দুই বাংলার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই : জিৎ
দুই বাংলার সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই বলে মন্তব্য করেছেন টলিউডের জনপ্রিয় নায়ক জিৎ। এবার ঈদে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় মুক্তি পেতে চলেছে জিতের নতুন ছবি ‘বাদশা : দ্য ডন’, যে ছবিতে রয়েছেন বাংলাদেশের নায়িকা নুসরত ফরিয়া।
ভারতের এস কে মুভিজ ও বাংলাদেশের জাজ মিডিয়ার ব্যানারে নির্মিত এই ছবি মুক্তির আগে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুললেন জিৎ। জানালেন, ‘এই ছবিতে কাজ করার একটাই উদ্দেশ্য ছিল, তা হলো দুই বাংলার সিনেমা জগৎটাকে দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দেখলাম, দুই বাংলার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। বাংলাদেশের দর্শকের মধ্যেও পশ্চিমবাংলার হিরো-হিরোইনরা যথেষ্ট জনপ্রিয়। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের ওঁরা মানুষ হিসেবেও খুব ভালো। এককথায় অতিথিপরায়ণ। তবে বাংলাদেশটাকে ঘুরে দেখা হয়নি, এটাই যা আক্ষেপ থেকে গেল। শুটিংয়ে গেলে যা হয়, শুটিং করো, তারপর হোটেলে ফিরে এসো।’
বছরে একাধিক ছবি মুক্তি প্রসঙ্গে জিৎ জানালেন, ‘আমি সব সময়ই চাইতাম বছরে মিনিমাম তিনটে ছবি করতে। কিন্তু মাঝখানে নানা কারণে সেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আমি নিজেকে কখনই বছরে একটা ছবিতে সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। বছরে একটা ছবি করলে চলে নাকি? তবে হ্যাঁ, ইচ্ছে হলেই যে একের পর এক ছবি করা যাবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। একটা ছবি কতটা ব্যবসা করতে পারল, তার ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করে। আমার জীবনেও এমন একটা সময় গেছে, যখন বছরে একটা ছবি করেই সীমাবদ্ধ থাকতে হয়েছিল। ২০০২ সালে ‘সাথী’ ছবি দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম। আজ প্রায় ১৪ বছর হয়ে গেল। এই ১৪ বছরে ৪৮টা ছবি করে ফেলেছি। তাই আর আফসোস কিছু নেই।’
বাংলা ছবির পরিধি বাড়াতে গেলে দুই বাংলার বাজারটা এক করে নিতে পারলে দুই দেশের জন্যই লাভজনক বলে মনে করেন জিৎ। জানালেন, ‘দিন দিন ছবির বাজেট বাড়ছে, কিন্তু বাজার বাড়ছে না। তার ওপর হু-হু করে সিনেমা হলের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। কাজেই ক্রাইসিস তো তৈরি হচ্ছেই।’ সেখানে দাঁড়িয়ে দুই বাংলার বাজার একসঙ্গে মিশে গেলে সেটা বাংলা ছবির ক্ষেত্রে ভালো বলেই মনে করেন তিনি।
নিজে বাণিজ্যিক ছবির ওপরই বেশি বিশ্বাসী। অকপটে জানালেন, ‘আমি তিনটে ফান্ডামেন্টালের ক্ষেত্রে দায়বদ্ধ। তা হলো মানি, পাওয়ার ও রেসপেক্ট। আমার ছবির ক্ষেত্রে আমার দর্শকই আমার শক্তি। দর্শকই আমাকে এই দীর্ঘ পথচলার শক্তি জুগিয়েছেন। দর্শক আমাকে আজও যে সম্মান দিচ্ছেন, তাতে আমি কৃতজ্ঞ।’ আজকে সমাজের বুকে জিতের যে স্থান, তা দর্শকের ভালোবাসার জন্যই—এ কথা স্বীকার করে নিয়ে বললেন, ‘আপাতত দর্শকের ভালোবাসা ছেড়ে অন্যধারার কোনো ছবিতে যাওয়ার ইচ্ছা নেই আমার। আর তা ছাড়া, সবাই যদি অন্য ধারার ছবিতে চলে যায়, তাহলে বাণিজ্যিক ছবির নায়ক হবে কে?’ তবে বয়স আরো বাড়লে অন্য ধারার ছবি করবেন কি না, সেসব নিয়ে ভাববেন বলেও জানালেন তিনি।
মাত্র কয়েক দিন পরেই খুশির ঈদ। এবার ঈদে দুই বাংলার ছবি ‘বাদশা : দ্য ডন’ নিয়ে এখন থেকেই বেশ উত্তেজনা জিতের মধ্যে। বললেন, ‘আমার প্রতিটি ছবি রিলিজের আগেই আমি একটা উত্তেজনা অনুভব করি। সেই সঙ্গে বাড়ে মনের ওপর একটা চাপও। যত ছবি মুক্তির দিন এগিয়ে আসে, ততই সেই উত্তেজনা আর চাপ বাড়তে থাকে। এবারেও তার ব্যতিক্রমী কিছু নয়।’
‘বাদশা : দ্য ডন’ ছবিতে তিন নায়িকার সঙ্গে কাজ করলেন জিৎ। অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে জানালেন, ‘এর আগে শ্রদ্ধা দাস বা শুভশ্রীর সঙ্গে অভিনয় করেছি। এবার কাজ করলাম বাংলাদেশের নায়িকা নুসরত ফারিয়ার সঙ্গে। দারুণ ভালো কাজ করেছে নুসরত ফারিয়া। কাজের ব্যাপারে ও বেশ সিরিয়াস। আশা করছি, দর্শক সবাই দারুণ পছন্দ করবেন এই ছবিটি।’