এখনো ক্লান্ত নন রজনীকান্ত
তাঁকে নিয়ে ভক্তদের উচ্ছাসের শেষ নেই। বছরের পর বছর ভক্তরা পূজা পর্যন্ত করেছেন রজনীর! কিছুদিন আগে মুক্তি পাওয়া তাঁর ছবি ‘লিঙ্গা’ দেখতে গিয়ে প্রাণ পর্যন্ত হারিয়েছেন এক অন্ধভক্ত। কিডনির জটিল সমস্যা নিয়েও রাজেন্দ্রন নামের এই ভক্তটি দেখতে গিয়েছিলেন ‘লিঙ্গা’, যদিও তার সামান্যতম নড়াচড়ার ক্ষেত্রেও কড়া নিষেধাজ্ঞা ছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। লেট নাইট শো দেখার জন্য হাসপাতালের স্টাফকে ফাঁকি দিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন রজনীর ছবি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সিনেমাহলেই প্রাণ হারান তিনি। রজনীকান্তের জন্য ভক্তদের উন্মাদনার গল্প রয়েছে আরো অজস্র।এই ভালোবাসার প্রতিদান দিয়ে আজও অক্লান্তভাবে অভিনয় করে চলছেন দক্ষিণের ঈশ্বরতুল্য এই চির নবীণ অভিনেতা। টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে তাঁর বিচিত্র সব আখ্যান নিয়েই এ আয়োজন।
১. রজনীকান্ত কখনোই তার নিজের ছবির পাবলিক স্ক্রিনিংয়ে উপস্থিত হন না। নিজের প্রতিটি ছবিকেই খুবই গুরুত্ব দেন রজনী। প্রতিটি ছবির কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিশ্রাম নেওয়ার জন্য চেন্নাই চলে যান এবং হিমালয় থেকেও একটু ঘুরে আসেন।
২. অজস্র পুরস্কার পেয়েছেন এই অভিনেতা, বেশির ভাগই তামিল ছবির জন্য। সব তারকার সাথেই রয়েছে তাঁর দারুণ সদ্ভাব। সালমান, শাহরুখের মতো সুপারস্টাররাও তাঁকে অনুসরণ করেন। ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ ছবির জনপ্রিয় আইটেম গান ‘লুঙ্গি ড্যান্স’ দিয়ে মহাতারকা রজনীকান্তের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন শাহরুখ।
৩. তাঁর জন্য দেশজুড়ে ভক্তদের ভালোবাসা আর পাগলামি যে কতটা বেহিসেবী, সে কথা বলাই বাহুল্য। তবে তা সত্ত্বেও সাধারণভাবে চলাফেরাকেই বেছে নিয়েছেন রজনীকান্ত। ২২ বছর আগে তাঁর জন্মদিনের উৎসব থেকে ফেরার পথে তিনজন ভক্ত দুর্ঘটনায় মারা যান। সেই থেকে আজ অবধি তিনি জন্মদিন পালন করেন শহরের বাইরে।
৪.রজনীকান্ত যাই করেন- তাই দারুণ জনপ্রিয়তা পায়, বিখ্যাত হয়। শাহরুখের মতো সুপারস্টারও তাঁকে নিজের ছবিতে ছোট্ট একটা রোল করার জন্য অনুরোধ না করে পারেন না! তিনি ভারতে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতা এবং পুরো এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন। এশিয়ায় প্রথম স্থানটি জ্যাকি চ্যানের।
৫. রজনীকান্ত জীবনের প্রথমভাগে ছিলেন বাসচালকের সহকারী! সেখান থেকে তিনি মাদ্রাজ ফিল্ম ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। এমন সিদ্ধান্তে তাঁর পরিবারের সায় ছিল না মোটেও। সেসব কঠিন দিনে তিনি সাহায্য পেয়েছেন বন্ধু রাজ বাহাদুরের কাছ থেকে। এক মঞ্চনাটকে কাজ করতে গিয়ে তিনি তামিল ছবির পরিচালক কে বালাচন্দরের নজরে আসেন। সেই থেকে শুরু।
৬. টুইটার অ্যাকাউন্ট খোলার প্রথম দিনেই রজনীকান্তের ‘ফলোয়ার’ হয়েছিল কতজন জানেন? আড়াই লাখেরও বেশি!
৭. রজনীকান্তের ভক্তদের বিশ্বাস, বড়পর্দায় রজনী করতে পারেন না-এমন কোনো কাজ নেই। এমন কি, বহু বছর ধরে রজনীকান্তের অভিনীত কোনো চরিত্র পর্দায় মারা যায়নি! পরিচালকদের আতঙ্ক এই থাকে যে, রজনীর চরিত্রকে মেরে ফেলা হলে দাঙ্গা লেগে যেতে পারে!
৮. একইসাথে সাদাকালো, রঙিন, ত্রিমাত্রিক, মোশন পিকচার- এই সব ধরনের ফরমেটে কাজ করা প্রথম ভারতীয় অভিনেতা কে জানেন? অবশ্যই রজনীকান্ত!
৯. রজনীকান্তের ছবি এন্থিরান ( রোবট) একমাত্র তামিল ছবি যা আইএমডিবির সেরা ৫০টি ছবির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পেরেছিল। এটা ২০১০ সালের দিকের ঘটনা। ছবিটি একইসাথে ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে সর্বকালের ব্যবসাসফল ছবির একটি।
১০. দক্ষিণের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ঈশ্বর হিসেবে গণ্য রজনীকান্ত মূলত মহারাষ্ট্রের মানুষ। তামিল, তেলুগু, কানাড়া, মালায়লম, হিন্দি এবং এমনকি বাংলা ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি। অথচ বিচিত্র বিষয়, মাতৃভাষা মারাঠিতে একটি ছবিও নেই তাঁর!