আমজাদ হোসেনের শারীরিক অবস্থার অবনতি
দেশবরেণ্য অভিনেতা ও নির্মাতা আমজাদ হোসেনের শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত রোববার থেকেই আমজাদ হোসেন তেজগাঁওয়ের ইমপালস্ হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রয়েছেন।
গতকাল সোমবার মেডিকেল বোর্ডের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন জানিয়েছেন, আমজাদ হোসেনের অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাঁকে দ্রুত দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
বদিউল আলম খোকন বলেন, ‘আমজাদ ভাইয়ের জন্য মেডিকেল বোর্ড বসেছিল। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, তাঁর শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে। প্রথম ৩৭ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণ শেষ হয়েছে গতকাল। এর পর থেকে আরো ৪৮ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে নিয়েছেন তাঁরা। তবে ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়েছেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি, কারণ দেশের বাইরে নেওয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন।’
সবার কাছে দোয়া চেয়ে খোকন বলেন, ‘আমজাদ ভাই আমাদের চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব। শুধু তাই নয়, চলচ্চিত্রের প্রতিটি জায়গায় তিনি নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। আমরা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির উদ্যোগে সকাল থেকে কোরআন খতম পড়াচ্ছি। আজ বাদ জোহর এফডিসিতে মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার ব্যবস্থা করেছি।’
গত রোববার সকাল ৯টার দিকে আমজাদ হোসেনের স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার তাঁকে (আমজাদ হোসেন) বিছানার নিচে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। কখন তিনি অচেতন হয়েছেন, তা আঁচ করতে পারেননি তিনি। এরপর সকাল ১০টার দিকে তাঁকে ইমপালস্ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আমজাদ হোসেন অভিনেতা, পরিচালক হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। ১৯৬১ সালে ‘হারানো দিন’ চলচ্চিত্রে অভিনয় দিয়ে চলচ্চিত্র শুরু করেন তিনি। পরে চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনায় শুরু করেন।
প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ছবিটি পরিচালনা করেন ১৯৬৭ সালে। পরিচালক হিসেবে ‘নয়নমনি’ (১৯৭৬), গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৮), ভাত দে (১৯৮৪) তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র।
‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও অর্জন করেন। সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক (১৯৯৩) ও স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।
এ ছাড়া সাহিত্য রচনার জন্য তিনি ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দুবার অগ্রণী শিশু সাহিত্য পুরস্কার ও ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।