ক্ষমা চাই, এই লজ্জার অসহায়ত্বের জন্য : ফাহমিদা নবী
দেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী লাকী আখন্দ ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত। প্রথম দফায় ব্যাংকক থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে গত ২৬ মার্চ দেশে ফিরেছিলেন। বলেছিলেন, আবারও গানে ফিরবেন, ফিরবেন আড্ডায়। কিন্তু আবারও হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে তাঁকে।
গত শুক্রবার লাকী আখন্দকে বারডেম হাসপাতাল থেকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য দ্রুত বড় পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। এ জন্য সরকার ও ভক্তদের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
‘এই নীল মণিহার’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘আগে যদি জানতাম’, ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’—এ রকম অসংখ্য জনপ্রিয় গানের সুরকার ও সংগীত পরিচালক লাকী আখন্দের পাশে সবাইকে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেছেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ফাহমিদা নবী।
নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সোমবার রাত সোয়া ১টায় একটি পোস্ট দেন ফাহমিদা নবী। সেখানে লাকী আখন্দকে লাকী চাচা নামে অভিহিত করেন তিনি। আত্মমর্যাদাসম্পন্ন শিল্পী লাকী আখন্দের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবাইকে অনুরোধ করেছেন তিনি।
ফাহমিদা নবীর পোস্ট
আমাদের নামের আগে বিশেষণ হিসেবে এখন থেকে দয়া করে, দুস্থ শিল্পী লিখলেই ভালো হবে, খুশি হবো। কিংবদন্তি বা প্রখ্যাত, বিখ্যাত লেখার কোনো প্রয়োজন নাই। শিল্পীরা দেশের সম্পদ। অথচ আমাদের শেষ জীবনে কোনো পেনশন নাই, কোনো জমা-হিসাব নাই। জমার খাতা শূন্য। আমাদের কোনো ভবিষ্যৎ নাই। আর কত? সব শিল্পীরই নিশ্চিত কোনো অবস্থান নাই। লাকী চাচা কতটা লজ্জায়, কতটা ব্যথর্তায়, কতটা বাধ্য হয়ে সাহায্য চাইলেন, তা প্রকাশ করার ভাষা আমার বা আমাদের জানা নেই। প্রকৃত শিল্পীর হিসাব, চিন্তা-চেতনা তার শিল্পকমর্কে ঘিরে। জীবনের বৈষয়িক হিসাব কষাকষি করা তার স্বভাব নয়। সৃষ্টিশীল মানুষ সমাজে ভালোবাসা আর তার শিল্পকমর্কে ছড়িয়ে দিতে ব্যস্ত থাকে, তার এটাই ধ্যানজ্ঞান এবং পেশা। তাই তার পক্ষে চাকরি বা জীবনধারণের জন্য, জীবিকার জন্য দৌড়ে বেড়ানো সম্ভব নয়। ভক্তদের জন্যই তো সব।
তাদের ঘিরেই কাজ করা, তাদের জন্যই বলা যেতে পারে জীবনকে উৎসর্গ করা! মানুষের প্রিয় হয়ে কাজ করে যাওয়া শিল্পীর কাজ। সে তো জানে না, দিনের শেষে তাঁকে দুস্থ হয়ে, সবার কাছে আর্থিক সহযোগিতা চাইতে হবে তাঁর চিকিৎসার জন্য। কী মনোবেদনা! কী কষ্ট! কী যন্ত্রণায় এই আবেদন—আমাকে সাহায্য করো বলাটা...! এত এত গান, যা শুনে মুগ্ধতা, সেই মুগ্ধতার প্রতিদান অসহায় হয়ে আর্থিক সহযোগিতা চাওয়া!? উফ্ আফসোস...! লাকী চাচার মতো আমরা সবাই আসলে দুস্থ শিল্পী! এটাই বাস্তবতা!
ক্ষমা চাই, ক্ষমা চাই, এই লজ্জার অসহায়ত্বের জন্য, সবাই সহযোগিতা করুন, বলছি অনেক বেদনা থেকে। একজন লাকী আখন্দ আর দ্বিতীয়বার জন্ম নেবে না, তাঁকে শ্রদ্ধাভরে সাহায্য করুন!
‘কে আছো কোথায়, কতটা কাছে? কতটা দূরে? কী আশা জীবনে? কী সে পরিচয়? জানে কি সময়? হায়!’ লাকী চাচার এই গানের কথাটা দিয়েই সবার সহযোগিতা কামনা করছি। সরকারি সহযোগিতা আশা করছি।
বাকিটা আল্লাহ জানেন, তাঁর সুস্থতা কামনা করি, আমিন।
লাকী আখন্দকে আর্থিক সহায়তা পাঠানোর জন্য যোগাযোগের ঠিকানা :
ডাচ-বাংলা ব্যাংক, অ্যাকাউন্ট নম্বর : ১৬২.১০১.১৩৭৩৬৯
উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড : অ্যাকাউন্ট নম্বর : এসবি ১৪৭৬
ব্যাংকক ব্যাংক, থাইল্যান্ড : অ্যাকাউন্ট নম্বর : ১১৩.৪.৯১৮৬৮.৭