পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে মোকাবিলা করবে সেনাবাহিনী : ইসি
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেছেন, ‘যেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে বেসামরিক প্রশাসন যেখানে মনে করবে, সেখানে সশস্ত্র বাহিনী মোকাবিল করবে।’
বুধবার (৩ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সশস্ত্র বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর প্রধানদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ইসি সচিব।
সহিংস ঘটনা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মো. জাহাংগীর আলম বলেন, ‘প্রথম হচ্ছে আমরা প্রত্যাশা করি না, এই নির্বাচনে কোনো সহিংস ঘটনা ঘটবে। যদি ঘটে, তখন সমন্বিতভাবে সবাই সেটা প্রতিহত করবে।’
সশস্ত্র বাহিনী কি সহিংস ঘটনা প্রতিহত করতে কোনো ব্যবস্থা নেবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনী মাঠে রয়েছে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য। সুতরাং, যেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটবে, বেসামরিক প্রশাসন যেখানে মনে করবে, সেখানে তারা মোকাবিল করবে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, ‘আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের সব আয়োজন নির্বাচন কমিশন সম্পন্ন করেছেন। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আওতাধীন যারা আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো, তাদের প্রধানদের সঙ্গে আজকে আমাদের বিশেষ মিটিং হয়েছে। সেখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সব কমিশনার এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার মহোদয়সহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাহিনীগুলোর প্রধান ও মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব উপস্থিত ছিলেন। সব বাহিনী মাঠ পর্যায়ে তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ শুরু করে দিয়েছে।’
জাহাংগীর আলম বলেন, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনী মাঠে নেমে গেছে। এটা একটা ফলোআপ মিটিং ছিল, কোনো বাহিনীর কত জন, কোথায় কীভাবে কাজ করছেন। সেই পরিকল্পনা তারা নিজ নিজ জায়গা থেকে কমিশনকে অবহিত করেছেন।’
‘বৈঠকে প্রত্যেকেই বলেছেন, এই পর্যন্ত মাঠে যে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত অবস্থা, তা এখন পর্যন্ত তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তারা এখন পর্যন্ত নির্বাচনে বড় ধরনের কোনো নাশকতার আশঙ্কা করছেন না। তবে যেহেতু একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে, এজন্য প্রত্যেকেই তারা তাদের নিজ নিজ গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক আরও সক্রিয় রাখবে। যাতে কোনো ধরনের ঘটনা ঘটার আগেই তা নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব হয়’, যোগ করেন ইসি সচিব।
মো. জাহাংগীর আলম বলেন, ‘প্রত্যেক বাহিনী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী মোতায়েন থাকবে। কেন্দ্রগুলোর অতীত ইতিহাস, ভোটারের সংখ্যা এই সমস্ত বিষয়গুলো আমলে নিয়ে পুলিশের সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সাধারণ কেন্দ্রে দুজন, গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র তিনজন, অতিগুরুত্বপূর্ণ তিনজন পুলিশ এভাবে তাদের নিয়োজিত করা হয়েছে।’
জাহাংগীর আলম আরও বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা, তারা তো পেট্রল (টহল) ডিউটি করবেন। তারপর বিজিবি ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে পেট্রল ডিউটি করবেন। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে তারা বিভিন্ন নোডাল পয়েন্টে (গুরুত্বপূর্ণ) অবস্থান করবেন। যখন স্থানীয় প্রশাসন অর্থাৎ বেসামরিক প্রশাসন যারা রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার আছেন, তাদের চাহিদা অনুযায়ী তারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে সেই সমস্ত জায়গাগুলোতে কাজ করবেন। এ ছাড়া সমন্বিতভাবে তারা পেট্রল ডিউটি অব্যাহত রাখবেন। জনগণের মধ্যে যেন ভীতি না থাকে, এই বিষয়টিতে তারা কাজ করবেন।’
ইসি সচিব বলেন, ‘যেহেতু নির্বাচন একেবারে কাছে। তাই এটি একটি ফলোআপ মিটিং ছিল। তারা কমিশনকে মাঠের অবস্থাটা অবহিত করছেন। কমিশনের অবস্থাটা আমরা বারবার বাইবেলের মতো বলে যাচ্ছি, ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন (অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন)। যিনি নিয়মের ব্যত্যয় ঘটাবেন তিনি আইনের আওতায় আসবেন।’