শারীরিকভাবে খুবই কষ্টকর ছিল ‘দ্য রেভেন্যান্ট’ : লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও
প্রথমবারের মতো অস্কার জিতলেন লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও। অভিনয়টা শুরু করেছিলেন একদম ছোটবেলা থেকে। অনেকবার পেতে পেতে পাননি অস্কার। এবার ধরা দিল অভিনয়ের জন্য সেরা এই সম্মান।
৮৮তম অস্কারে ‘দ্য রেভেন্যান্ট’ ছবির জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতেছেন লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও।
লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও হচ্ছেন এমন একজন অভিনেতা, যাঁর পরিণতি ছবিতে সাধারণত ভালো হয় না। ‘টাইটানিক’, ‘জ্যাঙ্গো আনচেইনড’, ‘দ্য ডিপার্টেড’ অথবা ‘রোমিও জুলিয়েট’। এসব ছবিতে তিনি হয় মারা গেছেন নয়তো তাঁর কপালে কী ঘটেছে, সেটা দর্শক জানতে পারেনি।
লিওনার্দোর নতুন ছবি ‘দ্য রেভেন্যান্ট’-এ তিনি মরতে মরতে বেঁচে গেছেন। তাঁর এই বেঁচে থাকাটাই ছবিটিকে অর্থবহ করেছে। ১৮২০-এর দশকের শিকারি (ফার ট্র্যাপার) হগ গ্লাসের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি। হগ একবার ভল্লুকের আক্রমণে গুরুতর আহত হয়েছিলেন।
তাঁর সঙ্গীরা মরণাপন্ন অবস্থায় তাঁকে রেখে চলে গিয়েছিল। সে অবস্থা থেকে একা দুর্গম জঙ্গল থেকে হামাগুড়ি দিয়ে, একটু একটু করে তিনি বেঁচে ফিরেছেন। অথচ অসহায় মৃত্যুই হতে পারত তাঁর পরিণতি।
সত্য ঘটনার ওপর নির্মিত ‘দ্য রেভেন্যান্ট’ ছবিটির শুটিং করা হয়েছে তুষারাবৃত দুর্গম জঙ্গলে। শুটিং ইউনিট নিয়ে ওই রকম দুর্গম অঞ্চলে কাজ করার দুঃসাহস দেখিয়েছেন ‘বার্ডম্যান’ খ্যাত পরিচালক আলেহান্দ্রো গনজালভেজ ইনারিতু।
প্রায় সময়ই শুটিং বন্ধ করার মতো অবস্থা হয়েছিল কিন্তু হগ গ্লাসের মতো তাঁরাও সেই পরিস্থিতিকে জয় করতে পেরেছিলেন। এই ছবিটির শুটিং শেষ করার পর ছবি ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে লিওনার্দোর একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিল মার্কিন ম্যাগাজিন ‘ওয়্যার্ড’।
ওয়্যার্ড-এর পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন রবার্ট ক্যাপস। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে নেওয়া হয়েছিল সাক্ষাৎকারটি।
প্রশ্ন : ‘দ্য রেভেন্যান্ট’-এর প্রিমিয়ার শো দেখে আমার শুধু একটা কথাই মনে হয়েছে, ‘খুব ঠান্ডা ছিল’।
ডিক্যাপ্রিও : এটা শারীরিকভাবে খুবই কষ্টকর ছিল সবার জন্য। ক্যালগেরি থেকে ভ্যাংকুভার পর্যন্ত বিভিন্ন দুর্গম লোকেশনে আমরা বিশাল ইউনিট নিয়ে কাজ করেছি। শুটিংয়ের জন্য পাহাড় বেয়ে উঠতে হয়েছে সবাইকে। ‘বার্ডম্যান’ ছবিতে যেমন আলেহান্দ্রো ইনারিতু জটিল কিছু দৃশ্য ধারণ করেছিলেন ‘চিভো’ লুবেজকিকে (ইমানুয়েল লুবেজকি, ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফি) নিয়ে। সে রকমই ‘দ্য রেভেন্যান্ট’ ছবিতে জঙ্গলের ভেতর এবং বাইরের পরিবেশকে এক সুতোয় বেঁধেছিলেন তিনি। যুদ্ধের দৃশ্যগুলোতে তিনি টানা ক্যামেরা না চালিয়ে আলাদা আলাদা করে দৃশ্য ধারণ করে পরে মিলিয়ে নিতে পারতেন। কিন্তু সে ফাঁকিবাজিতে তাঁরা যাননি। পুরো ইউনিটকে স্পষ্টভাবে সবকিছু বুঝিয়ে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সবাই জানত কী করতে হবে, কিন্তু আমরা যখন সেখানে পৌঁছালাম, অবধারিতভাবেই প্রকৃতির ওপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তাই আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম, তত সহজে কাজ করতে পারিনি।
প্রশ্ন : কী কারণে আপনি হগ গ্লাসের চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হলেন?
