অভিনয় ভেতর থেকে আসে: রাজ চক্রবর্তী
জাতীয় পুরস্কারের তোয়াক্কা করেন না তিনি। সবসময়ই সাড়া জাগানো ছবি বানিয়ে ক্রমাগত চমক দিয়ে এসেছেন টলিউডকে। তা সে প্রেমের ছবি হোক কিংবা অন্য ডায়মেনশনের ছবিই হোক। তিনি পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। তাঁর অধিকাংশ ছবিই বাণিজ্যিকভাবে সফল। প্রায় এক বছর পর ফের প্রেমের ছবি ‘পারবো না আমি ছাড়তে তোকে’ নিয়ে টলিউডে ফিরছেন রাজ। ব্যস্ত শিডিউলে তাঁকে ধরার জন্য বেশ কয়েকদিন হাঁটাহাঁটি করতে হলো টলিপাড়ায়। তবুও ভাগ্য সুপ্রসন্ন হল না। অবশেষে খবর ৩৬৫ দিনের সহায়তায় এনটিভি অনলাইনের কাছে ধরা দিলেন টলিউডের রাজ। বললেন, এক বছর পর আমার ছবি মুক্তি পেতে চলেছে। গত বছর ‘বরবাদ’আর ‘যোদ্ধা’ মুক্তি পেয়েছিল। তারপর দীর্ঘ সময় ব্যবধানে মুক্তি পেতে চলেছে আবার একটা ছবি। এবারে রাজের ‘পারবো না আমি ছাড়তে তোকে’ ছবিতে অভিনয় করেছেন নবাগতা কৌশানী।
নতুনদের নিয়ে কাজ করা প্রসঙ্গে রাজের সাফ উত্তর, আমি নতুন পুরনো মিলিয়ে সবার সঙ্গে কাজ করি। এই ছবিতে কৌশানীর বিপরীতে বনি সেনগুপ্ত কাজ করেছে। বনি কিন্ত আমার কাছে আর নতুন নয়, পুরনো হয়ে গেছে। এখন যারা নতুন, একদিন তো তারাই পুরনো হয়ে যাবে। আমি মনে করি, যেসব ছেলেমেয়ে সিনেমায় আসে, তাদের ফিল্ম স্কুলের সার্টিফিকেটের থেকেও থিয়েটারের ব্যাকগ্রাউন্ড থাকাটা বেশি দরকার। আসলে অভিনয়টা জানা থাকলে বাকি কাজগুলো অনেক সহজ হয়ে যায়। আমি তো আমার সব ছবির আগেই সবাইকে নিয়ে একটা ওয়ার্কশপ করাই। ওই ওয়ার্কশপেই বুঝতে পারা যায়, কাকে দিয়ে হবে, আর কাকে দিয়ে হবে না। অভিনয়টা কিন্ত কাউকে শেখানো যায় না, অভিনয় ভেতর থেকে আসে। এটা মনে রাখতে হবে- ঠিকঠাক ড্রাইভ দিতে পারলে গাড়ি ছুটবেই। কিছুটা থেমে রাজ আবার বললেন, আসলে আমি একটু সেলফিশ আছি। আমি যদি কোনো ছেলেমেয়েকে হাতে ধরে তৈরি করি, আমি চাই সে আমার সঙ্গে একটু বেশি কাজ করুক। অন্য পরিচালকের আগে আমার সঙ্গে কাজ করুক। বলতে পারেন, এটাই আমার ঈর্ষা। আমি যার খারাপ-ভালো সব জানি, আমি তাকে যেভাবে উপস্থাপন করব, অন্য পরিচালকরা তা করবে না। আর সব থেকে বড় কথা হলো, আমি তার অভিনয় সত্ত্বাকে একেবারে নিংড়ে নিতে চাই। অন্য পরিচালকরা যেন পরে ছিবড়েটা পায়।
নিজে যথেষ্ট ভালো অভিনয় জানেন, তবুও পর্দায় দেখা যায় না কেন আপনাকে? উত্তরে হেসে রাজ বললেন, সত্যি কথা হলো, আমি অভিনয়টা করতে পছন্দ করি না। আর ক্যামেরার সামনে আমি স্বচ্ছন্দও বোধ করি না। তবে এটা ঠিক, একসময় আমি কলকাতায় এসেছিলাম অভিনয় করতেই। আমার ব্যাকগ্রাউন্ডও ছিল থিয়েটার। কিন্ত এখন মনে হয়, ছবি পরিচালনাই আমার পরিচয়।
জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার ইচ্ছে করে না? উত্তরে রাজ জানালেন, জাতীয় পুরস্কারের ভাবনাটা আমার মাথায় কখনো আসে না। আমার কাছে বক্স অফিসটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সবশেষে রাজের মুক্তি পেতে চলা ‘পারবো না আমি ছাড়তে তোকে’ছবি নিয়ে বললেন, এই ছবি শুধু প্রেমের ছবিই নয়, এর মধ্যে অ্যাকশনও আছে। বরং এটাকে অ্যাকশন লাভ স্টোরি বলাই ভালো। আগে আমি যখন ছবি বানিয়েছি, তখন সেই সমস্ত ছবি, সেই সময়ের মতো করেই করা হয়েছিল।
আর এই ছবি কিন্ত একেবারেই এই সময়ের মতো ছবি। এই ছবিতে প্রেমের সব রকমের ফ্লেবারও দর্শকরা পাবেন।