সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এক লাখ ব্যবধানে জয়ী হব : ভোট দিয়ে তৈমূর
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ রোববার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দেন স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী বিএনপির নেতা তৈমূর আলম খন্দকার।
ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের সামনে তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ ভালো, তবে শেষে বোঝা যাবে ভোটের পরিবেশ। পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের পাওয়ার অব স্টেশন কেন্দ্রে সকাল থেকে আমার এজেন্টকে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা প্রবেশ করতে দেয়নি। সুষ্ঠু ভোট হলে আশা করছি এক লাখ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হবো ইনশাআল্লাহ। ভোটারদের পুলিশ বাধা দিবে না বলে প্রত্যাশা করি।’
রোববার সকাল ৮টায় ভোট শুরুর সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রে এসে হাজির হন হাতি মার্কা প্রতীকে মেয়র পদের এই প্রার্থী। কয়েকজনের পরই নিজে ভোট দেন তিনি।
এদিকে, ভোটকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে নারায়ণগঞ্জ নগরীকে। সব এলাকাতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বাড়ানো হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে নজরদারি। প্রতিটি কেন্দ্রের সামনেই রাত থেকেই বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, এরই মধ্যে বহিরাগতদের নির্বাচনি এলাকা ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হচ্ছে। এ জন্য নারায়ণগঞ্জে দুই হাজার ৯১২টি ইভিএম মেশিন আনা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রয়োজনের তুলনায় দেড়গুণ ইভিএম রাখা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর থেকে ভোটকেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনি সামগ্রী পৌঁছানো শুরু হয়।
ইসি থেকে জানানো হয়, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি ১৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পেনাল কোডের অধীনে তারা মামলা নিয়ে সংক্ষিপ্ত বিচার কাজ পরিচালনা করবেন।
নির্বাচনের প্রধান আকর্ষণ মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে। নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির সাবেক নেতা ও আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকার (হাতি), খেলাফত মজলিসের এ বি এম সিরাজুল মামুন (দেয়ালঘড়ি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মো. মাছুম বিল্লাহ (হাতপাখা), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসীম উদ্দিন (বটগাছ), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো. রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম (ঘোড়া)।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে ২৭টি ওয়ার্ডের ১৯২টি কেন্দ্রের এক হাজার ৩৩৩ ভোটকক্ষে পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। তার মধ্যে চারজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারও রয়েছেন।
২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন ও সংরক্ষিত নয়টি ওয়ার্ডে মহিলা কাউন্সিলর পদে রয়েছেন ৩৪ জন প্রার্থী।
ইসি জানায়, নাসিক নির্বাচনকে ঘিরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ১৯২টি ভোটকেন্দ্রে ও কেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাঁচ হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২৬ জন সদস্য।
নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার গতকাল শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, নারায়ণগঞ্জে আলাদাভাবে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নেই। সব কেন্দ্রকেই বিশেষ বিবেচনায় রেখে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ১৯২টি ভোটকেন্দ্রের প্রতিটিতে একজন এসআইয়ের নেতৃত্বে থাকবে পাঁচজন করে পুলিশ সদস্য। এ ছাড়া আটজন পুরুষ ও চারজন নারী আনসার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।