১৩ কলেজে শতভাগ পাস, সাত কলেজে অকৃতকার্য সবাই
এইচএসসি পরীক্ষার যশোর বোর্ডে এবার পাশের হার কমলেও বেড়েছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এ বছর পাসের হার দাড়িয়েছে ৬৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৭৪৯ জন শিক্ষার্থী। গতবছর ২০২৩ সালে যশোর বোর্ডে পাসের হার ছিল ৬৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিল আট হাজার ১২২ জন শিক্ষার্থী। এদিকে, এই বোর্ডে ১৩ কলেজে শতভাগ পাস করেছেন শিক্ষার্থীরা, যদিও সাত কলেজের ছাত্র-ছাত্রীর কেউই উত্তীর্ণ হতে পারেনি।
আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার। এসময় তিনি বলেন, এবার যারা এইচএসসি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়, করোনা মহামারীর সময় ২০২০ ও ২০২১ সালে তারা ৯ম ও ১০ম শ্রেণিতে অধ্যয়ন করেছে। তখন শ্রেণিকক্ষে পাঠদান সম্ভব না হওয়ায় তাদের ইংরেজিতে দুর্বলতা রয়ে গেছে। যা এখনও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। এবারের পরীক্ষার্থীদের ৩১ শতাংশই ইংরেজিতে অনুত্তীর্ণ হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে সার্বিক ফলাফলে। আগামীতে বোর্ডের ফলাফল ভাল করার জন্য তারা পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যান।
যশোর বোর্ডের প্রকাশিত ফলাফল থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ড থেকে এক লাখ ২২ হাজার ৫১১ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৭৮ হাজার ৭৬৪ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৩৬ হাজার ২৪৭ জন এবং ছাত্রী ৪২ হাজার ৫১৭ জন। পাসের হার ৬৪ দশমিক ২৯। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৭৪৯ জন।
২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ড থেকে এক লাখ ৯ হাজার ৬৩৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল ৭৬ হাজার ৬১৬ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৩৫ হাজার ৮৮৫ জন এবং ছাত্রী ৪০ হাজার ৭৩১ জন। পাসের হার ছিল ৬৯ দশমিক ৮৮। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৮ হাজার ১২২ জন।
যশোর বোর্ডের ফলাফল ঘোষণার সময় বোর্ড চেয়ারম্যান ছাড়াও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বিশ্বাস শাহিন আহম্মদ ও যশোরে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
চার বছরের মধ্যে এবার সর্বনিম্ন পাশের হার
যশোর বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষায় গত চার বছরের মধ্যে এবার পাশের হার সর্বনিম্ন। তবে গত বছরের তুলনায় এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। এ বছর পাশের হার দাঁড়িয়েছে ৬৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৭৪৯ শিক্ষার্থী। গত বছর ২০২৩ সালে পাশের হার ছিল ৬৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিল আট হাজার ১২২ শিক্ষার্থী। ২০২২ সালে পাশের হার ছিল ৮৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পায় ১৮ হাজার ৭০৩ শিক্ষার্থী। এর আগের বছর ২০২১ সালে পাশের হার ছিল ৯৮ দশমিক ১১ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২০ হাজার ৮৭৮ শিক্ষার্থী।
শতভাগ পাসে ১৩ কলেজে
এবারের এসএসসি পরীক্ষায় এই বোর্ডে ১৩টি কলেজ থেকে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ১০০ শতাংশই পাশ করেছে। কলেজগুলো হলো ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ, যশোরের চৌগাছা উপজেলার হাকিমপুর মহিলা কলেজ, একই উপজেলার এস এম হাবিবুর রহমান পৌর কলেজ, নড়াইলের গোবরা মহিলা কলেজ, যশোরের কেশবপুর উপজেলার তিতা বাজিতপুর এম কে বি মহিলা কলেজ, একই জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া হাজিরবাগ আইডিয়াল গার্লস স্কুল, খুলনার কয়রার হাড্ডা পাবলিক কলেজ, একই জেলার সোনাডাঙ্গার ইসলামাবাদ কলেজিয়েট স্কুল, সাতক্ষীরা কমার্স কলেজ, একই জেলার গোবরদাড়ি জরদিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, যশোরের চৌগাছা উপজেলার মড়ুয়া ইউসুফ খান স্কুল এন্ড কলেজ, খুলনার খালিসপুরের নেভি স্কুল এন্ড কলেজে এবং কুষ্টিয়ার সুনুপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ।
ভরাডুবি সাত কলেজে
এ বোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় একজনও পাশ করেনি এমন কলেজের সংখ্যা সাতটি। যদিও এ সাতটি কলেজ থেকে মাত্র ১৮ জন শিক্ষার্থী এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। কলেজ সাতটি হলো মেহেরপুরের গাংনি উপজেলার মড়কা জাগরণ কলেজ, খুলনার ডুমুরিয়ার মডেল মহিলা কলেজ, একই জেলার তেরোখাদার শাপলা কলেজ, সাতক্ষীরা জেলার আখরাখোলা আইডিয়েল কলেজ, মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলার গোপিনাথপুর এম. এ. খালেক স্কুল এন্ড কলেজ, যশোরের মণিরামপুর উপজেলার নেঙ্গুরহাট স্কুল এন্ড কলেজ এবং ঝিনাইদহের নাজিরউদ্দিন ইসলামিয়া কলেজ।