অনিদ্রা বা ইনসমনিয়ার কারণ
ঘুম বা নিদ্রা হচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন কর্মকান্ড শেষে বিশ্রাম নেওয়ার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তাই সুস্থ থাকতে হলে নিয়মিত ঘুমাতে হবে। কারণ পরিপূর্ণ ঘুম সারা দিনের ক্লান্তি দূর করে। তাই প্রতিদিন রাতে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। তবে অনেকেরই ঘুমের সমস্যা রয়েছে। এজন্য আবার অনেকেই ঘুমানোর জন্য ঘুমের ওষুধ সেবন করেন। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জানব, ঘুম না হলে কী সমস্যা হয়। সেই সঙ্গে জানব অনিদ্রা বা ইনসমনিয়ার কারণ।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে ঘুম না হওয়ার সমস্যা নিয়ে কথা বলেছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নাজমুল হক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন পুষ্টিবিদ নুসরাত জাহান দীপা।
ঘুম না হলে, এর সমস্যা কী হতে পারে, সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. নাজমুল হক বলেন, ঘুম হচ্ছে আমাদের দেহের রিসাইক্লিনের অংশ। এ সময় দেহের প্রতিটি অংশ আবার নতুন করে জীবন-যাপনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। সেজন্য ঘুম দেহের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। ঘুমের সমস্যাকে সাধারণ মানুষ মনে করেন অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া। এটাকে ঘুমের রোগ মনে করেন অনেকে।
এ ছাড়া ঘুমের অনেক ধরনের রোগ আছে। যেমন ঘুম বেশি যাওয়া হচ্ছে হাইপার সমনিয়া, যা একটি রোগ। আবার ঘুমের মধ্যে অনেকে দুঃস্বপ্ন দেখে, যেটাকে প্যারাসোমনিয়া বলা হয়ে থাকে, এটিও একটি রোগ। ঘুমের মধ্যে অনেকে নাক ডাকে, যেটা থেকে অনেক বড় ধরনের রোগ হয়, এটিকে স্লিপ অ্যাপনিয়া বলা হয়।
এ ছাড়া ঘুমের মধ্যে অনেকে হাত-পা ছোড়ে, আবার অনেকে ঘুমের মধ্যে হাঁটাহাঁটি করে, এটিও একটি রোগ। কাজেই ঘুমের রোগ শুধু অনিদ্রা নয়। অনেক রকম রোগ এর মধ্যে রয়েছে।
অনেকে ঘুমের মধ্যে ভয় পায়, সেটি কেন হয়, সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. নাজমুল হক বলেন, ঘুমের মধ্যে ভয় পাওয়া হচ্ছে প্যারাসোমনিয়া। আবার ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন স্বাভাবিক মানুষও দেখতে পারে। কিন্তু এটি মাসে একবারের অধিক হবে না। সর্বোচ্চ মাসে দুইবার হতে পারে। সাধারণ মানুষ ঘুমের মধ্যে যে স্বপ্ন দেখে, সেটি চূড়ান্তভাবে সে একবারের বেশি স্বরণ করতে পারে না। একদিনের ব্যবধানে সে এটি ভুলে যায়। এই দুঃস্বপ্নটা তার জীবন-যাপন সম্পর্কে বেশি আক্রান্ত করে না।
যদি এই ধরনের দুঃস্বপ্ন কোনো ব্যক্তির জীবন-যাপনকে আক্রান্ত করছে এবং এই দুঃস্বপ্ন সে ঘন ঘন দেখছে। মাসে ১০-১২ বার দেখছে। সেইসাথে পুরো দুঃস্বপ্নটা পুনরায় স্বরণ করতে পারে বা মনে করতে পারে, যা তার স্বাভাবিক জীবনকে বাধাগ্রস্থ করছে। তখন এটাকে প্যারাসোমনিয়া বলে।
এই ক্ষেত্রে আপনারা কি ধরনের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন, সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. নাজমুল হক বলেন, প্যারাসোমনিয়া হলে রোগীকে চিকিৎসকের সঠিকভাবে মূল্যায়ণ করতে হয়। এই ধরনের রোগীকে বেশিরভাগ সময় মূল্যায়ণ করে দেখা যায়, তার শৈশবকালের ট্রমা কাউকে শেয়ার করতে পারিনি। আমাদের প্রত্যেকের ব্যক্তিগত কিছু চাপ থাকে, এখান থেকে প্যারাসোমনিয়া অগ্রসর হয়। সেই দুঃস্বপ্ন বা আঘাতের কথা বারবার মনে করতে থাকে। এটি একটি কারণ। কিন্তু এই ধরনের কোনো কারণ না থাকে, তাহলে বুঝতে হবে নিউরোলজিক্যাল কোনো কারণ রয়েছে।
ঘুমের আরও রোগ সম্পর্কে জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।