ঢাবি অধ্যাপক নাদির জুনাইদকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি।
অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলে অধিকতর তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্তের জন্য দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে। আর তদন্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত অধ্যাপক নাদির জুনাইদকে সব ধরনের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
গতকাল মঙ্গলবার (৭ মে) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনি ফোরাম সিন্ডিকেট বৈঠকে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
সিন্ডিকেট সূত্র জানায়, অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে আনা যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগে গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেখানে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিষয়টি আরও অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলে পাঠানো হয়েছে। এই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অধ্যাপক নাদির জুনাইদকে সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সোমবার (৬ মে) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তদন্তের অগ্রগতি জানাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তিন দিনের আলটিমেটাম দেয়। সিন্ডিকেট সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সিন্ডিকেটকে চাপ প্রয়োগ করছে উল্লেখ করে অধ্যাপক নাদির জুনাইদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) বরারব চিঠি দিয়েছিলেন।
এর আগে, চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ করেন। ১১ ফেব্রুয়ারি বিভাগের আরেক নারী শিক্ষার্থী তার বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে যৌন হয়রানির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ করেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর আরেকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীও তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ করেন।
ফলে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট গত ৩ মার্চ যৌন হয়রানির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্য বিশিষ্ট ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি এবং পরীক্ষার ফলাফলে বিপর্যয় ঘটানোর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
এছাড়াও চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রোশে পরীক্ষার ফলাফলে বিপর্যয় ঘটানোর অভিযোগ করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।