ভোট পুনর্গণনার দাবি স্বতন্ত্রপ্রার্থী আরিফুর রহমান দোলনের
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসনের নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে অর্ধশতাধিক ভোটকেন্দ্রে পুনর্নির্বাচন ও ভোট পুনর্গণনার দাবি জানিয়েছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্রপ্রার্থী আরিফুর রহমান দোলন। আজ বুধবার (১০ জানুয়ারি) ওই আসনে অর্ধশতাধিক কেন্দ্রের নির্বাচনি নানা অনিয়ম তুলে ধরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে এক আবেদন করেছেন তিনি। ওই আবেদনে এসব দাবি জানান এই স্বতন্ত্রপ্রার্থী।
আরিফুর রহমান দোলন দাবি বলেছেন, ফরিদপুর-১ আসনের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনি অনিয়ম, একজন বিশেষ প্রার্থীর পক্ষে নন-ভোটার দিয়ে ভোট প্রদান, অনেক কেন্দ্র থেকে ঈগল প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দেওয়া, নির্বাচনি আইন লঙ্ঘনসহ ব্যাপক জালভোট দিতে দেখা গেছে। মৃত ব্যক্তি এবং প্রবাসীদের ভোটও পড়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, বিভিন্ন কেন্দ্রে অনিয়মের বিষয়ে প্রিসাইডিং অফিসারদের জানালেও তাদের সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি জানানোর পরও প্রতিকার মেলেনি। নির্বাচন কমিশনের সচিবকে সরাসরি মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠিয়েও কোনো ফল হয়নি।
জালভোট পড়ার বিষয়ে একাধিক কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসারদের ঈগল মার্কার এজেন্ট ও কর্মী-সমর্থকেরা জানালে তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে রহস্যজনক আচরণ করেছেন বলেও দাবি করেন দোলন।
অভিযোগে আরিফুর রহমান দোলন আরও উল্লেখ করেন, ফরিদপুর-১ আসনের বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে সকাল থেকে ভোট কারচুপির উদ্দেশে একটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর সমর্থকেরা অবস্থান নেয়। কেন্দ্র এলাকায় তারা ঈগল প্রতীকের কর্মীদের মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে কেন্দ্র থেকে জোর করে তাড়িয়ে দেয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক দলের ওই প্রার্থীর লোকজন প্রিসাইডিং অফিসারসহ নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে অনেকগুলো কেন্দ্রে অবৈধভাবে প্রবেশ করে ব্যালট পেপারে ওই প্রার্থীর প্রতীকে সিল মারে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ঈগল মার্কার এজেন্টদের ভোটগ্রহণ শুরুর এক ঘণ্টা পর কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। আবার বিকেল ৪টায় ভোট শেষ হলে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের এজেন্টদের ভোট গণনার কক্ষে রেখে ঈগল প্রতীকের এজেন্টদের ওই কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়। এর আগেই ভোটের মনগড়া ফলাফল লেখা কাগজে জোর করে ঈগল প্রতীকের এজেন্টদের স্বাক্ষর রাখা হয়। সেখান থেকে ওই বিশেষ প্রার্থীর এজেন্ট ছাড়া অন্য প্রার্থীর এজেন্টদেরও বের করে দেওয়া হয়।
অভিযোগে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন চেয়েছিল একটি সুষ্ঠু ভোট করতে। নির্বাচন ঘিরে অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক এড়াতে। নির্বাচনি আইনের যথাযথ প্রয়োগের মধ্য দিয়ে প্রার্থীর অধিকার সুরক্ষায় নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করতে। তাই ফরিদপুর-১ আসনে আরও যে কেন্দ্রগুলোতে ভোট গণনায় অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে সেখানেও পুনরায় ভোট গণনার দাবি জানান দোলন।
অভিযোগে স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী দোলন আরও বলেন, ভোট শেষে রাতে ফলাফল ঘোষণার সময় ফরিদপুর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল আহসান তালুকদার নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট না বলে সরাসরি ওই প্রার্থীকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন। সে সময় বিষয়টি জানতে চাইলে সেই মুহূর্তে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা নেই বলে জানানো হয়।
দোলন অভিযোগে প্রশ্ন রাখেন, ‘প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা যদি সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে না থাকে, তাহলে ওই বিশেষ প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হলো কিসের ভিত্তিতে? তিনি বলেন, এতে বোঝা যায়, নৌকার প্রার্থী দ্বারা তিনি প্রভাবিত।’