কখনও প্রেমে পড়েননি, বিয়েও করেননি লতা মঙ্গেশকর
যাঁর সুরের মূর্ছনায় বুঁদ ছিল সংগীতপ্রেমীরা, সেই সুরসম্রাজ্ঞীর জীবনে নাকি কখনও প্রেম আসেনি। ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত ছিলেন উপমহাদেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকর।
প্রেম-বিয়ে-বিচ্ছেদ সম্পর্কিত জনপ্রিয় পোর্টাল বলিউড শাদিস ডটকম এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কিংবদন্তি লতা মঙ্গেশকর প্রধানত দুটি কারণে বিয়ে করেননি। যার একটি ছোট ভাইবোনদের শিক্ষা থেকে শুরু করে ক্যারিয়ারে জীবনের বেশি সময় অতিবাহিত করেছেন তিনি।
সেই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ক্রিকেটার এবং ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) প্রাক্তন সভাপতি রাজ সিং দুঙ্গারপুরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে লতার। কিন্তু সেই সম্পর্ক বিয়েতে গড়ায়নি লতা রাজ-পরিবারের না হওয়ায়। বিয়েতে মত দেয়নি রাজ সিং দুঙ্গারপুরের পরিবার।
তবে হিন্দুস্তান টাইমসের খবর, খালিদ মহম্মদকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মনের ঝাঁপি খুলেছিলেন লতা মঙ্গেশকর। সেখানে প্রেমে পড়া প্রসঙ্গে লতা মুচকি হেসে জানিয়েছিলেন, ‘হ্যাঁ, পড়েছি তো, তবে শুধু নিজের কাজের সঙ্গে। আর আমি ভালোবেসেছি আমার আপনজনদের, আমার পরিবারকে, আর কাউকে নয়।’
সেই সাক্ষাৎকারে বিয়ে প্রসঙ্গে লতা বলেছিলেন, ‘একমাত্র আমার মা আমার বিয়ে নিয়ে জোরাজুরি করতেন, একসময় তিনিও হাল ছেড়ে দেন। আমার কাছে আমার পরিবার বিয়ের চেয়ে বেশি জরুরি ছিল। কিন্তু এমনটা অস্বীকার করব না যে আমাকে কোনও দিন একাকিত্ব ঘিরে ধরেনি, তাহলে তো আমি মানুষই হতাম না। বিবাহিত হোন কিংবা সিঙ্গেল, একাকিত্ব সবার জীবনে আছে। কখনও কখনও এই একাকিত্ব ক্ষতিকারক হয়। তবে বলব, আমি খুবই সৌভাগ্যবান যে ভালোবাসার মানুষেরা আমার আশপাশে সব সময় থেকেছে।’
লতা মঙ্গেশকর আজ ভারতীয় সময় সকাল ৮টা ১২ মিনিটে দক্ষিণ মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ৯২ বছর বয়সে স্বজনসহ অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগীকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি।
বাংলা গানে তুমুল জনপ্রিয় লতা মঙ্গেশকর। ‘প্রেম একবার এসেছিল নীরবে’, ‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন’, ‘ও মোর ময়না গো’, ‘ও পলাশ ও শিমুল’, ‘আকাশপ্রদীপ জ্বেলে’সহ আরও অনেক বিখ্যাত বাংলা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।
১৯৪২ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে সংগীতে ক্যারিয়ার শুরু করেন লতা মঙ্গেশকর। ৭০ বছরের ক্যারিয়ারে ৩০ হাজারের বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কিংবদন্তি এ শিল্পী।