‘পদ্মশ্রী’ প্রাপ্তিতে সংগীত ঐক্যর পক্ষ থেকে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে ফুলেল শুভেচ্ছা
সংগীতে অবদানের জন্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কার পান রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। এবার একই কারণে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ পদকে ভূষিত হলেন এই শিল্পী। এমন অর্জনে সংগীত ঐক্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় শিল্পীকে। যিনি নিজেও এই সংগঠনের সভাপতি।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার বাসায় গিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দুই মহাসচিব গীতিকবি শহীদ মাহমুদ জঙ্গী ও সংগীতশিল্পী নকীব খান। এসময় তাদের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির প্রচার ও প্রকাশনা সচিব জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত গীতিকবি জুলফিকার রাসেল।
ফুলেল শুভেচ্ছা শেষে তাঁরা পারস্পরিক খোঁজ-খবর নেন। আলাপ করেন দেশীয় সংগীতের উন্নয়ন ও বিকাশে আগামীর কর্ম-পরিকল্পনা নিয়ে। তথ্যগুলো জানান, ঐক্যের অন্যতম মহাসচিব ও গীতিকবি সংঘ বাংলাদেশ-এর সভাপতি শহীদ মাহমুদ জঙ্গী।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের গীতিকবি, সুরস্রষ্টা, মিউজিশিয়ান ও কণ্ঠশিল্পীদের প্রাপ্য সম্মান ও সম্মানী উন্নয়নের লক্ষ্যে সংগীতের চার সংগঠন গীতিকবি সংঘ বাংলাদেশ, মিউজিক কম্পোজার্স সোসাইটি বাংলাদেশ, সিংগার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ মিউজিশিয়ান ফাউন্ডেশন-এর সম্মিলিত মঞ্চ ‘সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ’। সংগীতের সব পক্ষের মাঝে যোগসূত্র তৈরি ও যৌথভাবে প্রণীত উন্নয়ন প্রস্তাবগুলো নিয়ে সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও কপিরাইট দফতরের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করছে এই সংগঠন।
সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ মনে করে, ৫০ বছর ধরে গীতিকবি, সুরস্রষ্টা ও কণ্ঠশিল্পীরা নানা অনিয়ম, অবহেলা আর প্রাপ্য সম্মান ও সম্মানী থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। এ পরিস্থিতি উত্তরণের লক্ষ্যে গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের ১০ জুলাই বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গীতিকবি, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পীরা এক ছাতার নিচে আসেন। গঠিত হয় ‘সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ’।
সংগঠনটির প্রথম ও বর্তমান কমিটিতে রয়েছেন- সভাপতি রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, মহাসচিব (৩ জন) শহীদ মাহমুদ জঙ্গী, নকীব খান ও কুমার বিশ্বজিৎ, অর্থ ও দফতর সচিব আসিফ ইকবাল, তথ্যপ্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সচিব হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল, সাংস্কৃতিক সচিব বাপ্পা মজুমদার, প্রচার ও প্রকাশনা সচিব জুলফিকার রাসেল এবং নির্বাহী সদস্য মানাম আহমেদ, কবির বকুল, শওকত আলী ইমন ও জয় শাহরিয়ার।
বলা দরকার, ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ভারতরত্ন। এরপর রয়েছে পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ ও পদ্মশ্রী। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়। এ বছর ভারত সরকার ১৩২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে পদ্ম সম্মাননার জন্য মনোনীত করেছে। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন পদ্মবিভূষণ, ১৭ জন পদ্মভূষণ আর ১১০ জন পদ্মশ্রী সম্মাননা পাচ্ছেন। এরমধ্যে বাংলাদেশের একমাত্র শিল্পী হিসেবে এবার সম্মানিত হচ্ছেন বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী ও সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ-এর সভাপতি রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।
এর আগে ২০২১ সালে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক সন্জীদা খাতুন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাজ্জাদ আলী জহির বীর প্রতীককে পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত করেছিল ভারত সরকার। তার আগে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও কূটনীতিবিদ সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী ‘পদ্মভূষণ’ সম্মাননা পেয়েছিলেন। আর পদ্মশ্রী সম্মাননা পেয়েছিলেন প্রত্নতত্ত্ববিদ এনামুল হক ও সমাজকর্মী ঝর্ণাধারা চৌধুরী।