মেয়েদের জন্য নিরাপদ জায়গা নেই : সোনম
ভারতে প্রায়ই যৌন হয়রানির ঘটনার খবর শোনা যায়। এই হয়রানির বাইরে নয় দেশটির ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিও। বলিউডে প্রতিষ্ঠিত হতে এসে এসব সমস্যার মুখোমুখি হন অনেকেই। তবে খান বা কাপুর কিংবা তারকা মা-বাবার ছায়া থাকলে এ ধরনের সমস্যা খুব একটা হয় না নতুন অভিনেত্রীদের। তবে ব্যতিক্রম সোনম কাপুর। বলিউডের প্রভাবশালী অভিনেতা অনিল কাপুরের মেয়ে হয়েও তাঁকে যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল! তবে এই কলঙ্ক বলিউডকে নিতে হয়নি, কারণ ঘটনাটি ঘটেছিল ইন্ডাস্ট্রির বাইরে।
সম্প্রতি ফ্যামিনা ম্যাগাজিনের একটি সাক্ষাৎকারের বরাত দিয়ে ডিএনএ ইন্ডিয়া জানায়, সোনম কাপুর অকপটে সেখানে স্বীকার করেছেন যে, মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন। সাক্ষাৎকারে ভারতের স্কুলগুলোতে যৌন হয়রানি নিয়ে শিক্ষকদের ভূমিকারও সমালোচনা করেন তিনি।
নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সোনম কাপুর জানান, ১৩ বছর বয়সে তিনি সিনেমা হলের মধ্যে অনুভব করেন কেউ একজন তাঁর শরীরে হাত দেন। আর বিষয়টি আরো হতাশাজনক হয়ে ওঠে যখন সোনম এই বিষয়টি স্কুলের শিক্ষকদের কাছে জানান। তখন তাঁরা তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছিলেন, এটা কোনো যৌন হয়রানি না, এমন ঘটনা হারহামেশাই ঘটে থাকে।
সোনম বলেন, ‘তারকা হওয়ার আগে, সবার মাঝে আমি একজন সাধারণ সুন্দরী মেয়ে ছিলাম। আমি যখন সিনেমা হলে গিয়েছিলাম, তখন এ ঘটনা ঘটে। একজন পুরুষ আমার শরীরে হাত দিয়েছিল, যাকে আমি অন্ধকারে দেখতে পাইনি। আমি তখন মাত্র ১৩ বছর বয়সের ছিলাম এবং এ ঘটনার পর সিনেমা হলে যতক্ষণ ছিলাম, ততক্ষণ খুবই অস্বস্তির মধ্যে ছিলাম। আমার মনে আছে, আমি আমার শিক্ষক ও স্কুলের উপদেষ্টার কাছে গিয়েছিলাম এবং ঘটনাটি খুলে বলেছিলাম। তাঁরা বলেছিলেন, সবাই এ সমস্যার মুখোমুখি হন এবং এটা কোনো যৌন হয়রানি না। তাঁদের ধারণা, শুধু ধর্ষণই যৌন নিপীড়ন। অথচ আমি মাত্র ১৩ বছর বয়সেই জানতে পেরেছিলাম, কেউ যদি আপনার শরীরে বা বুকে হাত দেয়, তাহলে সেটাই যৌন নিপীড়ন। এই বিষয়টি মোকাবিলা করার জন্য আমি আমার মাকে সবকিছু বলেছিলাম।’
স্কুলে যৌনবিষয়ক শিক্ষার বিষয়ে সোনম বলেন, ‘আমাদের স্কুলের সচেতনতা বিষয়ক শিক্ষার মান খুবই নিম্ন। এখানে কোনো যৌনবিষয়ক শিক্ষা নেই এবং শিক্ষকরা এ ধরনের ঘটনা সামলানোর জন্য পরিপক্ব নন। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা খুব একটা ভালো না। মেয়েরা এখানে বিষণ্ণতায় ভোগে। তারা নিজেদের দোষারোপ করে এবং এটা তাদের জন্য ভয়ংকর একটা স্থানে পরিণত হয়। এটা সবার জন্য জানা খুবই জরুরি যে, ভারত বা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশেই মেয়েদের জন্য কোনো নিরাপদ জায়গা নেই। নাইটক্লাব বা ভিড়ের মধ্যে যে কেউ আপনার শরীরে হাত দিতে পারে এবং আপনাকে বুঝতে হবে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এটাই যৌন নিপীড়ন।’