ফিল্ম রিভিউ
জিরো টলারেন্স
অনিমেষ আইচ টেলিভিশনে বিচিত্র নাটক নির্মাণ করে পরিচিতি পেয়েছেন, এরপর নির্মাণ করেছেন চলচ্চিত্র ‘জিরো ডিগ্রি’। আর এ রকম প্রেক্ষাপট থেকে যাঁরাই চলচ্চিত্রে নির্মাণ করতে এসেছেন, তাঁদের অনেকের চলচ্চিত্রকে দর্শক প্রত্যাখ্যান করে এই অভিযোগ এনে যে, সেগুলো দেখতে নাটক নাটক লাগে। দর্শকের দিক থেকে চলচ্চিত্র সম্পর্কে এ রকম একটি ধারণা থাকে যে, চলচ্চিত্র মানেই তাতে ঘটনার ঘনঘটা থাকতে হবে। চলচ্চিত্রে থাকবে গতিময়তা, থাকবে থ্রিল, কাহিনীতে থাকবে অনেক উত্থান-পতন। অবশ্য পৃথিবীর বহু বিখ্যাত চলচ্চিত্রই আছে যাতে ঘটনার ঘনঘটা নেই, নেই নাটকীয়তা, এমনকি নেই দৃশ্যগত মহাসৌন্দর্য। বরং অনানুষ্ঠানিক ভঙ্গি এবং অগভীর দৃষ্টিক্ষেত্র নন্দনতাত্ত্বিক ও শৈল্পিক রসটুকুও যেন নিংড়ে বাতিল করে দেয়। সামিরা মাখমালবাফের ‘দি অ্যাপেল’ কিংবা আব্বাস কিয়ারোস্তামির ‘ক্লোজ আপ’ তেমনই চলচ্চিত্র। বক্তব্য এবং কাহিনী বর্ণনে বাস্তবধর্মিতাই সেসব চলচ্চিত্রের প্রধান অবলম্বন হয়ে ওঠে। সত্যজিৎ রায়ের অনেক চলচ্চিত্রকেই সেক্ষেত্রে আমাদের নাটক বলতে হবে।
সে যাই হোক, জিরো ডিগ্রিকে কিন্তু কেউ আর নাটক বলছে না। বরং এই সাইকোথ্রিলার চলচ্চিত্র রীতিমতো মারমার কাটকাট ঘটনাবলীতে পূর্ণ। দর্শক তাহলে এক কাম্য চলচ্চিত্রই পেলেন। অন্তত বাংলাদেশের দর্শকদের বিবেচনায় কাম্য চলচ্চিত্রের সম্ভাবনা জিরো ডিগ্রি। তবে থ্রিলের ডোজ একটু বেশিই বোধহয় পড়ে গেছে। জিরো ডিগ্রি দেখে ‘চলচ্চিত্রের নামে নাটক দেখতে না চাওয়া’ দর্শকের মনেও অবসাদ জমতে পারে, বিবমিষা জাগলেও অবাক হওয়া যাবে না। একটা ক্লিষ্ট-ক্ষীণ নেতির অনুভূতি নিয়েই প্রেক্ষাগৃহ থেকে দর্শককে বেরুতে হয়েছে। প্রধান সব চরিত্রই যে মারা গেল! মাস্টার অব থ্রিলের মহানির্মাতা আলফ্রেড হিচককের চলচ্চিত্রে সাধারণত একটি মাত্র খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরাট সাসপেন্স তৈরি করা হয়। আর এখানে এতগুলো খুন!
