নিরাপত্তা চেয়ে সিইসি বরাবর ১৫ জনপ্রতিনিধির আবেদন
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি ও নিরাপত্তা চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে আবেদন করেছেন চকরিয়া এবং পেকুয়া উপজেলার ১৫ জনপ্রতিনিধি। সিইসির কার্যালয়ে গতকাল বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) আবেদনটি পৌঁছে দেন তারা।
এর আগে একইদিন সন্ধ্যায় কক্সবাজার-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্রপ্রার্থীর জাফর আলমের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করে জনপ্রতিনিধিরা। ওই সময় তারা জানিয়েছিল, কল্যাণ পার্টির সভাপতি হাতঘড়ি প্রতীকের সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিমের নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় তাদের ওপর হামলা ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
সিইসি বরাবর দেওয়া আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন— চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাংগীর আলম, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, পেকুয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান উম্মে কুলসুম, কক্সবাজার জেলা পরিষদের সদস্য আবু তৈয়ব, সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপির চেয়ারম্যান আজিমুল হক, কাকরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন, বমুবিলছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মনজুরুল কাদের, লক্ষ্যারচর ইউপি চেয়ারম্যান খ ম আওরঙ্গজেব বুলেট, বদরখালী ইউপি চেয়ারম্যান নুরে হোছাইন আরিফ, বি এম চার ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, চেমুশিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন আহমেদ, রাজাখালী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বাবুল, মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুছ চৌধুরী ও বারবাকিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বদিউল আলম।
আবেদন বলা হয়, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে একটি নিরপেক্ষ অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমরা সেই লক্ষ্যে নিজ নিজ এলাকায় আমাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনি কাজ করে যাচ্ছি। একই সঙ্গে সর্বোচ্চসংখ্যক ভেটারকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি, যা পরোক্ষভাবে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশের সহায়ক।
সিইসি বরাবর আবেদনে বলা হয়, বর্তমান সংসদ জাফর আলম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ট্রাক প্রতীকে নির্বাচন করছেন। তার পক্ষে কাজ না করে হাতঘড়ি মার্কার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় তিনি ও তার নিজস্ব অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনী দ্বারা অবৈধ অস্ত্রের ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং গুম ও হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া তার কর্মী বাহিনী দ্বারা হাতঘড়ি প্রতীকের নির্বাচনি পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট ও ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। এমনকি ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন লাগাতেও বাধা দিচ্ছে, যা সংবিধান কর্তৃক মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। এ ধরনের হুমকি, চাপ প্রয়োগ ও নির্বাচনি সরঞ্জাম ছিঁড়ে ফেলা ও লাগাতে বাধা দেওয়ার মতো অপতৎপরতা একটি অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে বড় অন্তরায়। ফলে আমরা জনপ্রতিনিধিরাও চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এমন ভীতিকর পরিস্থিতি ও নির্বাচনপ্রক্রিয়া নিয়ে জনমনের সংশয় দূর করতে কক্সবাজার-১ আসনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা বিধান ও হয়রানি রোধে পদক্ষেপ নিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনুরোধ জানাই।