ডিক্যাপ্রিও : গ্লাস ছিলেন একজন ক্যাম্পফায়ার কিংবদন্তি। ছবিতে যা দেখানো হয়েছে তার পুরোটাই সত্যি। ভল্লুকের আঘাতে তিনি মারাত্মক আহত হয়েছিলেন, তাঁকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে গিয়েছিল সঙ্গীরা। সে অবস্থা থেকে বেঁচে ফিরেছিলেন একাই। গহিন জঙ্গল থেকে হামাগুড়ি দিয়ে কয়েকশো মাইল পথ পাড়ি দিয়েছিলেন। প্রকৃতিকে হারিয়ে তিনিই জিতেছিলেন। আমার কাছে এটা খুবই একটা সহজ-সরল লিনিয়ার গল্প মনে হয়েছিল। কিন্তু যখন এটা আলেহান্দ্রোর হাতে পড়বে, তখনই একটা দৃশ্যকাব্য রচিত হবে। মানুষের বেঁচে থাকার অদম্য ইচ্ছা এবং তার জন্য প্রাণপণ লড়াই। সব পরিচালক এ ধরনের ছবি নিয়ে কাজ করতে চাইবেন না। কারণ এর দৃশ্যধারণ প্রক্রিয়া খুবই জটিল এবং কষ্টসাধ্য। কয়েক বছর ধরে এর চিত্রনাট্যের কাজ করা হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত না আলেহান্দ্রোর মনে হয়েছে গ্লাসের সংগ্রামের বিষয়টা পরিষ্কারভাবে চিত্রনাট্যে ফুটে উঠেছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তা লেখা হয়েছে। আমি বারবার সেই চিত্রনাট্য পড়েছি এবং পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। তারপরই আমি কাজটা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা একটা চলচ্চিত্রের চেয়ে বেশি ছিল। এটা ছিল আমার জীবনের একটা অধ্যায়, যা যে কোনো অর্থেই মহাকাব্য।
প্রশ্ন : আপনারা লোকেশনে শুট করছিলেন, তা ছিল ভীষণ ঠান্ডা, নোংরা এবং পাশবিক। আপনার জন্য সেই মুহূর্তগুলো কেমন ছিল? সে সময় কি নিজেকে একবারও প্রশ্ন করেননি, ‘কেন এটা করছি আমি?’
ডিক্যাপ্রিও : মুহূর্ত? এই ছবির প্রতিটি দিন কঠিন ছিল। আমি এখন পর্যন্ত যা ছবি করেছি, এটাই ছিল সবচেয়ে কঠিন। আপনি ছবিটা দেখলেই বুঝবেন, শুটিংয়ে আমাদের যে কষ্ট করতে হয়েছে, তার পুরোটাই ছবিটাতে ফুটে উঠেছে।
প্রশ্ন : সবচেয়ে বাজে ব্যাপার কোনটা ছিল?
