আমি বিবাহবিচ্ছেদ করতে চলেছি : মিলা
দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মিলা বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে মিলা তাঁর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে দীর্ঘ একটা স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
মিলা লেখেছেন, ‘হ্যাঁ, আমি বিবাহবিচ্ছেদ করতে চলেছি। ১০ বছর প্রেমের সম্পর্ক থাকার পর আমরা বিয়ে করেছিলাম কিন্তু বিয়ের ১৩ দিন পর আমি জানতে পেয়েছি তাঁর একটা নয় একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। যখন আমরা একসঙ্গে ঘুরে বেড়াতাম তখন সে নিয়মিত আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে এবং সে বিয়ের পরও প্রতারণা করেছে। অসংখ্য মেয়ের সাথে সে সম্পর্কে জড়িয়ে আছে।’
মিলা তাঁর স্বামীর সঙ্গে আর থাকতে চাচ্ছেন না। এ বিষয়ে তাঁর মন্তব্য হলো, ‘দীর্ঘ সম্পর্ক থাকার পরও যে এমনটা করে তাঁর সঙ্গে আমি থাকতে পারব না। সততা ছাড়া জীবনের মানে নেই। যে তাঁর নববধূর সাথে এমনটা করতে পারে! কেউই এমন ব্যক্তিকে প্রত্যাশা করে না । আমি এটা শিল্পী কিংবা সেলিব্রেটি হিসেবে বলছি না। প্রত্যেকের তাঁর স্ত্রীর প্রতি সম্মানবোধ ও ভদ্রতা বজায় রাখা প্রয়োজন।’
মিলা আরো যোগ করে বলেন, ‘আমি মানুষ হয়ে এটা মানতে পারছি না। কেউই পারবে না। কোনো পুরুষ চাইবে না যে তাঁর স্ত্রীর অন্য কারো সঙ্গে সম্পর্ক থাকুক আর কোনো নারীর জীবনে এমনটা ঘটলেও সেটা তাঁর মেনে নেওয়া ঠিক হবে না।’
মিলা তাঁর সংগীতজীবন ও ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি আমার কাজ ও সংগীত ভালোবেসে জীবনযাপন করতে চেয়েছি।আমার জীবনে সবচেয়ে বড় অর্জন হলো, আমার ভক্ত ও দর্শকের ভালোবাসা। অনেক বছর পরও তাঁরা আমাকে ভুলে যাবে না। ১০ বছর প্রেমের সম্পর্কের পর জীবনসঙ্গীকে আমি পছন্দ করেছিলাম কিন্তু আমি তাঁর প্রতারণার প্রমাণ পেয়েছি। তারপরও আমি বিয়ে টিকে রাখার অনেক চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সে আমার সঙ্গে অতিরিক্ত অশালীন আচরণ শুরু করেছিল এবং বিয়ে মানতে পারছিল না। নিজে থেকে অনেক চেষ্টা করেছি আমি। পরবর্তী সময়ে আমি এসব বিষয় নিয়ে ইউএস বাংলার এয়ারলাইনের এমডি এম আর মামুনের সঙ্গে কথা বলি এবং তাঁকে জানাই আমার সাথে কী হচ্ছে। এটা তাঁকে বলেছি কারণ তিনি আমার স্বামীকে বুঝাতে পারবেন যে আমাদের সামাজিক মর্যাদা আছে এবং এটা লজ্জাজনক কিছু ঘটনার কারণে নষ্ট করার মানে হয় না। এমডি আমাকে বলেছিলেন, তিনি আমার স্বামীর সঙ্গে কথা বলবেন এবং যে বিমানবালার সঙ্গে আমার স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক আছে তাঁর নাম জানতে চাইবেন। তিনি আমাকে ধৈর্য ধরতে বলেছিলেন। আমি সেটা করেছিও কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হয়নি।’
মিলা তাঁর স্বামীর কাছ থেকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন বলেও জানান। তিনি বলেন, ‘শুধু তাঁর কাছ থেকে মানসিক নির্যাতনের স্বীকার হয়েছি তা কিন্তু নয়, আমি একই সাথে শারীরিক নির্যাতনেরও স্বীকার হয়েছি এবং অবশেষে আমি উপলব্ধি করেছি আমার এভাবে নির্যাতনের স্বীকার হয়ে থাকার মানে হয় না। যেখানে অনেক তরুণী আমাকে তাঁদের রোল মডেল চিন্তা করেন। নিজের ভাগ্য আমার হাতে নেওয়া দরকার ছিল এবং আমি এই দুঃস্থ অবস্থা থেকে বেরিয়েও এসেছি। আমি আমার পরিবারের কাছে সাহায্য চেয়েছি এবং তারা আমাকে উত্তরা থানায় নিয়ে যায় যেখানে আমি ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০’ অধীনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করি। এরপর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।’
মিলা বলেন, কোনো নারী ও পুরুষের এভাবে একসঙ্গে থাকা উচিত নয়, এটা কোনো ব্যাপার নয় যে তাঁদের সামাজিক অবস্থান কোন জায়গায় রয়েছে।
এরপর মিলা তাঁর পরিবার, ভক্ত এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের তাঁকে সমর্থন ও ভালোবাসা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান।
চলতি বছরের ১২ মে মিলা ও পারভেজ সানজারির বিয়ে হয়। পারভেজ সানজারি একটি বেসরকারি বিমান সংস্থার পাইলট।