তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে চলচ্চিত্র ঐক্যজোট নেতাদের বৈঠক
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ঐক্যজোটের পক্ষ থেকে চলচ্চিত্রের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে আজ তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে দেখা করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ঐক্যজোটের নেতারা। এঁদের মধ্যে ছিলেন শিল্পী সমিতির সভাপতি শাকিব খান, সাধারণ সম্পাদক মিশা সওদাগর, পরিচালক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, সহসভাপতি সোহানুর রহমান সোহান, মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজারসহ ঐক্যজোটের নেতারা।
এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে শাকিব খান, মিশা সওদাগর অভিনীত এবং মুশফিকুর রহমান গুলজার, সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত কোনো ছবি প্রদর্শন না করার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি। এ বিষয়ে প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি সোহানুর রহমান সোহান, মুশফিকুর রহমান গুলজার, শাকিব খান ও মিশা সওদাগরের ছবি চালাব না বলে ঘোষণা দিয়েছি।’
প্রদর্শক সমিতির এমন সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, সহসভাপতি সুদীপ্ত কুমার দাস, মহাসচিব মিঞা আলাউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ (খালু), কোষাধ্যক্ষ মো. রফিকউদ্দিন ও নির্বাহী সদস্য মেহমুদ হোসেন- এরা কেউই প্রদর্শক নন। তাঁরা মূলত বুকিং এজেন্ট। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির নাম দিয়ে তাঁরা চলচ্চিত্র ধ্বংস করার কাজ করছেন। আমরা খুব তাড়াতাড়ি তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করব।’
গুলজার প্রদর্শক সমিতির সদস্যদের উদ্দেশে আরো বলেন, ‘তাঁরা বলছেন শাকিব, মিশার ছবি চালাবেন না। অথচ সারা দেশের সিনেমা হল বসে থাকে কখন শাকিবের একটা ছবি মুক্তি পাবে। আর মিশা তো নব্বই ভাগ ছবিতে কাজ করে। তাঁরা আসলে বাংলাদেশের ছবি চালানোর বিপক্ষে দাঁড়াচ্ছেন। কারণ তাঁরা কেউই সিনেমা হলের মালিক না। এমনকি তাঁরা কেউ টাকা খরচ করে ছবি বানান না।’
এদিকে, গতকাল রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির নেতারা লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা বৈধ এলসি করে এবং হাইকোর্টের নির্দেশনা লাভ করে ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের লিখিত অনুমতিপত্র গ্রহণ করে ৩০-০৬-১২ তারিখে চারটি ছবি আমদানি করি। ছবিগুলো হচ্ছে ‘ওয়ান্টেড’, থ্রি ইডিয়টস’, ‘তারে জমিন পার’ ও ‘ডন টু’। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রায় তিন বছর সরকার আমদানির বৈধতা ও আইনগত গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে যাচাই-বাছাই করেছে। এ ক্ষেত্রে কোনো গোপনীয়তা ছিল না বা কোনো অবৈধ কার্যক্রম পরিচালিত হয়নি এবং এর মধ্যে কোনো ছলচাতুরিরও আশ্রয় নেওয়া হয়নি।’
পরিচালক সমিতির সমালোচনাও করা হয় প্রদর্শক সমিতির এই লিখিত বক্তব্যে। সেখানে বলা হয়, ‘আমাদের আমদানীকৃত ছবির প্রদর্শন বন্ধ করতে পরিচালক সমিতি যে মামলা হাইকোর্টে করেছে, সেটিতে প্রকৃত সত্য ও তথ্য গোপন করা হয়েছে। উপরন্তু হাইকোর্টের মামলায় আদেশ প্রাপ্তিতে ব্যর্থ হয়ে এটাও গোপন করে সরকারি জজ আদালত থেকে যেনতেনভাবে একটি আদেশ প্রাপ্তিতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন তথাকথিত আন্দোলনের নামে প্রেক্ষাগৃহে এবং পরিবেশনা কার্যালয়ের সামনে ব্যানার ও পোস্টারে আগুন দেওয়া হচ্ছে এবং প্রেক্ষাগৃহে আক্রমণ করার চেষ্টা করছে।’
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, কেবল সিনেমা হলগুলোকে রক্ষা করা এবং সিনেমা হলকে কেন্দ্র করে খেটে খাওয়া হাজার হাজার পরিবারকে রক্ষা করার জন্য ভারতীয় ছবি আমদানির উদ্যোগ বাধ্য হয়েই নিয়েছি। নির্দিষ্ট পরিমাণ ভারতীয় ছবি আমাদের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হলে এবং পাশাপাশি আমাদের নির্মিত ছায়াছবি প্রদর্শিত হলে দেশীয় ছবির মান বাড়বে, দর্শকদের সংখ্যা বাড়বে, স্থানীয় বাজার সম্প্রসারণ হবে এবং প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের পাশাপাশি প্রযোজক-পরিবেশকসহ সবার আয় বৃদ্ধি পাবে।’
গতকালের সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম চৌধুরীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সহসভাপতি সুদীপ্ত কুমার দাস। সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন সমিতির মহাসচিব মিঞা আলাউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ (খালু), কোষাধ্যক্ষ মো. রফিকউদ্দিন ও নির্বাহী সদস্য মেহমুদ হোসেন।