ডিক্যাপ্রিও : আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন ছিল বারবার বরফগলা নদী পার হওয়া (হাসি)। কারণ আমার গায়ে তখন হরিণের চামড়া, তার ওপর ভালুকের পশমওয়ালা চামড়া। এগুলো পানিতে ভেজালে সবকিছুর ওজন ১০০ পাউন্ডেরও বেশি হয়! এবং প্রতিদিনই আমার জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল হাইপোথারমিয়া ঠেকানো।
প্রশ্ন : এ ধরনের শুটিংয়ের জন্য শুটিং ক্রুরা কেমন প্রস্তুতি নিয়েছিল? তারা কি বলেছিল, ‘আমরা ডিক্যাপ্রিওকে ধরে বরফগলা নদীতে ফেলে দেই? তাতে দৃশ্যটা আরো ভালো জমবে! আমাদের এখানে তো চিকিৎসক (ইএমটি) আছেনই।
ডিক্যাপ্রিও : ওহ, সেখানে চিকিৎসকরা (ইএমটি-এমারজেন্সি মেডিকেল টেকনিশিয়ান) ছিলেন। এবং তাঁরা এক বিশাল যন্ত্র নিয়ে গিয়েছিলেন। ওটা দেখে মনে হবে একটা বিশাল হেয়ার ড্রায়ার যেটার সঙ্গে আবার অক্টোপাসের শূড়ের মতো বেশকিছু অঙ্গপ্রত্যঙ্গ রয়েছে। সেটা নেওয়া হয়েছিল যাতে প্রতি টেকের পর আমি আমার হাত-পা দ্রুত গরম করতে পারি। সবাই ওই ঠান্ডার মধ্যে আটকা পড়েছিল। তো আসলে নয় মাস ধরে প্রতিটা শটের পর ওই বিশাল হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে ওরা আমাকে সেদ্ধ করছিল!
প্রশ্ন : এবং প্রচুর টেক দিতে হয়েছিল আপনাকে।
ডিক্যাপ্রিও : আলেহান্দ্রো এবং চিভোর (ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফি) একটা লক্ষ্য ছিল পুরো ছবিটাই তারা প্রাকৃতিক আলো ব্যবহার করে তুলবে। শুটিং শুরুর আগে আমরা কয়েক মাস মহড়া দিয়েছি। মহড়ায় প্রতিদিনই মনে হতো আমরা যেন কোনো মঞ্চনাটক করছি। প্রত্যেক অভিনেতা, সেটের প্রত্যেকটা অংশকে মনে হতো যেন সুইচ ওয়াচের গিয়ার। কারণ ক্যামেরা সব সময় আপনার চারপাশে ঘুরছে এবং আপনার টাইমিং হতে হবে একদম নিখুঁত। তাই আমরা প্রতিদিন মহড়া দিয়েছি। এবং আমরা দুই ঘণ্টার জন্য দিনের আলোতে শুটিং করতাম। এই ছবিটা অনেকটা ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মতো। আপনাকে একেবারে প্রকৃতির সঙ্গে মিশিয়ে ফেলবে। ভল্লুকের আক্রমণের দৃশ্যটা ধারণের সময় মনে হয়েছিল ভল্লুকের প্রতিটা নিশ্বাস আমার মুখে পড়ছে। আপনি জীবনে যা দেখেছেন তার কোনো কিছুর সঙ্গেই এই অভিজ্ঞতার তুলনা হয় না।
প্রশ্ন : আমি শুনেছি, আপনার তুষারে সমস্যা হয়।
ডিক্যাপ্রিও : শুটিংয়ের সময় আমরা অনেক ধরনের জটিলতার মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। কারণ সেটা ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর। ক্যালগারিতে শুটিংয়ের সময় একদিন আমরা প্রায় মাইনাস ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যে শুটিং করেছি। এই তাপমাত্রায় ক্যামেরার গিয়ারগুলো কাজ করে না। তাই শুটিং বন্ধ রাখতে হয়। দুদিনে এ রকম ঘটেছে যে আমরা মাত্র পাঁচ ঘণ্টায় সাত ফুট তুষার গলতে দেখেছি। আবার দু-তিন সপ্তাহ ধরে কোনো তুষারপাত নেই, অথচ পুরো ছবিটার মধ্যেই তুষারের দৃশ্য আছে। আমাদের বেশ কয়েকবার শুটিং বন্ধ রাখতে হয়েছে এসব কারণে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এখন সব সময়ই আবহাওয়া চরম অবস্থায় পৌঁছে যায়।
প্রশ্ন : এমনকি এই আবহাওয়াতেও আপনাদের সকালে উঠতো হতো এবং তুষারপাত শুরু হলেই শুটিং শুরু হতো। ঠিক কিনা?
ডিক্যাপ্রিও : আমাদের দক্ষিণ মেরুতে যেতে হয়েছিল!
প্রশ্ন : বাপরে বাপ! ভয়ংকর!
ডিক্যাপ্রিও : আমাদের আর্জেন্টিনার দক্ষিণ মেরুতে যেতে হয়েছিল। তুষার খোঁজার জন্য আমরা পৃথিবীর সর্বদক্ষিণে গিয়েছিলাম।
প্রশ্ন : আপনার কি আউটডোরে অভিজ্ঞতা অনেক বেশি? আপনি কি মাটি কামড়ে পড়ে থাকা মানুষদের দলে?
ডিক্যাপ্রিও : আমি প্রকৃতি এবং জংলি পরিবেশের সঙ্গে পুরোপুরি মিশে যেতে পছন্দ করি। স্কুবা ডাইভিং আমার খুব পছন্দের। অ্যামাজনের জঙ্গলেও প্রচুর ঘুরেছি। আমার সঙ্গে কিছু খাবার দিয়ে জঙ্গলে নামিয়ে দিলে আমি টিকে থাকতে পারব। কিন্তু এই ছবিটা করার আগে নিজের টিকে থাকার ক্ষমতা সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা ছিল না।
প্রশ্ন : আমি শুনেছি, জীবনে আপনি কয়েকবার মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এসেছেন। সেই অভিজ্ঞতার পরও এই ছবিটা করতে রাজি হলেন?
ডিক্যাপ্রিও : আমার বন্ধুরা আমার সাথে কোনো অ্যাডভেঞ্চারে যেতে চায় না। কারণ আমার সঙ্গে অ্যাডভেঞ্চারে যাওয়া মানেই বিপদ। একেবারে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি বেশ কয়েকবার। আমার মনে হয় এত সহজে আমি মরব না। হাঙ্গরের হাত থেকেও তো বেঁচে ফিরেছি।
প্রশ্ন : হাঙ্গর?
ডিক্যাপ্রিও : দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাইভিং করছিলাম। তখনই এক গুহার মধ্যে ছিল হাঙ্গরটা। একেবারে গায়ের ওপর এসে পড়েছিল প্রায়। হাঙ্গরের অর্ধেক শরীরটা ছিল গুহার মধ্যে আর বাকিটা ছিল আমার দিকে। এক দৃষ্টিতে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিল।
প্রশ্ন : গুহার মধ্যে সেটা গেল কীভাবে?
ডিক্যাপ্রিও : কিছু টুনা মাছ ছিল, হঠ্যাৎ করেই হাঙ্গরটা এসে টুনা মাছগুলোর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। মাছগুলো গুহার মধ্যে ঢুকে গেল। হাঙ্গরটা ঢুকতে গিয়ে আটকে গিয়েছিল। তখন ঝাপ্টাঝাপ্টি আরো বেড়ে গিয়েছিল। টুনা মাছগুলো অবশ্য স্রোতের টানে বেরিয়ে গিয়েছিল। আমি মাটিতে একবারে টান হয়ে শুয়ে থাকার চেষ্টা করছিলাম। আমার মাথা থেকে এক হাত দূরে প্রায় পাঁচ-ছয়টা ঘা মেরেছিল হাঙ্গরটা। আমার সঙ্গে প্রশিক্ষক যারা ছিল ওরা বলছিল, গত ৩০ বছর ধরে ওরা কাজ করছে। এমনটা নাকি আর কখনো ঘটতে দেখেনি।
প্রশ্ন : হাঙ্গরটা কি গুহা থেকে বেরিয়ে সাঁতরে চলে গিয়েছিল?
ডিক্যাপ্রিও : পেছন দিকে ধাক্কা দিয়ে ওটা আবার গুহা থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। ওটার একটা ভিডিও আছে আমার কাছে। এরপর রাশিয়া যাওয়ার পথে ডেল্টা এয়ারলাইনসের ফ্লাইটের ঘটনাটাও মারাত্মক। বিজনেস ক্লাসের যাত্রী ছিলাম। বিমানের ইঞ্জিনটা আমার চোখের সামনে বিস্ফোরিত হলো। হাডসনে কিছুদিন আগেই স্যালি সালেনবার্গারের বিমান অবতরণের ঘটনাটা তখন ঘটেছে। আমি বিমানের মধ্যে বসে তাকিয়ে তাকিয়ে বিমানের পাখাগুলো দেখছিলাম। পুরো পাখাটাই একটা অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হলো। আমিই ছিলাম একমাত্র ব্যক্তি যে পুরো ঘটনাটা নিজের চোখে দেখলাম। মনে হয়েছিল, একটা বিশালাকৃতির টারবাইন ধূমকেতুর মতো উড়ে যাচ্ছে। ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য ছিল। কয়েক মিনিটের জন্য তারা বিমানের ইঞ্জিন বন্ধ করে দিয়েছিল। তখন আমরা উড়ছিলাম নিশব্দে। কারণ ইঞ্জিন বন্ধ ছিল আর ভয়ে বিমানের সব যাত্রী চুপ হয়ে গিয়েছিল। ওটা একটা পরাবাস্তব (স্যুররিয়্যাল) অভিজ্ঞতা ছিল। পরে তারা ব্যাকআপ ইঞ্জিন চালু করে এবং জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করা হয়েছিল।
প্রশ্ন : এবার প্রসঙ্গ পাল্টাই। আপনি তো মোটামুটি ছোটবেলা থেকেই মিডিয়া আর ভক্তদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। এতকিছুর মধ্যে টিকে আছেন কীভাবে?
ডিক্যাপ্রিও : আসলে সত্যি বলতে, ব্যাপারটা পরাবাস্তবতার (স্যুররিয়্যাল) মতো। আমার মনে হয় না তারকা হওয়ার অনুভূতির সঙ্গে সবাই মানিয়ে নিতে পারে। মানে বিশ্বজুড়ে লোকজন আপনাকে চেনে, আপনার খবর পড়ে, এটা অনেকের পক্ষেই সামলে রাখা সম্ভব হয় না। বিশেষ করে যখন পাপারাজ্জিরা পিছু লাগে। কিন্তু আমি আজকে যা, তা এইসবেরই অংশ। এটা আমার জীবনেরই একটা অংশ, কারণ নিজের পেশা আমি নিজেই ঠিক করে নিয়েছিলাম। এবং আমি যা করি তা করতেই ভালোবাসি। আমার মনে হয়, এতকিছুর মধ্যে আমি টিকে গেছি কারণ নিজের সম্ভাবনাকে আমি কখনো কোথায় আটকে থাকতে দিইনি। আমার যদি কোনো অভিজ্ঞতা নেওয়ার প্রয়োজন মনে হয় বা কোথাও যেতে ইচ্ছে করি আমি সেটাই করি। আমার মনে হয়, এ কারণেই আমি আমার জীবনের স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে পেরেছি।
প্রশ্ন : সাক্ষাৎকারে একজন সাংবাদিককে কীভাবে সামলাতে হয়, সেটার কোনো টিপস আছে আপনার কাছে?
ডিক্যাপ্রিও : (হেসে) যেসব বিষয় নিয়ে আপনি কথা বলতে চান শুধু সেগুলো নিয়েই আলোচনা করুন, প্রশ্ন যাই হোক!