স্কুল একাডেমিক কাউন্সিল এবং সিন্ডিকেটের সার্বিক তত্ত্বাবধানে কলেজের স্নাতকপূর্ব শিক্ষাদান করবে। একই সঙ্গে পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচি নির্ধারণ, একাডেমিক কাউন্সিলের বিবেচনার জন্য পরীক্ষা বিধি সুপারিশ, প্রশিক্ষণের মান সংরক্ষণ এবং শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করবে।
এসব আইনের ধারাগুলো থেকে প্রমাণ হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে (গাজীপুর) স্নাতক প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯২-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
কমিশনের ইস্যু করা নির্দেশনায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির সব কার্যক্রম স্থগিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে কিসের ভিত্তিতে অন ক্যাম্পাস স্নাতক প্রোগামে শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্য কমিশনে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়।