চট্টগ্রামে স্কুলের পরিচ্ছন্নকর্মীকে পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগ
চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি স্কুলের এক পরিচ্ছন্নকর্মীকে পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে প্রশিক্ষণ দিয়েছে নির্বাচনে কমিশন। এ ঘটনা প্রকাশের পর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন স্কুলের শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টরা। নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক তথ্য গোপন করার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি স্কুলের পরিচ্ছন্নকর্মী নাহিদুল ইসলাম কয়েক মাস আগে নিয়োগ পেয়েছে সুইপার পদে। দ্বাদশ সাধারণ নির্বাচনে পোলিং কর্মকর্তাদের নামের তালিকায় নাহিদুল ইসলামকে অন্তর্ভুক্ত করতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, স্কুলের সহকারী শিক্ষক ফেরদৌস জাহান চৌধুরী অসুস্থতার কারণে চট্টগ্রামের বাইরে অবস্থান করছেন। তার স্থলে নাহিদুল ইসলামকে পোলিং কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দিতে অনুরোধ করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
পদ পরিবর্তন দেখিয়ে সুইপারকে পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগে অনুরোধ করার বিষয়ে শিক্ষকরা নিষেধ করলেও প্রধান শিক্ষক ইচ্ছে করে করেছেন বলে জানান শিক্ষকরা।
গত ২০ ডিসেম্বর বুধবার আবেদনটি প্রেরণ করা হয়। গত বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে অংশ নেয় নাহিদ। নগরীর মহিলা সমিতি স্কুল ও কলেজের ৩০৫ নং কক্ষে শিক্ষকদের সাথে বসে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে স্কুলের সুইপার নাহিদ। নির্বাচন কমিশনের এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি স্কুলের আরও ৪০ জন শিক্ষক অংশ নেন। বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নকর্মী শিক্ষকদের সাথে প্রশিক্ষণ গ্রহণে স্কুলের শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ হলেও কোন অভিযোগ করতে পারেননি। কারণ সবাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের ভয়ে থাকেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক জানান, আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি স্কুলের প্রবীণ ও মেধাবী শিক্ষকদের সাথে সুইপারের পদ পরিবর্তন করে অফিস সহকারী দেখিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। এতে শিক্ষকদের মর্যাদা ভুলুণ্ঠিত করা হয়েছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম এনটিভি অনলাইনকে জানান, নাহিদ স্কুলের সুইপার। তবে সে এইচএসসি পাস। স্কুলের সহকারী শিক্ষক ফেরদৌস জাহান চৌধুরী অসুস্থতার কারণে চট্টগ্রামের বাইরে অবস্থান করছেন। তার স্থলে নাহিদুল ইসলামকে পোলিং কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দিতে অনুরোধ করেছি। তবে তিনিও অসুস্থ। তাই নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করছেন না।
এ ব্যাপারে ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মোস্তাফা কামাল জানান, নির্বাচনে পোলিং কর্মকর্তার পদটি অত্যন্ত দায়িত্বশীল। এভাবে তথ্য গোপন করে পরিচ্ছন্নকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ঘটনাটি প্রধান শিক্ষককে জবাবদিহি করতে হবে। প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন।