কোথায় ব্লক হলে কিডনি নষ্ট হয়ে যায়
অনেকে কিডনিজনিত নানান সমস্যায় ভুগছেন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করা, জীবন যাপনে অনিয়মের কারণে কিডনিজনিত নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জানব, কোথায় ব্লক হলে কিডনি নষ্ট হয়ে যায় এবং এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কী।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে কিডনি রোগী ও এ থেকে পরিত্রাণের উপায় সম্পর্কে বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কিডনি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আছিয়া খানম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পুষ্টিবিদ নুসরাত জাহান দীপা।
যদি দুটো কিডনির সংযোগস্থলে ব্লক না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত কিডনি ড্যামেজ হওয়ার সম্ভাবনা নেই? সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. আছিয়া খানম বলেন, না, সেটিও আছে। দুটো কিডনির সংযোগস্থল, মোটকথা আউটফ্লো ট্র্যাকটা যদি, যেটাকে আমরা বলি দুটো কিডনির সংযোগস্থল; তার পরে প্রস্রাবের থলি, থলি থেকে মূত্রনালি—এই পথের যে কোনও জায়গায় ব্লক হলে কিডনির যে প্রস্রাবটা বের হয়ে আসত, সেটা না এসে ব্যাকপ্রেশার দিয়ে কিডনির ওপর চাপ পড়ে, তখন কিডনির কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়।
এ ক্ষেত্রে আপনাদের ট্রিটমেন্ট প্রসিডিউর কী, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. আছিয়া খানম বলেন, কিডনি স্টোন যদি খুব ছোট থাকে, সাইলেন্ট থাকে, এক সাইডে থাকে এবং রোগীর কিডনি স্টোন হওয়ার টেন্ডেন্সি না থাকে, সেটাও আবার আমরা কিছু ব্লাড টেস্ট দিয়ে বুঝি যে সে ফ্রিকোয়েন্টলি স্টোন পাসের হিস্ট্রি থাকবে; বারবার আমার একটু একটু স্টোন পাস করে, সে ক্ষেত্রে কিছু রোগ আছে যেটার কারণ জানা যায়নি। সেখানে কিছু মেটাবলিক কারণ আছে, কিছু ইমিউনোলজিক্যাল কজ আছে, কিন্তু স্টোন খুব ছোট থাকে, আমরা রোগীদের প্রথমে বলি যে, ঘন ঘন প্রস্রাব করবেন, প্রস্রাব চাপিয়ে রাখবেন না। অন্তত দুই লিটার পানি প্রতিদিন খাবেন। খাবারের ভেতরে মাংসটা যতটা সম্ভব অ্যাভয়েড করা, শাকসবজি ফলমূল বেশি খাওয়া। এতে আমরা দেখি অনেকাংশে তিন থেকে ছয় মাসে স্টোন বের হয়ে যায়। আর যাদের বের হয় না বা মনে হয় কোথাও অ্যাবস্ট্রাক্ট করে আছে, সে ক্ষেত্রে স্টোনটা যদি রিমুভ করে দেওয়া যায়, ম্যাজিক্যালি একটা রিঅ্যাওয়ার্ড পেয়ে যায় যে কিডনি ফেইলিউর হলো না, সামনে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। মনে রাখতে হবে, একটা হলো মেডিকেল ট্রিটমেন্ট, সার্জিক্যাল ট্রিটমেন্ট ও লাইফস্টাইল মোডিফিকেশন।
যখন একজন কিডনির পেশেন্ট, তিনি জানবেন যে তাঁর কিডনির কিছু সমস্যা রয়েছে। তখন কত দিন পরপর তাঁর ফলোআপে আসা উচিত, যেন ভবিষ্যতে কিডনিটা আরও বিকল না হয়, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. আছিয়া খানম বলেন, সেটা অবশ্য নির্ভর করবে রোগভেদে। যেমন একজন মানুষের বয়স চল্লিশের ওপরে, তাঁর ডায়াবেটিস আছে। নরমাল। তাঁর ফ্যামিলি হিস্ট্রি আছে। তাঁর কিডনি ফাংশন ভালো। অন্তত তাঁকে আমরা বছরে দুবার কিডনি পরীক্ষা করতে বলব। একটা ইউরিন ও একটা ব্লাড টেস্ট করলে হবে। ইউরিনে আমরা দেখব প্রোটিন যাচ্ছে কি না। প্রথম লক্ষণই হলো ইউরিনে প্রোটিন, মানে ছাঁকনিগুলো আস্তে আস্তে নষ্ট হয়। ছাঁকনি নষ্ট হওয়া মানেই প্রোটিন লিক করবে, যেটা নরমাল মানুষের হয় না।
কিডনি রোগীর ফলোআপ সম্পর্কে আরও জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।