আর কুসংস্কার নয়, বন্ধ্যত্ব দূর করা সম্ভব
ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যত্ব নিয়ে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে যদি বলা যায়, তাহলে অনেক কুসংস্কার রয়েছে। এটাকে বলা হয় এক ধরনের অভিশাপ। আমরা জানি, বর্তমান যুগে এটি একেবারেই অনুপযোগী একটি কথা। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে বন্ধ্যত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম নিয়ে কথা বলেছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. খন্দকার শেহনীলা তাসনিম সুমি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পুষ্টিবিদ নুসরাত জাহান দীপা।
সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে ডা. খন্দকার শেহনীলা তাসনিম সুমি বলেন, বন্ধ্যত্ব আসলে যে পরিবারে হয়, তাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক একটি পরিস্থিতি। যদি স্বাভাবিকভাবে যুগল একসঙ্গে থাকার পরেও এক বা দুবছরের মধ্যে যদি তিনি কনসিভ না করেন, মাতৃত্বের স্বাদ না পান, তাহলে আমরা সেটাকে বন্ধ্যত্ব বলব। ইনফার্টিলিটি নিয়ে কুসংস্কার সারা বিশ্বজুড়েই। আমাদের দেশে তো আরেকটু বেশি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে যে শুধু মেয়েদের কারণে বা হাজব্যান্ডের কারণে হচ্ছে তা নয়। বিভিন্ন ফ্যাক্টর এটার সাথে জড়িত। অনেক অনেক ক্ষেত্রেই কিন্তু বন্ধ্যত্ব প্রতিরোধযোগ্য এবং চিকিৎসার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব।
কেন বন্ধ্যত্ব হয়? সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. খন্দকার শেহনীলা তাসনিম সুমি বলেন, কনসিভ হওয়ার পেছনে কী কী কারণ থাকে। অবশ্যই ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ থাকবে ফিমেল ফ্যাক্টর, মেয়েটা দায়ী থাকতে পারে। ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশের ক্ষেত্রে হাজব্যান্ডও দায়ী থাকতে পারে, তাঁর জটিলতার জন্যও হতে পারে। আর বাকি কিছু ক্ষেত্রে আমরা আনএক্সপ্লেইনড। প্রকৃতিগত কারণে হচ্ছে, তাঁর হচ্ছে না।
ডা. খন্দকার শেহনীলা তাসনিম সুমি আরও বলেন, মেয়েদের কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে হরমোনজনিত জটিলতা। তার মধ্যে সবচেয়ে কমন হচ্ছে আমাদের এই দেশগুলোতে এশিয়া বা দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (পিসিওএস) বলে একটা রোগ আছে। সেটা কিন্তু খুব বড় গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর, ডিম্বাণু ফুটছে না। এ ছাড়া অন্যান্য কিছু হরমোন, যেমন প্রলাকটিন নামে একটি হরমোন আছে, সেটা বেশি থাকলেও... মানে সবগুলোর কারণেই আলটিমেটলি যেটা হচ্ছে, অল্প ডিম ফুটছে অথবা ডিমটা পরিপূর্ণ হচ্ছে না। আরেকটা হতে পারে, তাঁর আগে কোনও ইনফেকশন হয়েছিল আগে, তলপেটের যে ইনফেশনের কথা আমরা বলি। সেটি হয়ে তাঁর টিউবগুলো ব্লক হয়ে গেছে। সেখানেও যদি ব্লকেজ থাকে, তাহলে ডিম্বাণু কনসিভ করার পরেও সেটি কিন্তু জরায়ু পর্যন্ত আসতে পারছে না। এটাও গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।
ডা. খন্দকার শেহনীলা তাসনিম সুমি যুক্ত করেন, যদি জরায়ুর মুখে কোনও প্রবলেম থাকে, কোনও টিউমার থাকে বা তাঁর যে সিক্রেশন হচ্ছে, সেটা এত বেশি ঘন, সেটা ভেদ করে বীর্য যেতে পারছে না। এ ফ্যাক্টরগুলো ইনফার্টিলিটির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
বন্ধ্যত্ব, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম কী, লক্ষণ ও প্রতিকার বিশদে জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন।