পেশিশক্তি ব্যবহারের অপসংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে : সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, সিল মারাটা নির্বাচনের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে। পেশিশক্তির ব্যবহার করা, কালো টাকা ব্যবহার করা এবং কারচুপি করা, দীর্ঘদিন ধরে চর্চার মাধ্যমে একটা অপসংস্কৃতির চর্চা হয়ে গেছে। ক্রমান্বয়ে এ থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।
আজ সোমবার (২৭ নভেম্বর) নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) আয়োজিত সংসদ নির্বাচনের অনুসন্ধান কমিটির সদস্যদের (বিচারক) প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে সিইসি এ মন্তব্য করেন।
সিইসি বলেন, ‘দায়িত্ব পালনে যেন আপনাদের সাহসিকতা ও সততা থাকে। বাংলাদেশ একটি প্রজাতন্ত্র যদি বিশ্বাস করি, তাহলে নির্বাচন ছাড়া কখনো প্রজাতন্ত্র হতে পারে না। প্রজাতন্ত্র মানেই হচ্ছে নির্বাচিত প্রতিনিধি।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ভালো হতে পারে, মন্দও হতে পারে। এমনকি একনায়কতন্ত্রও যে খুব খারাপ পদ্ধতি, রাজতন্ত্র যে খুব খারাপ পদ্ধতি, আমরা বলছি না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রাজতন্ত্রের মাধ্যমে শাসন পরিচালিত হচ্ছে। একনায়কতন্ত্রের মাধ্যমেও শাসন পরিচালিত হচ্ছে। আমরা বেছে নিয়েছি গণতন্ত্র এবং গণতন্ত্রটাই কিন্তু বিশ্বে সর্বাধিক জনপ্রিয় শাসন পদ্ধতি।’
সিইসি বলেন, ‘গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে নির্বাচনকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। নির্বাচন নিয়ে যে বিতর্ক এখন দেশে, সেটি অনাকাঙ্ক্ষিত। এই নির্বাচনের ফেয়ারনেসকে উপলক্ষ করে আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব বিভক্ত হয়ে গেছে। এটি কাঙ্ক্ষিত ছিল না। সেজন্যই বলা হয় ক্রেডিবল ইলেকশন। ইলেকশন জিনিসটা কিন্তু বিশ্বাসযোগ্য, চোখে দেখা যায় না, যাবেও না। তারপরেও বলা নির্বাচন ক্রেডিবল, ফ্রি হয়েছে কিনা, ফেয়ার হয়েছে কিনা। এই পাবলিক পারসেপসনের কোনো মানদণ্ড নেই। তবুও জনগণকে বলতে হবে নির্বাচন ফ্রি এবং ফেয়ার হয়েছে। সার্বিকভাবে যদি জনগণ বলে থাকেন যে এবারের নির্বাচনটা ফ্রি, ফেয়ার এবং ক্রেডিবল হয়েছে, তাহলে এটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।’
সিইসি বলেন, ‘আমরা অতি সম্প্রতি খুব কষ্ট পেয়েছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষ্মীপুরে উপ-নির্বাচনে সিল মারা হয়েছে। আমরা প্রতিহত করতে পারিনি। এটি লজ্জার। সিল মারাটা নির্বাচনের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে। পেশিশক্তির ব্যবহার করা, কালো টাকা ব্যবহার করা এবং কারচুপি করা, দীর্ঘদিন ধরে চর্চার মাধ্যমে একটা অপসংস্কৃতির চর্চা হয়ে গেছে। ক্রমান্বয়ে এ থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। আমরা নিরন্তর চেষ্টা করছি। আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য নির্বাচন কমিশন যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।’
অনুষ্ঠানে ১০৫ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, ইটিআই মহাপরিচালকসহ নির্বাচন কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।