বেশি পানি খেলে প্রোস্টেটের সমস্যা ভালো হয়ে যায়?
প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড পুরুষেরই থাকে। পুরুষের প্রজননতন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি ছোট গ্রন্থি, যা মূত্রথলির নিচে থাকে। প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে বিনাইন এনলার্জমেন্ট এবং প্রোস্টেট গ্রন্থির সমস্যা ও প্রতিকার সম্পর্কে জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে বিনাইন এনলার্জমেন্ট এবং প্রোস্টেট গ্রন্থির সমস্যা ও প্রতিকার সম্পর্কে বলেছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে ইউরোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সুদীপ দাশগুপ্ত। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডা. মুনা তাহসিন।
সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে ডা. সুদীপ দাশগুপ্ত বলেন, সরু নালিতে প্রস্রাব হওয়া বা রাতের বেলা বারবার ঘুম থেকে উঠে প্রস্রাব করা, যাকে আমরা নকচুরিয়া বলি। প্রস্রাব করার পর মনে হয়, মূত্রথলিতে আরও প্রস্রাব রয়ে গেছে। আবার দেখা যায় যে প্রস্রাব লাগলে আটকে রাখতে পারে না, যাঁরা বয়স্ক মানুষ। এবং সবচেয়ে বড় সমস্যা, যেটা প্রস্রাব হঠাৎ আটকে যায়, যাকে আমরা রিটেনশন অব ইউরিন বলি। সেটা জরুরি বিভাগে পুরুষ, বয়স্ক অনেক রোগী আমরা দেখতে পাই। অ্যাকিউট রিটেনশন অব ইউরিন খুবই যন্ত্রণাদায়ক অবস্থা। কেননা এ ক্ষেত্রে খুব ব্যথা সৃষ্টি হয় এবং যতক্ষণ না আমরা এই প্রস্রাব বের করে দিতে না পারি, ততক্ষণ পর্যন্ত রোগী খুব অস্বস্তিতে থাকেন। তা ছাড়া যখন প্রোস্টেট বড় হয়, তখন জটিলতা হিসেবে মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ কিংবা ব্লাডার স্টোন বা মূত্রথলিতে পাথর এবং সবচেয়ে বড় কথা প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া। যেহেতু ঠিকমতো প্রস্রাব হচ্ছে না, একসময় কিডনির কার্যক্ষমতাতে চাপ পড়ে। প্রোস্টেট বড় হওয়ার কারণে কিডনিও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়।
অনেকে এই রোগ নিয়ে খুব মনোযোগ দেয় না। অনেকে ভাবেন, এটি হয়তো তার ইউরিন ট্র্যাক্ট ইনফেকশন, বেশি করে পানি খেলে ঠিক হয়ে যাবে। এ ধারণা কি ঠিক? সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. সুদীপ দাশগুপ্ত বলেন, এ ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আজকাল উন্নত বিশ্বে মেনস হেলথ সোসাইটি বা এ রকম বিভিন্ন সংগঠন গড়ে উঠছে। অনেকে মনে করে, প্রস্রাব তো হচ্ছে আস্তে আস্তে বা আমরা যারা বাড়ির সদস্য আছি, তারাও হয়তো মনে করি, বয়স্ক মানুষ, প্রস্রাব আটকে রাখতে পারছে না—এগুলো আসলে তেমন গুরুত্ব দেন না। মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণও কিন্তু প্রোস্টেট বড় হওয়ার কারণে হতে পারে।
ডা. সুদীপ দাশগুপ্ত আরও বলেন, অত্যন্ত সুসংবাদ হচ্ছে চিকিৎসাবিজ্ঞানে আমরা এখন শুধু সারা দিনে একবেলা একটা ওষুধ খেয়ে... আইপিএসএস বা কিছু সিম্পটম স্কোর, আমরা একটি ওষুধের মাধ্যমে রোগীর... স্বাভাবিক প্রস্রাবের ধারা বা জীবনযাত্রায় তিনি যে কষ্ট করছেন, তা থেকে মুক্ত করতে পারি। পরবর্তীতে হয়তো সার্জারিতে যাওয়া যেতে পারে। কিন্তু শুধু ওষুধ খাওয়ার মাধ্যমে অনেক রোগী ভালো থাকতে পারেন।
প্রোস্টেট গ্রন্থির সমস্যা ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন।