স্বাধীনতার মাসে মুক্তি পাচ্ছে ‘৭১-এর মা জননী’
আগামী ২০ মার্চ শুত্রবার মুক্তি পাচ্ছে শাহ আলম কিরণ পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধের ছবি ‘৭১-এর মা জননী’। সরকারি অনুদানে নির্মিত এই চলচ্চিত্র তৈরি করা হয়েছে আনিসুল হকের ‘সাহসিনী ৭১’ উপন্যাস অবলম্বনে। মির্জা আবদুল খালেক নিবেদিত এ ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন দুইবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী নিপুণ।
২০০৬ সালে ‘রত্মগর্ভা মা’ ছবির মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন তিনি। এরইমধ্যে দুইবার বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও জিতেছেন নিপুণ। ’৭১-এর মা জননী’ ছবিতে অভিনয় প্রসঙ্গে কথা হয় নিপুণের সঙ্গে। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, “আমার বাবা মনসুর আলী একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বাবার কাছে মুক্তিসংগ্রামের অনেক ঘটনা শুনেছি। লাখ লাখ শহীদকে নির্মমভাবে মেরে ফেলা আর বীরঙ্গনাদের ওপর নির্যাতনের করুণ কাহিনী শুনে গা শিউরে উঠত । সেই সময়ই মনেপ্রাণে ঠিক করে ফেলেছিলাম সিনেমায় সুযোগ হলে তেমন কোনো একটি চরিত্রে অভিনয় করব। আমার ইচ্ছাটা পূরণ হয়েছে ’৭১-এর মা জননী’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। এখানে বীরঙ্গনা জমিলা চরিত্রে আমি অভিনয় করেছি।”
এ ছবির সঙ্গে কীভাবে যুক্ত হলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে নিপুণ বলেন, “পরিচালক শাহ আলম কিরণ স্যার যখন সরকারি অনুদান পেলেন এই ছবির জন্য তখন পুরো ইউনিটের সাথে কথা বলেন । সবাই আমাকে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিলে তিনি আমাকে বিষয়টি বললে আমি এক বাক্যে রাজি হয়ে যাই। আমার হাতে তখন অনেক কাজ ছিল। আমি সব কাজ বন্ধ করে দিয়ে ‘৭১ এর মা জননী’র চরিত্রে নিজেকে তৈরি করলাম সময় নিয়ে।”
এই ছবিতে তো অনেক আবেগঘন মুহূর্ত আছে, কোন দৃশ্যটি বেশি স্পর্শ করেছে নিপুণকে? নিপুণ বললেন, ‘একটি দৃশ্য আছে, সেখানে আমাকে প্রথম আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয় আমার ছেলেসহ। আমি আপ্রাণ চেষ্টা করছি নিজেকে বাঁচাতে । কিন্তু সেখানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে আমি লাঞ্ছিত হই। টানা ১৫ মিনিট ধরে চলে ওই নির্যাতন দৃশ্য। আট দিন লেগেছে আমাদের ওই দৃশ্যের শুটিং করতে। এই ১৫ মিনিটের নির্যাতন দৃশ্য দেখে যদি কোনো দর্শকের চোখে পানি আসে তাহলেই আমি সার্থক।’
শুটিংয়ের সময় আহত হন নিপুণ। এ ঘটনা সম্পর্কে নিপুণ বলেন, ‘শুটিং করতে নরসিংদীর পাড়াতলি গ্রামে গিয়েছিলাম আমরা। সেখানে শুটিংয়ের একটি দৃশ্য ছিল- গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনী ঢোকার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়বে চারদিকে এবং গ্রাম ছেড়ে শতাধিক লোকের সঙ্গে আমাকেও নদীতে ঝাপ দিতে হয়। এ দৃশ্যে কাজ করতে গিয়ে কেটে যায় আমার পা। আহত হওয়ার পরও কাজ থামিয়ে রাখিনি। রক্তাক্ত অবস্থাতেই সম্পূর্ণ করেছি পুরো দৃশ্যের শুটিং।’
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আগুন ও নিপুণ। এ ছাড়া রয়েছেন চিত্রলেখা গুহ, ম. ম. মোর্শেদ, গুলশান আরা, মিশু, রাকিব, আবদুল হালিম আজিজ, স্মরণ, মুরশেদ আলম, লিখন, মাহবুব, এলিনা পারভেজ, রিমা, ঈশিতা পায়েল, সোমা ফেরদৌস, মিমা জামান তিথি, পৃথু, সারোয়ার আলম সৈকত, জুয়েল এবং সাজু মেহেদী, সুমাইয়া, মনিকা, সোহানসহ কয়েকজন শিশুশিল্পী।