লেহেঙ্গা পরেই দৌড় দিয়েছি : মম
আগামী ১০ এপ্রিল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে শিহাব শাহীন পরিচালিত ‘ছুঁয়ে দিলে মন’। ছবিটি নিয়ে অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মমর সঙ্গে ভালোভাবে আলাপ জমিয়ে ওঠার আগেই তিনি বললেন, “‘ছুঁয়ে দিলে মন’ যেন দর্শকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়, এটাই আমাদের সবার চেষ্টা ছিল।”
দর্শক কেন প্রেক্ষাগৃহে যাবে—জানতে চাইলে মম বলেন, “‘ছুঁয়ে দিলে মন’ আড়াই ঘণ্টার ছবি। ছবিটিতে কাজ করার অভিজ্ঞতার রং অনেক। ছবির বিহাইন্ড দ্য ক্যামেরার শুট যদি রাখা হয়, তাহলে সেটাই তিন ঘণ্টার ছবি হবে। ছবির পেছনে এত গল্প আছে, এত সংগ্রাম আছে, যা সত্যিই অনেক চাঞ্চল্যকর। দর্শক কেন দেখবে না?”
শুটিং চলার সময় স্মৃতিগুলো কি মনে আছে? মম বলেন, ‘থাকবে না আবার! খুব আছে। আমরা শুটিং করেছি সিলেটে। সে সময় হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছিল। তাদের ভালোবাসা ভালোভাবেই গ্রহণ করেছি। শুটিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে অটোগ্রাফ দিয়েছি। ভক্তরা অনেক ছবি তুলেছে, দোয়াও করেছে। কিন্তু দিন শেষে সবারই মনে হতো, আমরা অনেক ক্লান্ত। কারণ, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করে আমি আর শুভ বিশ্রামই নিতে পারতাম না। শুটিং শেষ হলে সবাই আরেক দফা আমাদের সঙ্গে ছবি তুলতে আসত। আমি তো ক্লান্ত হয়ে একবার বলেই দিয়েছিলাম, আর সম্ভব নয়। ছবি তুললে টাকা দিতে হবে। তার পরও পুরো বিষয়টাই আমরা অনেক উপভোগ করেছি।’
ছবির গানগুলোতে আপনি চমৎকার নাচ করেছেন। গানের দৃশ্যের শুটিং করার সময় কোনো বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন কি? প্রশ্ন শুনে মম ভেবে উত্তর দিলেন, ‘মাধবকুণ্ডে ঝর্ণাধারায় আমার আর শুভর একটা গানের শুটিং ছিল। সেখানে আমাকে পানির নিচ থেকে উঠে এসে ক্লোজ শট দিতে হবে। তখন ছিল বর্ষার সময়। পানির স্রোত এত বেশি ছিল যে ২০ সেকেন্ড সেখানে দাঁড়াতে পারছিলাম না। দুই-তিনবার এনজি শট হওয়ার পর আমি বললাম, আর পারব না। একবার তো পানিতে ভেসেই যাচ্ছিলাম প্রায়। তখন শুভ আমাকে ধরে রেখেছিল। পরে অনেক কষ্টে শট ওকে করেছি। সেখানকার নিরাপত্তাকর্মীরা আমাদের আগেই নিষেধ করেছিলেন শুটিং করতে। পরিচালক তাঁদের অনেক বুঝিয়ে রাজি করিয়ে ঝুঁকি নিয়েছিলেন।’
আরো এ রকম ঘটনা আছে কি? মম বললেন, ‘বালুর পাহাড়ে আমরা শুটিং করেছিলাম। পাহাড় থেকে ভারতের বর্ডার দেখা যায়। জায়গাটা এককথায় অসাধারণ। পাহাড় থেকে নামার পর দেখি, অনেক মানুষের ভিড়। এত মানুষ দেখে শুভ বাইক চালিয়ে উধাও হয়ে গেল। আমি পড়লাম বিপদে। লেহেঙ্গা পরা ছিলাম। এ অবস্থায় ঠিকমতো হাঁটতেও পারছিলাম না। অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে লেহেঙ্গা পরেই দৌড় দিয়েছি। আমার দৌড় দেখে ইউনিটের সবাই দৌড়াতে লাগল। পরিচালক তখনো পাহাড়ের ওপর ছিলেন। এ দৃশ্য দেখে শিহাব ভাই নামতে গিয়ে তাঁর পা মচকে গিয়েছিল। এর পর আমি আর শুভ সুস্থ থাকলেও পরিচালক আহত হয়েছিলেন।’
সহশিল্পী হিসেবে আরিফিন শুভ কেমন? এমন প্রশ্ন শুনে মম বললেন, ‘আমি তো বলেছি, শুভ একবার আমাকে সেফ করেছিল। শুভ অনেক মেধাবী অভিনেতা এবং সহকর্মী হিসেবেও দারুণ। আরেকটা শটের কথা বলি। দৃশ্যটা এ রকম ছিল যে, আমি লাফ দিয়ে শুভর কোলে উঠব। কিন্তু শটটা কয়েকবার এনজি হলো। এর পর শুভকে বললাম, শুভ, তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে, তাই না! শুভ বলল, না মম, শট ওকে না হওয়া পর্যন্ত দিতে থাক, আমার কষ্ট হচ্ছে না।’
মম জানান, তাঁর প্রিয় জুটি শাহরুখ-কাজল, প্রিয় ছবি ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ ও ‘কুচকুচ হোতা হ্যায়’। মম-শুভর এই জুটি কি দর্শককে আরেকটি কাজল-শাহরুখ জুটির স্বাদ দিতে পারবে?
সে ফলাফল জানতে অপেক্ষা করুন ১০ এপ্রিল পর্যন্ত।