ফিল্মসিটি করছেন ডিপজল
বাংলাদেশের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল নির্মাণ করতে যাচ্ছেন পরিপূর্ণ একটি ফিল্মসিটি। ঢালিউডের সঙ্গে ডিপজল অভিনয় ও প্রযোজনা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত আছেন। যদিও মাঝখানে তিনি চলচ্চিত্রে ছিলেন অনুপস্থিত। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে নতুন কোনো ছবির কাজ করছেন না। অভিনয়েও তিনি দীর্ঘ বিরতি দিয়েছেন। সম্প্রতি জাজের ‘অনেক দামে কেনা’ ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন, যা আগামী বছরের শুরুর দিকে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। তবে এবার শুধু অভিনয় বা প্রযোজনা নয় ডিপজল জানালেন, ‘আমি চলচ্চিত্রের জন্য একটি কমপ্লিট সিটি বানাচ্ছি।’
এনটিভি অনলাইনকে এ বিষয়ে ডিপজল বলেন, ‘চলচ্চিত্রকে ভালোবেসে এখনো কাজ করে যাচ্ছি। শুধু টাকা কামানোর জন্য এখানে আসিনি। আমার দাদা গাবতলীতে সিনেমা হল বানিয়েছিলেন, আর আমি চলচ্চিত্রের জন্য একটি ফিল্মসিটি বানাচ্ছি। সাভারের শুটিং স্পটটি আধুনিক একটি শুটিং জোন বানাচ্ছি। আমি দীর্ঘদিন সিনেমার সাথে আছি, আমি জানি চলচ্চিত্র নির্মাণে আমাদের কী ধরনের সমস্যা হয়। সব কিছু মাথায় রেখে সাভারের ফুলবাড়িয়ার শুটিং স্পটটিকে আধুনিক করছি। আমার এখানে একটি ছয়তলা বাড়ি, একটি পুরাতন জমিদারবাড়ি, একটি শুটিং ফ্লোর ও একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের শুটিং করা যায় এমন টিনশেড বাড়ি আছে। এই টিনশেড বাড়ি ভেঙে এখানে একটি আধুনিক চারতলা বাড়ি আর একটি আধুনিক শুটিং ফ্লোর বানাচ্ছি। যাতে করে ছবি বানাতে এলে সব ধরনের দৃশ্যের কাজ করতে পারা যায়। এ ছাড়া আমি এরই মধ্যে কক্সবাজারে জায়গা নিয়েছি, সেখানেও একটি ফিল্মিসিটি বানানোর ইচ্ছা আছে। একটু সময় লাগবে, এই বাড়ির কাজ শেষ করে আশা করি আগামী বছর কক্সবাজারের কাজ শুরু করতে পারব।’
হুট করে ফিল্মসিটি বানানোর কথা মাথায় এলো কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিপজল বলেন, ‘চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করতে গেলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়, আমার ইচ্ছা আছে যেন একজন পরিচালক তাঁর ইউনিট নিয়ে আমার এখানে ঢুকে চলচ্চিত্র বানিয়ে বের হতে পারেন। কলকাতা বা অন্য কোথাও যেতে না হয়। ক্যামেরা, লাইট ইউনিট, এডিটিংসহ যা লাগে আমার কাছে আছে, আর যা নেই তার সব কিছুই আগামী দিনে থাকবে বলে আশা করি। আসলে চলচ্চিত্র নিয়ে যে যার জায়গা থেকে কাজ করলে চলচ্চিত্রের সুদিন অবশ্যই আসবে।’
অনেকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল ডিপজল নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণে হাত দেবেন, নয়টি ছবির চিত্রনাট্য প্রায় তৈরি। এসব ছবিতে হাত দিচ্ছেন কবে? ডিপজলের উত্তর, ‘চিত্রনাট্য তৈরি কথাটি ঠিক আছে। আমি তো চলচ্চিত্রের স্বপ্ন নিয়েই আছি। চিত্রনাট্যকার জোসেফ শতাব্দী আমার এখানেই থাকেন, ওনাকে নিয়ে এরই মধ্যে অনেকগুলো ছবির চিত্রনাট্য তৈরি করে রেখেছি। চলচ্চিত্রে এখন একটা অস্থিরতা যাচ্ছে, দেখি একটু শান্ত হলেই আবার কাজ শুরু করব। তা ছাড়া আমার কয়েকটা ছবির কিছু কাজ বাকি আছে, সেগুলোও শেষ করার ইচ্ছা আছে।’
চলচ্চিত্রে ডিপজলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল নায়ক হিসেবে, প্রথম ছবি ‘টাকার পাহাড়’। মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত এ ছবিতে তাঁর নায়িকা ছিলেন মিষ্টি। এরপর তিনি আবিদ হাসান বাদল পরিচালিত হাবিলদার ছবিতে নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন। তারপর দীর্ঘ বিরতি। নব্বই দশকের শেষের দিকে ডিপজল কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘তেজী’ ছবির মাধ্যমে খলনায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে রীতিমতো হইচই ফেলে দেন। তখন ডিপজল মানেই ছবি হিট। টানা কয়েক বছর খলনায়ক হিসেবে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করার পর আবার বিরতি নেন তিনি। ২০০৪ সালে এফ আই মানিক পরিচালিত ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবিতে সম্পূর্ণ নতুনরূপে আত্মপ্রকাশ করেন ডিপজল। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রে থাকা ছবিটি সুপারডুপার হিট হলে ডিপজল প্রধান চরিত্র হিসেবে একের পর এক ছবিতে অভিনয় করে সাফল্য পান ও প্রশংসিত হন।