আমার মনে হয় বুদ্ধিমান নির্মাতা অনিমেষ আইচ ঝুঁকি নিতে চাননি। চলচ্চিত্রের নামে নাটক বানানোর অপবাদ থেকে তিনি মুক্ত থাকতে চেয়েছেন। আর প্রেক্ষাগৃহবিমুখ দর্শককে প্রেক্ষাগৃহে ফেরাতে ভদ্র আহ্বান জানানোর চাইতে গগনবিদারী হাঁক দিতে চেয়েছেন। তাইতো চিত্রনাট্যে এত বিনাশের ব্যবস্থা। তিনি অনেকখানি সফল বলতে হবে। কারণ অন্য দশটা চলচ্চিত্রের মতো জিরো ডিগ্রি ব্যবসায়িকভাবে ব্যর্থ নয়।
অমিত (মাহফুজ আহমেদ) তার স্ত্রী নীরা (রুহি) ও ছেলে সন্তানকে নিয়ে সুখেই বসবাস করছিল। অমিত প্রকৌশলী, নীরাও বড় চাকরি করে। মাঝে মাঝে নীরার অফিস ট্যুর থাকে দেশের বাইরে। একবার নীরা সিঙ্গাপুরে যায়, কিন্তু এই দফা সে অমিতের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। অমিত নীরার অফিস থেকে জানতে পারে সে ছুটি নিয়েছে, অফিশিয়াল ট্যুরে যায়নি। হতভম্ব অমিত ছেলেকে নিয়ে বিপাকে পড়ে। একদিন নীরা ফোন করে সিঙ্গাপুর থেকে, জানায় সে আর ফিরবে না অমিতের কাছে। আরেকজনের সঙ্গে সেই দেশে বসবাস করা শুরু করেছে সে। বিপর্যস্ত অমিতের জন্য দ্রুতই আরেকটি আঘাত আসে, সড়ক দুর্ঘটনায় ছেলের মৃত্যু হয়। বড় বড় এই দুই আঘাতে অমিত বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ে। আশ্রয় হয় পাগলাগারদে।
সোনিয়ার (জয়া আহসান) গল্পটি আলাদা। গ্রামের মেয়ে সোনিয়ার ছিল চরিত্রহীন-খামখেয়ালী সামন্ত পিতা। অনেক বিয়ে, অনেক মেয়ে নিয়ে মেতে থাকা বাবা সোনিয়ার সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করে। সৎ মা তাকে নরকপুরী থেকে দূরে, ঢাকায় এক আত্মীয়র বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু ততোধিক বৃহৎ নরকে এসে পড়ে সে। কর্মস্থল, নৃত্যগুরু সবার কাছ থেকে সে লাঞ্ছিত হয় অথবা ধর্ষিত হয়। আত্মহত্যার জন্য ট্রেনের সামনে দাঁড়ালে তাকে উদ্ধার করে এক কবি। কবি তাকে যত্ন করে, ভালোবাসে। কবিকে সে ভালোবাসেও, জীবনের নতুন মানে সে খুঁজে পায়। তাকে ঘিরে জীবনের স্বপ্ন আঁকে সে। কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রতারণা করে কবিই। একদল লোকের কাছে বিক্রি করে দেয় তাকে। আবার সেই একই অভিজ্ঞতা– যৌন হয়রানি। সোনিয়ারও আশ্রয় হয় পাগলাগারদে।
প্রায় একই সময়ে পাগলাগারদ থেকে বের হয় অমিত ও সোনিয়া। অমিত নীরাকে হত্যা করে প্রতিশোধ নিতে চায়। প্রস্তুতি হিসেবে সে নীরা নামের এক সন্তানের জননীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং তাকে হত্যা করে। এরপর নীরার খোঁজে সিঙ্গাপুরে যায়। তার সঙ্গে দেখাও হয়, কিন্তু ভিনদেশে প্রতিশোধ ছাড়াই ফিরে আসে। এদিকে সোনিয়া, তার সঙ্গে যারা প্রতারণা করেছে, তাদের একের পর এক হত্যা করতে থাকে। নৃত্যগুরু, অন্যান্য ধর্ষকদের হত্যা করার পর সে খুঁজে পায় ভণ্ড কবিকেও। বাজারের মধ্যে হাজারো মানুষের সামনে সে হত্যা করে কবিকে। সোনিয়া যখন আত্মসমর্পনের জন্য প্রস্তুত তখনই এক বাইকধারী ঘটনাস্থল থেকে সোনিয়াকে উঠিয়ে নিয়ে যায় তার আস্তানায়। সেই বাইকধারী আর কেউ নয়, অমিত। এদিকে নীরা ও তার মিউজিশিয়ান বয়ফ্রেন্ডের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে, নীরা ফিরে আসতে চায় অমিতের কাছে। বয়ফ্রেন্ড তাতে বাধা দিয়ে আক্রমণ করতে গেলে, উল্টো নীরাই আত্মরক্ষার বরাতে হত্যা করে বয়ফ্রেন্ডকে। বাংলাদেশে পালিয়ে এসে সে অমিতের আস্তানায় হাজির হয়। গোয়েন্দা পুলিশ সক্রিয় হয়ে সব ঘটনার কার্যকারণ খুঁজে পেয়ে অমিতের আস্তানায় হাজির হয়। তার আগেই অমিত নীরা ও সোনিয়াকে গুলি করে হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যা করে। তবে এটা মূলত ছিল যৌথ আত্মহত্যা, কারণ তিনজনই ওই মুহূর্তে নিজ নিজ মৃত্যু কামনা করছিল।
জিরো ডিগ্রি আমাদের কী বার্তা দেয়? নারী-পুরুষের সম্পর্ক কেবলই ভাঙছে, কেবলই প্রতারণার জাল চারদিকে। প্রতারিত নারী বা পুরুষের শেষ আশ্রয় হবে মানসিক চিকিৎসালয়ে। সে সুস্থ হবে, কিন্তু তা কেবলই প্রতিশোধে উন্মত্ত হওয়ার জন্য। হ্যাঁ, এ কথা ঠিক, পরিবর্তিত সময়ে, নগরায়ণভিত্তিক আধুনিকতায় নারী-পুরুষের সম্পর্ক আর একরৈখিক নেই। প্রেম-ভালোবাসা আর বৈবাহিক সম্পর্কের ধারণায়ও পরিবর্তন এসেছে। বিশেষত সনাতন সমাজব্যবস্থায় বিয়ের সম্পর্কগুলো টিকে যেত, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারীর ত্যাগের মধ্য দিয়ে। কিন্তু বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে নারীর অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কেও পরিবর্তন এসেছে। নারী বহির্জগতের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে; ভুল হোক, স্খলন হোক সেও নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছে। এই সুযোগ কেবল পুরুষের জন্য এত দিন একতরফা ছিল। সোনিয়ার বাবার চরিত্রটি তার উদাহরণ। অন্যদিকে নারীর প্রতি সহিংসতা থেমে নেই, তার অসহায়ত্বের সুযোগ নেওয়ার জন্য খাদকরূপী পুরুষতন্ত্রের প্রতিনিধিরা সর্বত্র রয়েছে। সোনিয়া বহু পুরুষ দ্বারা নির্যাতিত।
কিন্তু এটাই কি সমাজের একমাত্র চিত্র? শুভবোধের অস্তিত্বও সমাজে আছে। কমবেশি ত্যাগের মধ্য দিয়ে সন্তান-পরিবার-আত্মীয় মিলে সুস্থ সামাজিক জীবনযাপন করছে নারী ও পুরুষ উভয়েই। সমাজে ঘৃণার অস্তিত্ব যেমন আছে– সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আঁক-কষা হিসেবি হোক, আর প্রেমময় অবগাহন হোক– সম্পর্কের উদযাপনও আছে। জিরো ডিগ্রিতে সেই দিকটিকে অস্বীকার বা উপেক্ষা করা হয়েছে। এমন নয় যে, ভাঙনের বিপরীতে গড়ার বিষয়টিকে জয়ী দেখাতেই হবে এবং এভাবে চলচ্চিত্রকারকে সমাজের নৈতিকতার পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে, কিন্তু সম্পর্কের উদযাপনকে সমাজের একটি বাস্তবতা হিসেবে সমান্তরালে হাজির রাখা দরকার ছিল। তবে এ কথা মানতেই হবে, জিরো ডিগ্রি একটা বিষয়ে ঢাকার চলচ্চিত্রে নতুনত্ব এনেছে। সেটা হলো কাহিনী শুরুই হয়েছে বিয়ের পরে, যে ক্ষেত্রে ঢাকাই চলচ্চিত্র, এমনকি বলিউডের বেশিরভাগ চলচ্চিত্র শেষ হয় প্রধান দুই চরিত্রের বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে। মোটের ওপর, দক্ষিণ এশীয় চলচ্চিত্র নাবালকদের কাহিনী মূলত, যেন বিয়ের পরে চরিত্রগুলোর মৃত্যু ঘটে, তাদের জীবনে আর কিছু ঘটে না। জিরো ডিগ্রি সেই হিসেবে সাবালক চলচ্চিত্র।
জিরো ডিগ্রির বর্ণনশৈলীও অপ্রথাগত, অন্তত ঢাকার মূলধারার চলচ্চিত্রের বিচারে এ কথা বলা যায়। প্রথমে অমিতের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। এরপর সোনিয়ার কাহিনী। এই দুই কাহিনী সমান্তরালে না বলে, আলাদা আলাদাভাবে বলা হয়েছে। অমিতের কাহিনীর মধ্যে আবার সিঙ্গাপুরে নীরার উপকাহিনী রয়েছে। চলচ্চিত্রের তৃতীয় ভাগে সোনিয়া আর অমিতের হঠাৎ সাক্ষাৎ হয়। অনেকটা কুয়েন্তিন তারান্তিনোর বর্ণনকাঠামো যেন। কিন্তু তারান্তিনোর চলচ্চিত্রে ব্যাপারটা যেমন স্পষ্ট ও পরিচ্ছন্ন থাকে, জিরো ডিগ্রিতে তেমনটা গোছানো নেই। সোনিয়ার চরিত্রটি নির্মাণ করতে গিয়ে বহু উপঘটনাকে হাজির করা হয়েছে। এর সংখ্যা এত বেশি যে, গল্পটার বুনন দানা বাঁধেনি। যেমন, সে ক্লিনিকে কাজ নেয়, একটা অফিসে চাকরি নেয়, নৃত্যগুরুর কাছে তামিল নিতে যায়, ভুয়া কবির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠে, তাকে দালালচক্রের হাতে বিক্রি করে দেওয়া হয় – প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই সে লাঞ্ছিত বা ধর্ষিত হয়। এতগুলো ঘটনার প্রাচুর্য না দেখিয়ে, সংখ্যাটি কমিয়ে ঘটনার খুঁটিনাটির দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত ছিল। যেমন, সে এক অফিসে চাকরি পেল, পরের দৃশ্যেই দেখা যায় তার বস তাকে লাঞ্ছনা করছে। ডিটেইলের সমস্যার কারণে সোনিয়ার গল্পটি দুর্বল লাগে। অমিতের গল্পটি সে তুলনায় ভালো। তবে ডিটেইলের সমস্যা অমিত-নীরার সন্তান চরিত্রটিকে ঘিরেও ছিল। নীরা চলে যাওয়ার অল্প কিছু পরই ছেলের অপমৃত্যু ঘটে। এতে আমাদের মনে হয়, কাহিনীকার বিপদগ্রস্ত, গল্পটাকে ঠিকমতো সামলাতে পারছেন না। অমিতকে পাগলাগারদে পাঠাতে হবে, তাই এই সড়ক দুর্ঘটনার ব্যবস্থা। এ ক্ষেত্রে আরেকটু কালক্ষেপণ প্রয়োজনীয় ছিল। অন্যদিকে গোয়েন্দা পুলিশের তৎপরতা কাহিনীতে কোনো অবদান রাখেনি। তারা কেবল গবেষণা করে বের করে কে কী ঘটাচ্ছে, কার হাতে কে খুন হচ্ছে। তারা অমিত-সোনিয়া-নীরাকে ধরতে অমিতের আস্তানায় হাজির হয়, কিন্তু তার আগেই তারা স্বেচ্ছামৃত্যুর ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে। অথচ তাদের গবেষণা ও গোয়েন্দাগিরি দর্শকদেরও কোনো নতুন তথ্য দিতে পারেনি, কারণ তারা তাদের উর্বর মস্তিষ্ক ব্যয় করে যে তথ্যগুলো বের করে আনে, তা দর্শক ইতিমধ্যেই জেনে বসে আছে। এভাবে পুলিশি তৎপরতার অংশটুকু অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে, কাহিনীতে তা আলগা গল্প হিসেবেই থেকে যায়। আবার অমিত ও সোনিয়ার কণ্ঠে ভয়েস ওভার ন্যারেশন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু একটা বিষয় স্পষ্ট নয় যে, এই ন্যারেশন ঠিক কোন সময় দেওয়া হচ্ছে? কারণ এই দুটি চরিত্রেরই মৃত্যু ঘটেছে, শেষ দৃশ্যে। পদ্ধতি হিসেবে এই ন্যারেশন তাহলে কি বিশ্বাসযোগ্য থাকছে?
অভিনয় এই চলচ্চিত্রের সম্পদই বলতে হবে। অমিতের চরিত্রে মাহফুজ আহমেদ ছিলেন লাগসই। সুঅভিনেতা মাহফুজ টেলিভশনে বহু চরিত্রে সুনামের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। কিন্তু চলচ্চিত্রে তিনি নিয়মিত নন। তৌকির আহমেদের ‘জয়যাত্রা’র মূল চরিত্রে এবং নার্গিস আখতারের ‘চার সতীনের ঘর’ চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়সূত্রে তার সুনাম তিনি রক্ষা করেছিলেন। জিরো ডিগ্রির অন্যতম প্রযোজকও তিনি। জিরো ডিগ্রি অনেকখানি মাহফুজময়। আর সোনিয়া চরিত্রে জয়া আহসানও যথারীতি দারুণ অভিনয় করেছেন। নতুন অভিনেত্রী হিসেবে নীরা চরিত্রে রুহিও খারাপ অভিনয় করেননি। কবির চরিত্রে মীর রাব্বিও যথাযথ অভিনয় করেছেন। শেষ বয়সে টেলিসামাদও দারুণ এক অভিনয় দেখিয়ে দিলেন, নৃত্যগুরু চরিত্রে। বলা যায়, অভিনয় বিভাগে জিরো ডিগ্রি সফল। থ্রিলার চলচ্চিত্রে আবহসংগীত খুব গুরুত্বপূর্ণ, সেই দায়িত্ব সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য জেমসের অবদানকেও স্বীকার করতে হবে। নাটকীয় আবহসংগীত চলচ্চিত্রটিকে সমৃদ্ধ করেছে। দুটি রবীন্দ্রসংগীতের ফিউশন তরুণ দর্শক-শ্রোতা পছন্দ করবে।
বর্তমান প্রজন্মের দর্শকদের আকৃষ্ট করতে অনিমেষ আইচ ও মাহফুজ আহমেদ অনেক ভেবেছেন বোঝা যায়। প্রজন্মের অন্যতম আগ্রহের অনুষঙ্গ ক্রিকেট, ব্যান্ড মিউজিক আর লালনের দর্শনকেও তারা ছুঁয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এসব উদ্যোগ বৃথা যায়নি। মন্দার বাজারে তাদের চলচ্চিত্র বেশ বাণিজ্যিক সফলতা পেয়েছে বলা যায়। তাদের অভিনন্দন। কিন্তু তাদের পরবর্তী প্রকল্পটি আরো অর্থপূর্ণ হয়ে উঠবে, এ রকম প্রত্যাশা রেখে গেলাম।
২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