‘শিক্ষার্থীদের পালস নিয়ে পিলো পাসিং গেম খেলবেন না’
রাজধানীর শাহবাগ থেকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন কোটাবিরোধীরা। কোটা বিষয়ে হাইকোর্টের আংশিক রায় ও তারপর ছাত্রলীগের স্বাগত জানানোকে নিয়ে এক বক্তব্যে কোটাবিরোধী সমন্বয়করা বলেছেন, তারা কোটা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চান। এরপরও যদি কোথাও কোটাবিরোধীদের ওপর হামলা হয়, তবে তার দায় সরকাকেই নিতে হবে। তারা আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের পালস নিয়ে পিলো পাসিং গেম খেলবেন না। এই পিলো পাসিংয়ের মধ্যে ছাত্ররা থাকতে চায় না।’
গতকাল বৃহস্পতিবার কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ শুক্রবার (১২ জুলাই) বিক্ষোভ মিছিল শেষে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সেখানে ছাত্র সমাবেশ ও সমাবেশ শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
কোটাবিরোধীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আপনারা অনেকেই জিজ্ঞেস করেন, এই আন্দোলন কতদিন চলবে? আজকের পর থেকে আর আপনারা প্রশ্নটি করবেন না। মনে রাখবেন, আন্দোলন কবে শেষ হবে সেটি সরকার নির্ধারণ করবে। আমরা আমাদের দাবি পূরণ হলেই ঘরে ফিরে যাব। সরকার যতদিন প্রহসনের মাধ্যমে আমাদের ঝুলিয়ে রাখবে, ততদিন আমরা রাজপথে থাকব।’ এ সময় আরও বলা হয়, সারা দেশে যদি কোথাও কোটাবিরোধীদের ওপর হামলা হয়, তাহলে তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।’
আরও বলা হয়, ‘আগে বলা হচ্ছিল, এটি আদালতের সিদ্ধান্ত। গতকাল আমরা দেখলাম, যারা কখনোই চাকরি করবে না, যারা কখনোই চাকরির প্রার্থীও হবে না, তাদের মধ্য থেকে এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দেওয়া হয়। অথচ, আমাদের চাকরি করতে হবে। আমাদের চতুর্থ শ্রেণির চাকরি করে হলেও ভাতের সংস্থান করতে হবে। আমরা টেন্ডারবাজি করব না, আমরা রাজনীতি করছি না, আমরা কিছুদিন পরে টেন্ডারে আসব না, সুতরাং চাকরি ছাড়া আমাদের কোনো গতি নেই। যারা কখনোই চাকরি করবে না, তারা যখন হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য দেয়, তখন আমরা তা সন্দেহের চোখে দেখি। সেই দাবিটি তখন ইনভেলিড হয়ে যায়, যখন হাইকোর্ট তিন ঘণ্টার মধ্যে বলে দেয়, কোটা সংস্কার, পরিবর্ধন ও পরিমার্জনের পুরো কর্তৃত্ব রয়েছে সরকারের ওপরে। সুতরাং, আপনারা যারা ওপরের প্রেসক্রিপশন নিয়ে কথা বলেন, তাদের বলে দিচ্ছি—শিক্ষার্থীদের পালস নিয়ে আপনারা কোনো ধরনের পিলো পাসিং গেম খেলবেন না। এই পিলো পাসিংয়ের মধ্যে ছাত্ররা থাকতে চায় না। এই যে একটি সমস্যা তৈরি হয়েছে, আমরা তার শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই।’
কোটাবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও তারা বৈষম্য থেকে মুক্ত হতে পানেননি। তারা আকাশসম স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও তাদের খেটে খাওয়া বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারছেন না। তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। তারা লেখাপড়া করেও চাকরি জোটাতে পারছেন না। বৈষম্যমূলক কোটার কারণেই এটি হচ্ছে। এজন্যই তারা এই কোটাবিরোধী অবস্থান নিয়েছেন।
এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। স্লোগানে-স্লোগানে কুমিল্লায় পুলিশি হামলা এবং সায়েন্স ল্যাব ও নিউমার্কেট এলাকায় পুলিশি বাধার প্রতিবাদ জানানো হয়।