আপনি কি মানসিক সংকটে আছেন?
বর্তমানে কোভিড-১৯-এর ভয়াবহতা বাড়ার সাথে সাথে আমাদের মানসিক কষ্ট বাড়ছে। প্রতিদিন কোভিড-১৯-এর কারণে নিজের কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হওয়া বা আক্রান্ত হওয়ার ভয়, অনেক মানুষের মৃত্যু, চিকিৎসার হাহাকার, পরিবার বা কাছের মানুষের আক্রান্ত হওয়া বা বিভিন্ন বেদনাদায়ক ঘটনা শুনতে শুনতে মানসিক আঘাত পেয়ে মানসিক সংকট হতে পারে।
লক্ষণ
এই সময়ে মানসিক সংকটের লক্ষণগুলো হলো—
১. অল্পতেই ভয়, রাগ, দুঃখ, উদ্বেগ, হতাশার অনুভূতি
২. ক্ষুধা, শক্তি এবং কার্যক্রমের স্তরগুলোতে পরিবর্তন
৩. কাজকর্মে মনোনিবেশ করতে সমস্যা
৪. সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা
৫. ঘুমের সমস্যা
৬. দুঃস্বপ্ন দেখা
৭. শারীরিক প্রতিক্রিয়া (যেমন—মাথাব্যথা, শরীরে ব্যথা, পেটের সমস্যা এবং ত্বকে ফুসকুড়ি)
৮. দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যসমস্যা বৃদ্ধি
৯. অ্যালকোহল, তামাক বা অন্যান্য ড্রাগের ব্যবহার বৃদ্ধি
আপনি কী করতে পারেন
মানসিক চাপের জন্য প্রত্যেকেরই চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। বেশির ভাগ মানুষ সময়ের সাথে সাথে তাঁদের চাপ মোকাবিলা করতে পারেন। যদি আপনার উদ্বেগ ব্যক্তিগত সম্পর্ক, কাজকর্ম বা দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটায়, তবে নিজের যত্ন না নিলে পরবর্তীকালে আপনার তীব্র স্ট্রেস ডিসঅর্ডার বা পিটিএসডি হতে পারে। নিম্নের কৌশলগুলো অবলম্বন করে নিজে নিজে মানসিক সংকট কমাতে পারবেন—
১. রিলাক্সেশন দিয়ে দিন শুরু করুন।
২. আপনার মানসিক চাপগুলো পরিবার বা বন্ধুবান্ধবদের সাথে শেয়ার করার মাধ্যমে মানসিক সংকট কিছুটা কমাতে পারবেন।
৩. সবার সাথে অনলাইনে যোগাযোগ করুন, বন্ধুবান্ধবদের সাথে অনলাইনে মিটিং করুন।
৪. পরিবারের সাথে কোয়ালিটি সময় দিন।
৫. সবাই মিলে বাসায় ইনডোর গেমস খেলতে পারেন।
৬. সরকারি তথ্যগুলো সম্পর্কে আপডেট থাকুন।
৭. বেশি খবর শুনবেন না এবং অপ্রয়োজনীয় উৎস থেকে পাওয়া গুজবে কান দেবেন না।
৮. শারীরিক ব্যায়াম করে শরীরকে অ্যাকটিভ রাখুন।
৯. নেতিবাচক চিন্তা লিখে চ্যালেঞ্জ করুন।
১০. ইমোশনাল অভিযোজনের জন্য নিয়মিত ধর্মীয় চর্চা করুন।
১১. কাজকর্মের মাঝে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
১২. রাতে বেশি সময় ঘুমাবেন।
১৩. নিয়মিত মাইন্ডফুলনেন্স প্র্যাকটিস করুন। ইউটিউবে মাইন্ডফুলনেসের ওপর বিভিন্ন ভিডিও পাবেন।
১৪. প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিন। এই সময়ে অনলাইনেও সাইকোলজিক্যাল সহায়তা নিতে পারেন।
(Reference : Taking Care of Your Emotional Health-Learn more about coping during COVID-19- Centres for Disease control and Prevention, USA অবলম্বনে)
লেখক : ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট