প্রক্টর অফিসকে জবাবদিহি করতে হবে : জবি উপাচার্য
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার অভিযোগকে গুরুত্ব না দেওয়ায় প্রক্টর অফিসকে জবাবদিহি করতে হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম। আজ মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে আইন বিভাগ আয়োজিত অবন্তিকার স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন।
উপাচার্য বলেছেন, অবন্তি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে প্রক্টর দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করে। দপ্তরের কে সেটা গুরুত্ব দিয়েছে, কে দেয়নি–তার সবকিছু তদন্ত কমিটি বের করবে। কেন তার অভিযোগকে অবহেলা করা হলো, তারও জবাব দিতে হবে।
উপাচার্য সাদেকা হালিম বলেন, অনেকেই আমাকে বলেছে, এত তাড়াতাড়ি আপনি কেন সাময়িক বহিষ্কার করলেন? কারণ, সাময়িক বহিষ্কার না করলে তদন্ত সঠিক পথে আগায় না। তখন সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল, তাই করেছি।…একটি তদন্ত একদিনে হয় না। তদন্তের খুঁটিনাটি উঠে আসবে এই তদন্তে। আইন বিভাগের তার সহপাঠীদেরও ডাকা হবে। যারা তাকে হলে দেখেছে, মেসে দেখেছে—তাদের সবার সাক্ষ্য নেওয়া হবে।
অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে শনিবার পাঁচ সদস্যের যে কমিটি গঠন করা হয়েছে সেই কমিটি যাতে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয় সেদিকে নজর রাখবেন বলে জানান অধ্যাপক সাদেকা।
শিক্ষার্থীরা যাতে নিজেদের অভিযোগ জানাতে পারে, সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় অবহেলায় পড়ে থাকা অভিযোগ বক্সগুলোকে সংস্কার করতে ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে নির্দেশ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন উপাচার্য। তিনি বলেন, আমি প্রতিটি বাক্সের তালা খুলে দেখব, কী কী অভিযোগ আসছে। অভিযোগ বাক্সে শুধু নারী শিক্ষার্থী নয়, সবাই অভিযোগ দিতে পারবেন।
অবন্তিকার মৃত্যু সংবাদমাধ্যমে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে যাতে তাকে ‘মানসিক রোগী’ হিসেবে বিবেচনা করা না হয়, সেই অনুরোধ জানিয়ে অধ্যাপক সাদেকা বলেন, “নারীর আত্মহননের সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে সমাজ। আমি গত ৩০ বছর যাবত আমাকে বুলিং করা সহ্য করেছি, কিন্তু অবন্তি সেসব বুলিং নিতে পারেনি। তিনি বলেন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেল গঠনের সময় আমি সহযোগী অধ্যাপক ছিলাম। আমিও একজন সদস্য। আমি প্রভাষক থেকেই কিন্তু নারীদের জন্য কাজ করি। অনেক প্রতিকূলতা কাটিয়েই আমরা কাজ করছি।
অবন্তিকার মৃত্যু নিয়ে যারা আন্দোলন করছেন, তাদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, চলমান এই আন্দোলনকে ঘিরে কাউকে রাজনৈতিক মোড় নিতে দেব না। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকতে হবে।
অবন্তিকার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে অধ্যাপক সাদেকা বলেন, তার মাকে আমি কী বলব, আমি এখনও উনার সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি। তবে খুব শিগগিরই আমি তার সঙ্গে দেখা করব, তিনি আমার একজন বোন।