যে ৫ অভ্যাস শারীরিক অসুস্থতার কারণ
মানুষ অভ্যাসের দাস। অভ্যাস সহজে বদলানো যায় না। কিছু বদ অভ্যাস রয়েছে যা আমদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর ফলে আমরা ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, হজমে সমস্যা সহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকি। আমরা চাইলেই একদিনে এসব অভ্যাস বদলাতে পারব না। তবে সময় থাকতেই সচেতন হওয়া জরুরি। আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ডাঃ ডিক্সা ভাবসার সাভালিয়া এমন কিছু দৈনন্দিন অভ্যাস সম্পর্কে কথা বলেছেন যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। যার কারণে আমরা প্রায়ই অসুস্থ থাকি।
ক্ষুধা ছাড়া খাওয়া
একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়া-দাওয়া করুন। ক্ষুধা ছাড়া খেলেই খাবার হজমে সমস্যা হয়। এতে আমাদের পাচনতন্ত্র আরও বিপর্যস্ত হয়। তাই একটু পরপর বেশি পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এ ব্যাপারে ডাঃ সাভালিয়া বলেছেন, ‘ক্ষুধা ছাড়া খেলে আমাদের লিভারের উপর চাপ পড়ে। হজমে সমস্যা হয়। তাই শুধুমাত্র ক্ষুধার্ত অনুভব হলেই খেয়ে নিন। ক্ষুধা ছাড়া খাওয়া আপনার অন্ত্রে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে’।
দেরিতে ঘুমাতে যাওয়া
সারারাত ধরে স্মার্টফোন চালানোর অভ্যাস অনেকের আছে। এর জন্য রাতে ঘুমাতে দেরি হয়। এটি একটি বাজে অভ্যাস। যা আমাদের হজমের স্বাস্থ্যের সাথে জড়িত। দেরিতে ঘুমালে দেহের পুষ্টি শোষণ প্রক্রিয়ার ক্ষতি করতে পারে। ডাঃ সাভালিয়া বলেছেন, ‘রাত ১০ টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করুন। সন্ধ্যা ৭-৭:৩০ এর মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে ফেলুন। তাহলে আপনার শরীর খাবার থেকে পুষ্টি শোষণ করার জন্য ক্ষমতা বজায় রাখবে’।
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, রাতে দেরিতে ঘুমাতে গেলে ঘুমের মান ভাল হয় না। এতে মানসিক সমস্যা, ভিটামিনের অভাব, অন্ত্রের স্বাস্থ্যের দুর্বলতা ইত্যাদির দেখা দেয়।
রাত ৯ টার পর খাবার থেকে দূরে থাকুন
রাত ৯ টার পরে খাওয়া খুবই বাজে অভ্যাস। সব স্বাস্থ্য সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু এটি হতে পারে। গভীর রাতে খেলে বিপাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলে। ডায়াবেটিস এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই রাতে তাড়াতাড়ি খেয়ে নেওয়াই ভাল।
ডাঃ সাভালিয়ার মতে, ‘সূর্যাস্তের আগে বা এক ঘন্টা পরেই রাতের খাবার খেয়ে ফেলুন। রাত ৮ টার পর খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। তার ৯ টার পর খেলে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, স্থূলতা, হার্টের সমস্যাও হতে পারে’।
মাল্টি-টাস্কিং
আমরা অনেকেই একসাথে একাধিক কাজ করে থাকি। এটি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে। মাল্টি-টাস্কিং স্ট্রেস লেভেল বাড়িয়ে দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘মাল্টি-টাস্কিং শরীরে স্ট্রেস হরমোন বাড়ায়। তাই একবারে একটি কাজ করুন। এতে আপনার স্ট্রেস কমবে। দিন শেষে আপনাকে শান্তি দেবে’।
অতিরিক্ত ব্যায়াম
ফিট থাকতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই। তবে তা অতিরিক্ত করা ভাল না। বেশি ব্যায়াম করলে আমরা ক্লান্তি বোধ করি। এ ব্যাপারে ডাঃ সাভালিয়া উপদেশ দিয়েছেন যে, ‘অতিরিক্ত ব্যায়ামের কারণে রক্তপাতের ব্যাধি, শ্বাসকষ্ট, কাশি, জ্বর, অত্যধিক তৃষ্ণার অনুভব এবং বমিও হতে পারে। ব্যায়াম করলে অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। তা না হলে শরীর দুর্বল হয়ে যাবে’।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস